ইসমাইল হোসেন বাবুঃ
কুষ্টিয়ার মিরপুরে পরকীয়ার জেরে ২২ দিনের এক নবজাতককে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে গুম করেছে তার মা ও পরকীয়া প্রেমিক। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের চিথলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—চিথলিয়া এলাকার শেরেবুল ইসলাম (৩০), শিশুর মা মিতা খাতুন (২৫), চাচা সাইদুল ইসলাম (৫০) ও ভাবি চাঁদনী খাতুন (৩৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮ মাস আগে দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি এলাকার রাজু নামের এক যুবকের সঙ্গে মিতা খাতুনের বিয়ে হয়। কিছুদিন আগে তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। স্বামী রাজুর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় মিতা নবজাতককে নিয়ে ফিরে আসেন তার মায়ের বাড়ি চিথলিয়ায়।
সেখানে মিতার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল তার চাচাতো ভাই শেরেবুল ইসলামের সঙ্গে। বাচ্চাটির পিতৃত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তারা দুজনে শিশুটিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে শেরেবুলের পিতা ও ভাবিও এ হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেন।
গত ২৫ মে রাতে শিশুটিকে হত্যা করে পাশের খালে ফেলে দেয় তারা। ঘটনার ধামাচাপা দিতে মিতা অপপ্রচার চালাতে থাকে যে, তার স্বামী রাজু খলিসাকুন্ডি থেকে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে গেছে। পরে সে রাতে মিরপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন মিতা।
মিরপুর থানা পুলিশ তদন্তে নামে এবং কয়েকদিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে মিতা খাতুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
পরে মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আজিজ এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন এবং চারজন আসামিকে গ্রেফতার করেন।
মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রাথমিকভাবে শিশুটির মা মিতা খাতুনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা জিকে খাল থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করেছি।”
প্রিন্ট