ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লন্ডন সফরের রাজনৈতিক ভালো-মন্দ Logo আলফাডাঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি পদে প্রার্থী হলেন বাশার শেখ Logo বোয়ালমারী বিএনপির সম্মেলন শেষে ‘নেতৃত্বশূন্য’ ঘোষণা Logo বরগুনায় ডেঙ্গুতে প্রাণ গেলো ৩ বছর বয়সী শিশু সাফওয়ান আবদুল্লাহ, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ Logo সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত  Logo রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু এ বছরই: -রুশ রাষ্ট্রদূত Logo ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ‌ পৃথক দুটি অভিযানে ‌ গাজা ও ইয়াবা ট্যাবলেট সহ ‌ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ‌ র‌্যাব-১০ Logo কুষ্টিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ইবি শিক্ষার্থীর Logo বোয়ালমারীতে শ্বশুরবাড়িতে গৃহবন্দী জামাই, উদ্ধার করলো স্বজনরা Logo তথ্য গোপন রেখে কালুখালীর হিন্দু পরিবারে মুসলিম বধুর বিয়ে
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

যুবদল নেতার কাছে সিগারেটের বাকি টাকা চাওয়ায় দোকান ভাঙচুর ও গুলির হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুরঃ

 

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামে সিগারেটের বাকি টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মুদি দোকানে হামলা ও গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা শাহেদ মোল্লার বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে রফিকুল শেখ আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে গতকাল সোমবার (৯ জুন) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শাহেদ রফিকুলের দোকানে গিয়ে সিগারেট খান। রফিকুল পূর্বের বাকি টাকার কথা তুললে শাহেদ ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানের ভেতর ভাঙচুর চালান এবং তাকে গুলি করে মারার হুমকি দিয়ে চলে যান।

ভুক্তভোগী রফিকুল শেখ (৩৫), পিতা দেলোয়ার শেখ—একজন মুদি ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত শাহেদ মোল্লা (৩০), পিতা জুয়েল মোল্লা—উভয়ের বাড়ি কামারগ্রামে। শাহেদ পৌর যুবদলের আহবায়ক সৈয়দ মিজানুর রহমানের একনিষ্ঠ কর্মী।

রফিকুল বলেন, “সে অনেক দিন ধরে আমার দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে টাকা দেয় না। টাকা চাইলে আমাকে আগেও মারার চেষ্টা করেছে। কয়েকদিন আগে থানার এসআই মফিজুর স্যারকে মৌখিকভাবে জানাই। পরে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, তিনি মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। এরপর সোমবার রফিকুল ”

তিনি আরও বলেন, “এসআই মফিজ স্যারকে বলার পর সে আরও ক্ষেপে যায়। দোকানে এসে আবার হুমকি-ধামকি দিতে থাকে, একপর্যায়ে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। এরপর সিগারেট চায়, আমি না দিলে দোকানে ভাঙচুর চালায়, মালামাল ছুড়ে ফেলে দেয়। তারপর বলে ‘তোকে গুলি করে মেরে ফেলবো’, এই হুমকি দিয়ে আমাকে দোকানের ভেতরে রেখেই সাটার টেনে দেয় এবং বাইরে থেকে লাঠিসোটা দিয়ে সাটারে আঘাত করে। আমি ভিতরে আতঙ্কে থাকি। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সে পালিয়ে যায়।”

রফিকুল অভিযোগ করার কয়েক ঘণ্টা পরই দুপুর আড়াইটার দিকে প্রতিশোধমূলক হামলার শিকার হন তার আত্মীয় কাওছার খান। তিনি পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। কাওছার তার মামাতো ভাই মান্দার ও ৮ বছরের ছেলে আলিফকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলে কামারগ্রামের দারোগা বাড়ীর সামনে শাহেদ ও তার দলবল তাদের গতিরোধ করে।

কাওছার খান জানান, “মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার পর শাহেদ ও তার লোকজন আমাকে ও আমার ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে। এতে আমরা গুরুতর আহত হই।”
এই হামলার ঘটনায় কাওছার খান মঙ্গলবার বিকেলে আলফাডাঙ্গা থানায় পৃথক একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন যুবদল নেতা শাহেদের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সৈয়দ মিজানুর রহমান এবং অভিযুক্ত যুবদল নেতা শাহেদ মোল্যাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ শাহিন মোল্লা বলেন, “শাহেদ নামে আমি কোনো যুবদল নেতাকে চিনিনা। ইউনিয়ন পর্যায়ে এখনও কোনো কমিটি হয়নি। কেউ ওই পরিচয় ব্যবহার করলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়, এর দায় দল নেবে না।”

আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজালাল বলেন, “আমরা রফিকুল শেখ ও কাওছার খানের দুটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লন্ডন সফরের রাজনৈতিক ভালো-মন্দ

error: Content is protected !!

যুবদল নেতার কাছে সিগারেটের বাকি টাকা চাওয়ায় দোকান ভাঙচুর ও গুলির হুমকি

আপডেট টাইম : ১১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর :

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুরঃ

 

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামে সিগারেটের বাকি টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মুদি দোকানে হামলা ও গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা শাহেদ মোল্লার বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে রফিকুল শেখ আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে গতকাল সোমবার (৯ জুন) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শাহেদ রফিকুলের দোকানে গিয়ে সিগারেট খান। রফিকুল পূর্বের বাকি টাকার কথা তুললে শাহেদ ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানের ভেতর ভাঙচুর চালান এবং তাকে গুলি করে মারার হুমকি দিয়ে চলে যান।

ভুক্তভোগী রফিকুল শেখ (৩৫), পিতা দেলোয়ার শেখ—একজন মুদি ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত শাহেদ মোল্লা (৩০), পিতা জুয়েল মোল্লা—উভয়ের বাড়ি কামারগ্রামে। শাহেদ পৌর যুবদলের আহবায়ক সৈয়দ মিজানুর রহমানের একনিষ্ঠ কর্মী।

রফিকুল বলেন, “সে অনেক দিন ধরে আমার দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে টাকা দেয় না। টাকা চাইলে আমাকে আগেও মারার চেষ্টা করেছে। কয়েকদিন আগে থানার এসআই মফিজুর স্যারকে মৌখিকভাবে জানাই। পরে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, তিনি মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। এরপর সোমবার রফিকুল ”

তিনি আরও বলেন, “এসআই মফিজ স্যারকে বলার পর সে আরও ক্ষেপে যায়। দোকানে এসে আবার হুমকি-ধামকি দিতে থাকে, একপর্যায়ে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। এরপর সিগারেট চায়, আমি না দিলে দোকানে ভাঙচুর চালায়, মালামাল ছুড়ে ফেলে দেয়। তারপর বলে ‘তোকে গুলি করে মেরে ফেলবো’, এই হুমকি দিয়ে আমাকে দোকানের ভেতরে রেখেই সাটার টেনে দেয় এবং বাইরে থেকে লাঠিসোটা দিয়ে সাটারে আঘাত করে। আমি ভিতরে আতঙ্কে থাকি। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সে পালিয়ে যায়।”

রফিকুল অভিযোগ করার কয়েক ঘণ্টা পরই দুপুর আড়াইটার দিকে প্রতিশোধমূলক হামলার শিকার হন তার আত্মীয় কাওছার খান। তিনি পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। কাওছার তার মামাতো ভাই মান্দার ও ৮ বছরের ছেলে আলিফকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলে কামারগ্রামের দারোগা বাড়ীর সামনে শাহেদ ও তার দলবল তাদের গতিরোধ করে।

কাওছার খান জানান, “মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার পর শাহেদ ও তার লোকজন আমাকে ও আমার ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে। এতে আমরা গুরুতর আহত হই।”
এই হামলার ঘটনায় কাওছার খান মঙ্গলবার বিকেলে আলফাডাঙ্গা থানায় পৃথক একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন যুবদল নেতা শাহেদের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সৈয়দ মিজানুর রহমান এবং অভিযুক্ত যুবদল নেতা শাহেদ মোল্যাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ শাহিন মোল্লা বলেন, “শাহেদ নামে আমি কোনো যুবদল নেতাকে চিনিনা। ইউনিয়ন পর্যায়ে এখনও কোনো কমিটি হয়নি। কেউ ওই পরিচয় ব্যবহার করলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়, এর দায় দল নেবে না।”

আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজালাল বলেন, “আমরা রফিকুল শেখ ও কাওছার খানের দুটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


প্রিন্ট