ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলবঃ-হান্নান মাসউদ Logo অবৈধ সম্পদঃ হানিফ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা Logo বিএনপিতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের স্থান নেইঃ -রুহুল কবির রিজভী Logo এবছর উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হয়েছে কেশবপুর উপজেলা Logo ঝালকাঠিতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রমে গতি আনতে জেলা সমন্বয়ক টিম গঠন Logo কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল‌ অনুষ্ঠিত Logo লালপুরে অগ্নিকাণ্ডে পুড়লো খামারির স্বপ্ন Logo কালুখালীতে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত Logo নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষিকার দীর্ঘ অনুপস্থিতিঃ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে Logo ফরিদপুরে ২৭টি “ভূমি সেবা সহায়তা কেন্দ্র” উদ্বোধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সদরপুরে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 

ফরিদপুরের সদরপুরে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের মুদি দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাতের চা দোকানদার পর্যন্ত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে উৎসাহিত হচ্ছেন। যত্রতত্র বিক্রি করা এ সকল গ্যাস সিলিন্ডার সংরক্ষণের অসর্তকতার কারনে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এ ছাড়াও বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতারা ফ্রী হোম ডেলিভারি সেবা প্রদানের কারণে প্রতন্তাঞ্চলের জনসাধারণের চাহিদা থাকার কারনে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে নামি বেনামি কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির প্রতিযোগিতা।

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সাড়েসাতরশি বাজার, সদরপুর বাজার, মনিকোঠা, পিয়াজখালী, আকটেরচর, চরচাদপুর, ক্বারীরহাট, ভাষানচর, বাবুরচর, চন্দ্রপাড়া সহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরকারী নিয়মনীতি ছাড়াই যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে রান্নার কাজে ব্যাবহৃত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার।

মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, পানের দোকান,মোবাইল রিচার্জের দোকান, চায়ের দোকান, স্টেশনারী ও কসমেটিকসের দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান সহ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। মোবাইলে ফোন করলেই ফ্রী হোম ডেলিভারিতেই পাওয়া যাচ্ছে গ্যাস। অনেক সময় বিভিন্ন নামে আবার কোম্পানীর সিলবিহীন ও বাতিল কৃত সিলিন্ডারের ভিতরে ভরে নামে বেনামে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার।

উপজেলার হাট বাজার সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব সিলিন্ডার। নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানির অনুমোদিত ডিলারগন খুচরা বিক্রির জন্য সর্বচ্চ ১০ টি সিলিন্ডার মজুত রাখতে পারেন। কিন্ত বাস্তবে দেখা যায় বিক্রির জন্য বাইরে রাস্তার পাশে স্তূপ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। একটার উপর আরেকটা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মানা হচ্ছেনা সংরক্ষণের কোন প্রকার নিয়মনীতি। খোলামেলা স্থানে, দোকানের বারান্দায়, জনবহুল এলাকায় যত্রতত্রই গ্যাস সিলিন্ডার এলোমেলো অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। একটু অসতর্ক হলেই যে কোন সময়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

সরকারী নিয়মানুযায়ী এলপি গ্যাস বিক্রয়, মজুত, ও বাজারজাত করতে হলে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যাবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহন, পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহন, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স এবং অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার সংরক্ষণ বাধ্যতামুলক৷ অথচ সদরপুর উপজেলার
হাতে গোনা কয়েক জনের এই সকল লাইসেন্স ছাড়া কোথাও মানা হচ্ছেনা কোন প্রকার নিয়মনীতি।

উপজেলার আটরশি মোড়ের ভাই ভাই স্টোরেজের মালিক হাছিব ফকিরের কাছে লাইসেন্স বিহীন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে লাইসেন্স লাগে কিনা তা আমার জানা নেই৷ এছাড়া একাধিক বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ বিক্রেতারই কোন লাইসেন্স বা অমুমোদন নেই। শুধু মাত্র ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই তারা ব্যাবসা করছেন। অনেকের আবার ট্রেড লাইসেন্স ও নেই।

আইন ও বিস্ফোরক প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনেকে ব্যবসায়ী এ বিষয় কিছুই বোঝেননা বা জানেন না। আবার কেউ জানলেও তা মানছন না৷ কিছু বিক্রেতা বলেন, আমরা দোকানে বসে গ্যাস বিক্রি করলেও অনেক বিক্রেতা মোবাইল ফোনেও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে৷ । হোম ডেলিভারীর নামে অতিরিক্ত মুল্য না নেওয়ার সুযোগে অনুমতি বিহীন কোম্পানির নিম্ন মানের গ্যাস বাতিল ক্রত সিলিন্ডারে ভরে ওজনে কম দিয়ে দিচ্ছে গ্রাহকদের মাঝে।

স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদারকী না থাকায় দিন দিন অবৈধভাবে এই ব্যাবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সংরক্ষণের অভাবে, যত্রতত্র সিলিন্ডার মজুত ও বাজারজাত করার ফলে অগ্নি দুর্ঘটনাসহ যেকোন দুর্ঘটনার আশংকা থেকেই যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ রনেন্দ্র নাথ চৌধুরী বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির লাইসেন্স জেলা ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে ইস্যু করা হয়, আমরা শুধু তদারকি করি। তবে জনবল কম থাকায় সব সময় সব এলাকায় তদারকি সম্ভব হয়না বলেও জানান তিনি।

অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দূর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স বিহীন ও কোন প্রকার নিয়মনীতি অমান্য করে যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গজে ওঠা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দিকে নজর দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা সদরপুর উপজেলা বাসীর।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলবঃ-হান্নান মাসউদ

error: Content is protected !!

সদরপুরে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

আপডেট টাইম : ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 

ফরিদপুরের সদরপুরে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের মুদি দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাতের চা দোকানদার পর্যন্ত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে উৎসাহিত হচ্ছেন। যত্রতত্র বিক্রি করা এ সকল গ্যাস সিলিন্ডার সংরক্ষণের অসর্তকতার কারনে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এ ছাড়াও বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতারা ফ্রী হোম ডেলিভারি সেবা প্রদানের কারণে প্রতন্তাঞ্চলের জনসাধারণের চাহিদা থাকার কারনে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে নামি বেনামি কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির প্রতিযোগিতা।

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সাড়েসাতরশি বাজার, সদরপুর বাজার, মনিকোঠা, পিয়াজখালী, আকটেরচর, চরচাদপুর, ক্বারীরহাট, ভাষানচর, বাবুরচর, চন্দ্রপাড়া সহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরকারী নিয়মনীতি ছাড়াই যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে রান্নার কাজে ব্যাবহৃত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার।

মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, পানের দোকান,মোবাইল রিচার্জের দোকান, চায়ের দোকান, স্টেশনারী ও কসমেটিকসের দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান সহ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। মোবাইলে ফোন করলেই ফ্রী হোম ডেলিভারিতেই পাওয়া যাচ্ছে গ্যাস। অনেক সময় বিভিন্ন নামে আবার কোম্পানীর সিলবিহীন ও বাতিল কৃত সিলিন্ডারের ভিতরে ভরে নামে বেনামে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার।

উপজেলার হাট বাজার সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব সিলিন্ডার। নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানির অনুমোদিত ডিলারগন খুচরা বিক্রির জন্য সর্বচ্চ ১০ টি সিলিন্ডার মজুত রাখতে পারেন। কিন্ত বাস্তবে দেখা যায় বিক্রির জন্য বাইরে রাস্তার পাশে স্তূপ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। একটার উপর আরেকটা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মানা হচ্ছেনা সংরক্ষণের কোন প্রকার নিয়মনীতি। খোলামেলা স্থানে, দোকানের বারান্দায়, জনবহুল এলাকায় যত্রতত্রই গ্যাস সিলিন্ডার এলোমেলো অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। একটু অসতর্ক হলেই যে কোন সময়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

সরকারী নিয়মানুযায়ী এলপি গ্যাস বিক্রয়, মজুত, ও বাজারজাত করতে হলে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যাবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহন, পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহন, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স এবং অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার সংরক্ষণ বাধ্যতামুলক৷ অথচ সদরপুর উপজেলার
হাতে গোনা কয়েক জনের এই সকল লাইসেন্স ছাড়া কোথাও মানা হচ্ছেনা কোন প্রকার নিয়মনীতি।

উপজেলার আটরশি মোড়ের ভাই ভাই স্টোরেজের মালিক হাছিব ফকিরের কাছে লাইসেন্স বিহীন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে লাইসেন্স লাগে কিনা তা আমার জানা নেই৷ এছাড়া একাধিক বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ বিক্রেতারই কোন লাইসেন্স বা অমুমোদন নেই। শুধু মাত্র ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই তারা ব্যাবসা করছেন। অনেকের আবার ট্রেড লাইসেন্স ও নেই।

আইন ও বিস্ফোরক প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনেকে ব্যবসায়ী এ বিষয় কিছুই বোঝেননা বা জানেন না। আবার কেউ জানলেও তা মানছন না৷ কিছু বিক্রেতা বলেন, আমরা দোকানে বসে গ্যাস বিক্রি করলেও অনেক বিক্রেতা মোবাইল ফোনেও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে৷ । হোম ডেলিভারীর নামে অতিরিক্ত মুল্য না নেওয়ার সুযোগে অনুমতি বিহীন কোম্পানির নিম্ন মানের গ্যাস বাতিল ক্রত সিলিন্ডারে ভরে ওজনে কম দিয়ে দিচ্ছে গ্রাহকদের মাঝে।

স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদারকী না থাকায় দিন দিন অবৈধভাবে এই ব্যাবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সংরক্ষণের অভাবে, যত্রতত্র সিলিন্ডার মজুত ও বাজারজাত করার ফলে অগ্নি দুর্ঘটনাসহ যেকোন দুর্ঘটনার আশংকা থেকেই যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ রনেন্দ্র নাথ চৌধুরী বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির লাইসেন্স জেলা ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে ইস্যু করা হয়, আমরা শুধু তদারকি করি। তবে জনবল কম থাকায় সব সময় সব এলাকায় তদারকি সম্ভব হয়না বলেও জানান তিনি।

অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দূর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স বিহীন ও কোন প্রকার নিয়মনীতি অমান্য করে যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গজে ওঠা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দিকে নজর দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা সদরপুর উপজেলা বাসীর।


প্রিন্ট