আসলাম বেপারীঃ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের রহমান প্রামানিকের ডাঙ্গী গ্রামে নির্মাণাধীন একটি এইচবিবি (HBB) রাস্তার নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।
তারা জানিয়েছেন, ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সংযোগ সড়কটি নির্মাণে রাস্তার তলদেশে ফাঁকা করে দুই নম্বর ইট বিছিয়ে তার উপর অল্প পরিমাণ বালু ফেলে কাজ দেখানো হচ্ছে, যা প্রকৃত মানের তুলনায় অত্যন্ত দুর্বল। ফলে সড়কটি মূল রাস্তায় কার্যকর সংযোগ দিতে পারবে না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
গ্রামের পাশের বাসিন্দা শেখ ছুলাইমান (৪৫) বলেন, “দুই নম্বর আদলা ইট ফাঁকা ফাঁকা করে বিছিয়ে যেভাবে ভরাট বালু ফেলা হচ্ছে, তাতে সরকারি বরাদ্দের অর্ধেক কাজও হচ্ছে না। এই রাস্তা এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসবে না।”
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ালী কনস্ট্রাকশন’-এর স্বত্বাধিকারী কাজী বদরুজ্জামান অবশ্য নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, “দুই নম্বর ইট ব্যবহৃত হয়েছে, এটা ঠিক। তবে এটাই এলাকায় প্রচলিত এইচবিবি রাস্তার মান। অনেক বড় বড় কাজও এমন ইট দিয়েই করা হয়েছে।”
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এলজিইডির অধীনে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পটি ‘ওয়ালী কনস্ট্রাকশন’ নামক সদরপুর উপজেলার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডার পদ্ধতিতে পায়। রাস্তার অবস্থান শেখ ফিরোজের বাড়ি থেকে কাজেমের বাড়ি পর্যন্ত।
অভিযোগ রয়েছে, ঈদুল আজহার সরকারি ছুটির সময় সুযোগ নিয়ে দ্রুত এবং অবহেলাভাবে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
উপজেলা উপ-প্রকৌশলী মোঃ সাইফুদ্দিন জানান, “ঈদের ছুটির কারণে আমি রাস্তা পরিদর্শনে যেতে পারিনি। তবে দুই নম্বর ইট ব্যবহারের কথা নয়।”
অন্যদিকে, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস ছাত্তার বলেন, “রাস্তাটি সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই। আপনার কাছে ইটের ছবি থাকলে আমার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিন।” এ প্রেক্ষিতে ২৮টি স্থিরচিত্র এবং ৫টি ভিডিও উপজেলা প্রকৌশলীর মোবাইলে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিষয়টি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, বর্ষা মৌসুমে ঢলের পানিতে রাস্তার একাংশ ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসাথে স্থানীয় জনগণ টেকসই ও মানসম্মত নির্মাণ কাজের দাবি জানিয়েছেন।
প্রিন্ট