নড়াইলে শশা-ক্ষীরই চাষে বিপ্লব ঘটছে। প্রতি বছরই এ ফসলের চাষের জমি বাড়ছে। এ চাষ করে অনেকেই এখন ভাগ্য বদল করছেন। বর্তমানে সাড়ে ৩ হাজার পরিবার এ চাষে যুক্ত। জেলার চাহিদা মিটিয়ে করোনাকালেও খুলনা, যশোর, রাজশাহী এবং ঢাকায় এ শশা ও ক্ষীরই রফতানি হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে শশা ও ক্ষীরইয়ের চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশী। সদরের শোভারঘোপ, বড়গাতি, চুনখোলা,তারাপুর, বিছালী, চাকই, আড়পাড়া, মির্জাপুর, মধুরগাতি,বিড়গ্রাম, মুশুরি, কলোড়া, আগদিয়া, ভদ্রবিলা, মিরাপাড়া ও পাইকাড়া গ্রামে প্রধানত বানিজ্যিক ভিত্তিতে এই শশা ও ক্ষীরই চাষ হচ্ছে। প্রতিদিন দেড় থেকে দু’শ মন শশা ও ক্ষীরই জেলার হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চুনখোলা গ্রামের ভূমিহীন জাহান্দার বিশ্বাস (৪০) জানান, দীর্ঘ ১১ বছর ১ এশর জমি বর্গা নিয়ে শশা ও ক্ষীরই-এর চাষ করছেন। এ কাজে তার স্ত্রী রূপালী বেগমও সরাসরি সহায়তা করে থাকেন। লাভের টাকা দিয়ে তিনি ১৫ শতক জমি কিনে আধা পাকা ঘরও নির্মাণ করেছেন। প্রতি বছর তিনি প্রায় ১ লাখ টাকা ঘরে তোলেন বলে জানান।
বড়গাতি গ্রামের প্রান্তিক চাষি প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, তিনি ৮ বছর ধরে ৬০ শতক জমি লিজ নিয়ে শশা ও ক্ষীরই-এর চাষ করছেন। বছরে খরচ বাদে ৫০-৬০ হাজার টাকা ঘরে তোলেন। একই গ্রামের প্রান্তিক চাষি ভূবন বিশ্বাস জানান, ৬ বছর ধরে ৫০ শতক জমি বর্গা নিয়ে শশার চাষ করছেন। প্রতি বছর প্রায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা লাভ করেন।
সদরের বিছালী গ্রামের শশা ব্যাপারি মিঠু মোল্যা বলেন, বাজারে প্রতি মন শশা ৫শ-৬শ টাকা বিক্রি হলেও আগে ৮শ-৯শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০টি মিনি ট্রাক বোঝাই শশা ও ক্ষীরই যশোর, খুলনা, রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। তবে করোনার কারনে পরিবহনে একটু সমস্যা হচ্ছে বলে জানান।
নড়াইল কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, এখানকার মাটি ও জমির শ্রেণি শশা চাষে উত্তম হওয়ায় প্রতি বছরই এ চাষ বাড়ছে। সমন্বিত পদ্ধতির মাধ্যমে প্রায় সারা বছরই শশা-ক্ষীরই চাষ সম্ভব। একজন কৃষক ৩৩ শতকের ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৭৫ দিনে শশার চাষ করে ২০-৩০ হাজার টাকা লাভ করতে পারেন।
প্রিন্ট