ঢাকা , রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আওয়ামী লীগ নেতার সভাপতিত্বে  ইউনিয়ন বিএনপি’র সভা

স্থানীয় রাজনীতিতে চরম বিতর্ক * ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

“আলফাডাঙ্গায় বিএনপি’র আদর্শ কি আজ প্রশ্নের মুখে?”এমন আলোচনায় এখন সরগরম স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন। কারণ, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক কর্মীসভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের এক নেতা। তার পাশেই মঞ্চে ছিলেন আরও একজন পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতাও। ফলে এই কর্মসূচি ঘিরে সংগঠনের অভ্যন্তরে যেমন উঠেছে সমালোচনার ঝড়, তেমনি সাধারণ কর্মীদের মনেও তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।

.

শুক্রবার, ২৩ মে বিকেল ৫টায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বেজিডাঙ্গা আমেনা ওয়াহেদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত হয় সদর ইউনিয়ন বিএনপি’র কর্মীসভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন মনিরুল ইসলাম মাসুদ মাস্টার, যিনি ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক চেয়ে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এছাড়াও মাসুদ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলাম সমর্থিত  উপজেলা কৃষকলীগ নেতা।

.

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষকদলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

.

এ বিষয়ে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন কেউ নৌকার প্রার্থী হলেও বিএনপি করতে পারবে। রাজনীতির বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।‘ তিনি আরও বলেন, ‘মাসুদ চেয়ারম্যান হয়ে গিয়েছিলো, তাকে মাত্র ৬২ ভোটে জোর করে হারানো হয়েছে। এমন জনপ্রিয় লোককে আমরা বাদ দিতে পারি না।‘ এই বক্তব্য ও সভাপতির পেছনের রাজনৈতিক ইতিহাস ঘিরেই শুরু হয় মূল বিতর্ক।

.

এদিকে, সভার মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেন নামে একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, যিনি ছিলেন উপজেলা যুবলীগের রানা-সাইফার কমিটির সদস্য এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সুজার ভাতিজা। বিশেষ করে, হাসিনা সরকারের পতনের পরে ১২ আগস্ট আলফাডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত এক সশস্ত্র মিছিলে আনোয়ার হোসেন তার সন্তান আল সাহাদকে সঙ্গে নিয়ে অংশ নেন- যার ভিডিও এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।

.

ফলে প্রশ্ন উঠছে—“এটি কি সত্যিই বিএনপি’র কর্মসূচি, নাকি আওয়ামী লীগের ছায়ায় পরিচালিত একটি সাজানো অনুষ্ঠান?”

.

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদারেস আলী ঈসা এ বিষয়ে বলেন, ‘সমর্থক হতে পারে, এমনকি প্রাথমিক সদস্যও হতে পারে—তাই বলে সংগঠনের বাইরে কাউকে সভাপতি করা যায় না। এটা আদর্শভ্রষ্টতা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার লঙ্ঘন।‘

.

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বিএনপির আদর্শে কোনো আপস নেই। বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘

.

আলফাডাঙ্গার রাজনীতিতে এই ঘটনা এখন তুমুল আলোচনার বিষয়। প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি কি আদর্শের পথে থাকবে, নাকি বাস্তবতার ছায়া মেনে আপোষ করবে?


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

আওয়ামী লীগ নেতার সভাপতিত্বে  ইউনিয়ন বিএনপি’র সভা

আপডেট টাইম : ০৮:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ফরিদপুর :

নিজস্ব প্রতিনিধি:

“আলফাডাঙ্গায় বিএনপি’র আদর্শ কি আজ প্রশ্নের মুখে?”এমন আলোচনায় এখন সরগরম স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন। কারণ, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক কর্মীসভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের এক নেতা। তার পাশেই মঞ্চে ছিলেন আরও একজন পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতাও। ফলে এই কর্মসূচি ঘিরে সংগঠনের অভ্যন্তরে যেমন উঠেছে সমালোচনার ঝড়, তেমনি সাধারণ কর্মীদের মনেও তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।

.

শুক্রবার, ২৩ মে বিকেল ৫টায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বেজিডাঙ্গা আমেনা ওয়াহেদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত হয় সদর ইউনিয়ন বিএনপি’র কর্মীসভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন মনিরুল ইসলাম মাসুদ মাস্টার, যিনি ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক চেয়ে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এছাড়াও মাসুদ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলাম সমর্থিত  উপজেলা কৃষকলীগ নেতা।

.

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষকদলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

.

এ বিষয়ে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন কেউ নৌকার প্রার্থী হলেও বিএনপি করতে পারবে। রাজনীতির বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।‘ তিনি আরও বলেন, ‘মাসুদ চেয়ারম্যান হয়ে গিয়েছিলো, তাকে মাত্র ৬২ ভোটে জোর করে হারানো হয়েছে। এমন জনপ্রিয় লোককে আমরা বাদ দিতে পারি না।‘ এই বক্তব্য ও সভাপতির পেছনের রাজনৈতিক ইতিহাস ঘিরেই শুরু হয় মূল বিতর্ক।

.

এদিকে, সভার মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেন নামে একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, যিনি ছিলেন উপজেলা যুবলীগের রানা-সাইফার কমিটির সদস্য এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সুজার ভাতিজা। বিশেষ করে, হাসিনা সরকারের পতনের পরে ১২ আগস্ট আলফাডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত এক সশস্ত্র মিছিলে আনোয়ার হোসেন তার সন্তান আল সাহাদকে সঙ্গে নিয়ে অংশ নেন- যার ভিডিও এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।

.

ফলে প্রশ্ন উঠছে—“এটি কি সত্যিই বিএনপি’র কর্মসূচি, নাকি আওয়ামী লীগের ছায়ায় পরিচালিত একটি সাজানো অনুষ্ঠান?”

.

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদারেস আলী ঈসা এ বিষয়ে বলেন, ‘সমর্থক হতে পারে, এমনকি প্রাথমিক সদস্যও হতে পারে—তাই বলে সংগঠনের বাইরে কাউকে সভাপতি করা যায় না। এটা আদর্শভ্রষ্টতা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার লঙ্ঘন।‘

.

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বিএনপির আদর্শে কোনো আপস নেই। বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘

.

আলফাডাঙ্গার রাজনীতিতে এই ঘটনা এখন তুমুল আলোচনার বিষয়। প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি কি আদর্শের পথে থাকবে, নাকি বাস্তবতার ছায়া মেনে আপোষ করবে?


প্রিন্ট