আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর তানোরে তিন ফসলি যেসব আলুর জমিতে টি-আমণ রোপণ করা হয়েছিল।সেসব জমির ধান কেটে এখন রোপা আমন ধানের চারা রোপণের কথা অথচ অনেক জমির ধান এখনো কাটতেই পারেননি কৃষক। সময়মত ধান পাকলেও আষাঢ়ের শুরু থেকে টানা বর্ষণে জমিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় একদিকে কৃষক কাটতে পারছেন না,অন্যদিকে ধান গাছের গোড়া থেকে নতুন ধানগাছের জন্ম নিয়ে ‘ক্যাঁতাড়ি’ সৃষ্টি হয়েছে।
–
গতকাল সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) মোহর, আড়াদীঘি, নারায়নপুর, সরনজাই ইউপির শুকদেবপুর, কামারগাঁ ইউপির সাধুর মোড় ও হরিপুর মাঠে দেখা যায়, আলুর জমিতে রোপণ করা ধান পেকে জমিতে নষ্ট হচ্ছে। জমিতে পানি জমে ছোট ছোট কচুরিপানা জন্মেছে। পাকা ধানের গাছের গোড়া থেকে নতুন গাছ জন্মেছে যাকে স্থানীয়ভাবে ‘ক্যঁতাড়ি’ বলা হয়। ফলে পাকা ধান কাটার কোন সুযোগ পাচ্ছেন না কৃষক। অধিকাংশ মাঠে পাকা ধানের গোছা থেকে জমিতেই ঝরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের কষ্টের ফসল। কৃষকরা জানান, আলুর জমির ধান কেটে একই জমিতে এখন রোপা-আমন ধানের চারা রোপনের সময় পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ধান কাটতে না পেরে চারা রোপনের প্রস্তুতিও নেওয়া যায়নি।
–
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জৈষ্ঠমাসের শেষ দিকে জমির ধান পাক ধরা মাত্র যারা ধান কেটেছেন তাদের সমস্যা হয়নি।কিন্ত্ত যারা খড় করার আশায় জমির ধান পুরোপুরি পাকার জন্য অপেক্ষা করেছিল তারা সমস্যায় পড়েছে।এদিকে পুরো মাঠের ধান একই সঙ্গে পাকায় ধান কাটা যন্ত্র (কম্বাইন্ড হারভেস্টর) মেশিন দিয়েও কভার করা যাচ্ছে না।
–
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছিলো। আলু তোলার পর পুরো জমিতেই টি-আমণ ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকে টানা বৃষ্টিতে বর্তমানে বেশির ভাগ জমিতে পানি জমেছে। এতে শ্রমিকরা ধান কেটে মাঠ থেকে আনতে পারছেন না। তবে রাস্তার ধারের কিছু কিছু জমি থেকে ট্রাক্টরে কাটা ধান নিয়ে আশা হচ্ছে। অধিকাংশক্ষেত্রে কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনে ধান কেটে অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কের ধারে সরাসরি বস্তাবন্দি করা হচ্ছে। বস্তাবন্দি করা ধান সড়কের ধার থেকেই ট্রাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার ব্যবসায়ীরা।
–
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, যেসব আলুর জমি থেকে এখনো ধান কাটা সম্ভব হয়নি সেসব জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ বিলম্বিত হতে পারে।
প্রিন্ট