ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লালপুরে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে চার দিনের উরস শুরু Logo বালিয়াকান্দিতে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্টে ইউপি সদস্য গ্রেফতার Logo ৩ লাখ টাকার দাবি, না দিলে ২ নাতিকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি Logo পাংশার সাঁজুরিয়া জেহরা জেরীন উচ্চ বিদ্যালয়ে দু’দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি সম্পন্ন Logo ভূরুঙ্গামারীতে অপারেশন ডেভিল হান্টে গত ২৪ ঘন্টায় ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ Logo শেখ রাসেল সেতুর নামফলক পরিবর্তন Logo ফরিদপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ওয়ার্ড কমিটি গঠনের লক্ষে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু Logo হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা অমিত Logo নোয়াখালীতে ১৩টি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন, ১১ লাখ টাকা জরিমানা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় আজ আরও ৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত-১৪৩

করোনা সংক্রমণের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় প্রথম কুষ্টিয়া। অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন করোনায় ও ১ জন উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

বুধবার  (০৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন, এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এদের মৃত্যু হয়েছে।

জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৯ টি নমুনা পরীক্ষায় ১৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৭৪ জন,কুমারখালী উপজেলায় ৫ জন, দৌলতপুর উপজেলার ১১ জন, ভেড়ামারা উপজেলায় ১০ জন,মিরপুর উপজেলায় ২১ জন, খোকসা উপজেলায় ২২ জন।  নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩৬.৭৬ শতাংশ হয়েছে। এই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০৮ জন।

এই দিকে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ২০০ বেডে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে এখন ভর্তি আছে ২২৭ জন। তাদের মধ্যে করোনা শনাক্ত রোগী ১৮৮  জন। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। ৭০ শতাংশ রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।

গত ৭ দিনেই কুষ্টিয়ায় করোনা আক্রান্ত ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৩শ ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত ৫৮৯ জনের মৃত্যু হলো।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.  আব্দুল মোমেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে মানুষ আগের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনার নতুন স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়ায় একজনের দ্বারা অনেক লোক আক্রান্ত হতে পারেন। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসককে আরও কঠোর হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড ঘোষণার পর থেকে রোগীর চাপ বাড়তে আছে। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের লোকবল কম। এ জন্য চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাই চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেও রোগীর চাপ বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আক্রামুজ্জামান মিন্টু বলেন, হাসপাতালে ২০০ শতাধিক পয়েন্টে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুল চালু রয়েছে। বেশি গুরুতর রোগীদের জন্য আলাদাভাবে পেয়িং ওয়ার্ডে রাখা হয়। ঈদ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। রোগী বাড়লেও চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ভর্তির ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবিরের বলেন , গ্রামে গ্রামে প্রশাসনের নজরদারি ও তদারকি আরও বাড়াতে হবে। উপসর্গ নিয়ে কেউ যেন বাড়িতে বসে না থাকেন। তাঁদের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়া মৃত্যুহার কমানো সম্ভব নয়। চিকিৎসা নিতে যত দেরি হবে, মৃত্যুর ঝুঁকি তত বাড়বে।  তিনি আরও  বলেন, সংক্রমণের হার কমানোর জন্য শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প পথ নেই। যত দ্রুত সম্ভব, গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকা নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কেননা মারা যাওয়া রোগীদের বেশির ভাগই গ্রাম থেকে আসা বয়স্ক নারী পুরুষ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালপুরে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় আজ আরও ৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত-১৪৩

আপডেট টাইম : ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অগাস্ট ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ :
করোনা সংক্রমণের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় প্রথম কুষ্টিয়া। অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন করোনায় ও ১ জন উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

বুধবার  (০৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন, এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এদের মৃত্যু হয়েছে।

জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৯ টি নমুনা পরীক্ষায় ১৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৭৪ জন,কুমারখালী উপজেলায় ৫ জন, দৌলতপুর উপজেলার ১১ জন, ভেড়ামারা উপজেলায় ১০ জন,মিরপুর উপজেলায় ২১ জন, খোকসা উপজেলায় ২২ জন।  নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩৬.৭৬ শতাংশ হয়েছে। এই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০৮ জন।

এই দিকে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ২০০ বেডে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে এখন ভর্তি আছে ২২৭ জন। তাদের মধ্যে করোনা শনাক্ত রোগী ১৮৮  জন। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। ৭০ শতাংশ রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।

গত ৭ দিনেই কুষ্টিয়ায় করোনা আক্রান্ত ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৩শ ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত ৫৮৯ জনের মৃত্যু হলো।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.  আব্দুল মোমেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে মানুষ আগের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনার নতুন স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়ায় একজনের দ্বারা অনেক লোক আক্রান্ত হতে পারেন। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসককে আরও কঠোর হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড ঘোষণার পর থেকে রোগীর চাপ বাড়তে আছে। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের লোকবল কম। এ জন্য চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাই চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেও রোগীর চাপ বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আক্রামুজ্জামান মিন্টু বলেন, হাসপাতালে ২০০ শতাধিক পয়েন্টে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুল চালু রয়েছে। বেশি গুরুতর রোগীদের জন্য আলাদাভাবে পেয়িং ওয়ার্ডে রাখা হয়। ঈদ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। রোগী বাড়লেও চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ভর্তির ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবিরের বলেন , গ্রামে গ্রামে প্রশাসনের নজরদারি ও তদারকি আরও বাড়াতে হবে। উপসর্গ নিয়ে কেউ যেন বাড়িতে বসে না থাকেন। তাঁদের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়া মৃত্যুহার কমানো সম্ভব নয়। চিকিৎসা নিতে যত দেরি হবে, মৃত্যুর ঝুঁকি তত বাড়বে।  তিনি আরও  বলেন, সংক্রমণের হার কমানোর জন্য শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প পথ নেই। যত দ্রুত সম্ভব, গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকা নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কেননা মারা যাওয়া রোগীদের বেশির ভাগই গ্রাম থেকে আসা বয়স্ক নারী পুরুষ।


প্রিন্ট