ঢাকা , বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আলমডাঙ্গার কানাইনগর-শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া Logo কুষ্টিয়ায় জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় সেই পুলিশ সদস্য ক্লোজড Logo যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের ব্যালকনি ভেঙে প্রকৌশলীসহ নিহত ৩ Logo শিবপুরে কাবিখা ও টিআর প্রকল্পের ৫২ লাখ টাকাসহ দুই কর্মকর্তা গোয়েন্দার জালে আটক Logo বেনাপোলের বাহাদুরপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র জরুরি কর্মীসভা অনুষ্টিত Logo সিংড়ায় ছাত্রশিবিরের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি Logo জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ফুলবাড়ীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দোয়া মাহফিল Logo কাফনের কাপড় পরে কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও Logo তানোরে পানিতে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু Logo তানোরে ফসলি জমি জবরদখল চেষ্টার অভিযোগ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গোদাগাড়ীতে ঐতিহাসিক ১৭০তম সান্তাল হুল দিবস ২০২৫ উদযাপিত

সেলিম সানোয়ার পলাশঃ

 

“যেখানে অধিকার বঞ্চনা সেখানেই ”হুল”শ্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উদযাপিত হলো ঐতিহাসিক সান্তাল হুল দিবস ২০২৫।

আজ সোমবার (৩০ জুন) গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাটে সিসিবিভিও ও ব্রেড ফর দি ওয়ার্ল্ড, জার্মানীর সহযোগিতায় এবং রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটি ও গ্রাম সংগঠন সমূহের আয়োজনে রক্ষাগোলা সংগঠনের নৃত্তাতিক জনগণের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও পথ সভার মাধ্যমে এই দিবসটি পালিত হয়।

দিবস পালনের অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি সুধীর সরেনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিসিবিভিও’র সমন্বয়কারী আরিফ ইথার। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির নেতা সুমিতা হাঁসদা, মলিন মার্ডী, বাপ্পি মার্ডী, মুকুল সরেন, রঞ্জিত রায়।

সিসিবিভিও শাখা কার্যালয় হতে কাকন বাজার প্রদক্ষিণ করে কাকনহাট পৌরসভা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবস পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সভার সভাপতির সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু করা হয়। বক্তাগণ বলেন, ১৭০ বছর ধরে দিবসটি সাঁওতালদের কাছে দাবি আদায়ের গৌরবোজ্জ্বল দিন হলেও আমরা এখনো শোষণ আর বঞ্চনার শিকার । এখনো ফিরে পায়নি ভূমির অধিকার। বিশেষ করে সমতলের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি আজও।

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাামের ইতিহাসে আজ থেকে ১৬৯ বছর আগে ১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এটি ছিল প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম। সাঁওতাল বিদ্রোহীদের সেদিনের দেশপ্রেমিক সংগ্রাম, আদর্শ ও অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ পরবর্তীকালে ভারতবর্ষের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল।

সাঁওতাল বিদ্রোহের নায়ক দুই ভাই সিধু মুরমু ও কানু মুরমু স্মরণে ও শ্রদ্ধায় সাঁওতালদের অনেকেই দিনটিকে সিধু-কানু দিবস বলে থাকেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের এদেশীয় দালাল সামন্ত জমিদার, সুদখোর, তাদের লাঠিয়াল বাহিনী, দারোগা-পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাঁওতাল নেতা সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব, এই চার ভাইয়ের নেতৃত্বে রুখে দাঁড়ান সাঁওতালরা। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের দুই বোন ফুলোমনি মুরমু ও ঝালোমনি মুরমু।

১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে তা শেষ হয়। সাওতাঁলরা তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করায় ইংরেজ বাহিনীর আধুনিক বন্দুক ও কামানের কাছে টিকতে পারেনি। এ যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা মারা গিয়েছিলো। বিদ্রোহে পর্যায়ক্রমে সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব নিহত হলে বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে।

ঐতিহাসিক সান্তাল হুল দিবস অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সিসিবিভিও’র প্রশিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা সৌমিক ডুমরী ও সমাজ সংগঠক মানিক এক্কা। অনুষ্ঠানের সার্বিক তৎধায়ন করেন উর্দ্ধতন মাঠ কর্মকর্তা নিরাবুল ইসলাম ও সার্বিক সহযোগিতা করেন সমাজ সংগঠকবৃন্দ।

 


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আলমডাঙ্গার কানাইনগর-শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া

error: Content is protected !!

গোদাগাড়ীতে ঐতিহাসিক ১৭০তম সান্তাল হুল দিবস ২০২৫ উদযাপিত

আপডেট টাইম : ০১:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
সেলিম সানোয়ার পলাশ, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

সেলিম সানোয়ার পলাশঃ

 

“যেখানে অধিকার বঞ্চনা সেখানেই ”হুল”শ্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উদযাপিত হলো ঐতিহাসিক সান্তাল হুল দিবস ২০২৫।

আজ সোমবার (৩০ জুন) গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাটে সিসিবিভিও ও ব্রেড ফর দি ওয়ার্ল্ড, জার্মানীর সহযোগিতায় এবং রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটি ও গ্রাম সংগঠন সমূহের আয়োজনে রক্ষাগোলা সংগঠনের নৃত্তাতিক জনগণের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও পথ সভার মাধ্যমে এই দিবসটি পালিত হয়।

দিবস পালনের অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি সুধীর সরেনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিসিবিভিও’র সমন্বয়কারী আরিফ ইথার। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির নেতা সুমিতা হাঁসদা, মলিন মার্ডী, বাপ্পি মার্ডী, মুকুল সরেন, রঞ্জিত রায়।

সিসিবিভিও শাখা কার্যালয় হতে কাকন বাজার প্রদক্ষিণ করে কাকনহাট পৌরসভা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবস পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সভার সভাপতির সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু করা হয়। বক্তাগণ বলেন, ১৭০ বছর ধরে দিবসটি সাঁওতালদের কাছে দাবি আদায়ের গৌরবোজ্জ্বল দিন হলেও আমরা এখনো শোষণ আর বঞ্চনার শিকার । এখনো ফিরে পায়নি ভূমির অধিকার। বিশেষ করে সমতলের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি আজও।

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাামের ইতিহাসে আজ থেকে ১৬৯ বছর আগে ১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এটি ছিল প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম। সাঁওতাল বিদ্রোহীদের সেদিনের দেশপ্রেমিক সংগ্রাম, আদর্শ ও অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ পরবর্তীকালে ভারতবর্ষের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল।

সাঁওতাল বিদ্রোহের নায়ক দুই ভাই সিধু মুরমু ও কানু মুরমু স্মরণে ও শ্রদ্ধায় সাঁওতালদের অনেকেই দিনটিকে সিধু-কানু দিবস বলে থাকেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের এদেশীয় দালাল সামন্ত জমিদার, সুদখোর, তাদের লাঠিয়াল বাহিনী, দারোগা-পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাঁওতাল নেতা সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব, এই চার ভাইয়ের নেতৃত্বে রুখে দাঁড়ান সাঁওতালরা। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের দুই বোন ফুলোমনি মুরমু ও ঝালোমনি মুরমু।

১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে তা শেষ হয়। সাওতাঁলরা তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করায় ইংরেজ বাহিনীর আধুনিক বন্দুক ও কামানের কাছে টিকতে পারেনি। এ যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা মারা গিয়েছিলো। বিদ্রোহে পর্যায়ক্রমে সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব নিহত হলে বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে।

ঐতিহাসিক সান্তাল হুল দিবস অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সিসিবিভিও’র প্রশিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা সৌমিক ডুমরী ও সমাজ সংগঠক মানিক এক্কা। অনুষ্ঠানের সার্বিক তৎধায়ন করেন উর্দ্ধতন মাঠ কর্মকর্তা নিরাবুল ইসলাম ও সার্বিক সহযোগিতা করেন সমাজ সংগঠকবৃন্দ।

 


প্রিন্ট