ঢাকা , শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

গোমস্তাপুরে শীতের সঙ্গে বেড়েছে পেল তোষক কারিগরদের ব্যস্ততা

আব্দুস সালাম তালুকদারঃ

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের গ্রাম অঞ্চলে একটু একটু করে পড়তে শুরু করেছে ঠান্ডা, বইছে হিমেল হাওয়াও। ভোরে সবুজ ঘাসের উপর বিন্দু বিন্দু শিশির কণা । বাইরে বের হলেই দেহে কাঁপুনি দিচ্ছে দুয়েকটি শিশির বিন্দুর পতন। এ যেন শীতেরই উঁকি। ষড়ঋতুর চতুর্থ ঋতু হেমন্ত আসলেই প্রকৃতি নিজেকে সাজানোর ঢঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পুরোপুরি শীত খুব একটা না থাকলেও শীতের আভাস ভাল ভাবে টের পাওয়া যাচ্ছে। এ দিকে কারিগরদের টুংটাং আওয়াজ আর বাতাসে উড়ে বেড়ানো তুলা জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে। উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে লেপ তৈরির ধুম। ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লেপ তৈরির কারিগররা।

 

গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা জুড়ে গভীর রাত ও খুব সকাল পর্যন্ত শীত অনুভূত হচ্ছে। আর এ অনুভূতির ফলে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ও পাড়ায় পাড়ায় প্রস্তুতি নিচ্ছে বাক্সবন্দি করে রাখা লেপ-তোশক বের করা সহ ঠিক করার জন্য। আবার কেউ নতুন ভাবে তৈরি করছেন তাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লেপ-তোষকের কারিগররা। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজারে লেপ-তোশক বিক্রি ও তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গোমস্তাপুরে প্রায় অর্ধ শতাধিক লেপ-তোষকের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমে ব্যবসায়ীরা রেডিমেড লেপ তোষক তৈরি করে তা বিক্রি করছেন। এই শীতে উষ্ণতা ছড়াতে লেপ-তোষক এর জুড়ি নেই। এর ফলে উপজেলা সদরে লেপ-তোষকের দোকান গুলোতে চলছে লেপ বানানোর ধুম। অনেকেই পুরোনো লেপ-তোশকের কভার পাল্টিয়ে নিচ্ছেন। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার শীতের তীব্রতা বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

এদিকে সাধারণ মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় করছে। অপর দিকে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তদের লক্ষ্য করা যাচ্ছে উপজেলার স্থায়ী বড়-বড় কাপড়ের দোকান গুলোতে কম্বল কিনতে। তবে তুলা, লেপের কাপড়, ফোম এবং মজুরী সব মিলে গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

 

স্থানীয় লোকজন বলছেন, গোমস্তাপুর উপজেলা বরেন্দ্র এলাকা ও সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় এখানে শীতের পার্দুভাব অনেক বেশি। তাই শীতের আগমনে এবার আগাম লেপ-তোষক বানানোর ধুম পড়েছে। সাধারণ মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় করছে। প্রায় প্রতি বছরই কোন না কোন পরিবারে নতুন লেপ তৈরি করাই লাগে।

 

উপজেলার লেপ তৈরির কারিগর জাহাঙ্গীর আলম জানান, এক সপ্তাহ আগে তেমন কোন কাজকর্ম ছিলে না। গত এক সপ্তাহ ধরে সন্ধ্যার পর হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ায় এবং ভোরের হালকা কুয়াশা শীতের আমেজ একটু বিরাজ করছে। এতেই লেপ তৈরির অর্ডার শুরু হয়ে গেছে। আর কয়েক দিন পর রাত-দিন সমান তালেই কাজ করতে হবে আমাদের। বর্তমানে পুরাতন লেপ ভেঙ্গে নতুন ভাবে তৈরির অর্ডারই বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের কাজ ২-৩ গুন বেড়ে যাবে।

 

ভাই বোন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মোস্তাকিন জানান, আমাদের দোকানে আগে যেখানে প্রতিদিন ২-৩টি লেপের অর্ডার আসতো। এখন শীতের আভাস পাওয়ায় লেপের অর্ডার প্রতিদিন ৮-১০ টি করে আসছে। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহ পর শীতকে সামনে রেখে ও বিয়ের মাস সে কারণে প্রতিদিন ২০-২৫ টি লেপের অর্ডার পারো। এখন প্রতিটি লেপ ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায় বানিয়ে বিক্রি করছি। পাশাপাশি অগ্রিম কিছু লেপ-তোশক বানিয়ে রাখছি।

 

সাধারণত অনেক ক্রেতায় রেডিমেট ভাবে এসব ক্রয় করে থাকে। তিনি আরও জানান, এবার তুলার দাম একটু বেশি হবার কারনে বড় লেপের দাম গত বছরের চেয়ে ১৫০ টাকা হতে ২০০ টাকা বেশি লাগছে। আবার সিঙ্গেল লেপ এ বেড়েছে ১০০ টাকা মত পাশাপাশি কারিগরদের মুজুরি ও এবার একটু বেশি বেড়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদীতে ট্রাকসহ ১৪৮ বস্তা জিরা উদ্ধার, দুই ডাকাত গ্রেফতার

error: Content is protected !!

গোমস্তাপুরে শীতের সঙ্গে বেড়েছে পেল তোষক কারিগরদের ব্যস্ততা

আপডেট টাইম : ১৭ ঘন্টা আগে
আব্দুস সালাম তালুকদার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

আব্দুস সালাম তালুকদারঃ

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের গ্রাম অঞ্চলে একটু একটু করে পড়তে শুরু করেছে ঠান্ডা, বইছে হিমেল হাওয়াও। ভোরে সবুজ ঘাসের উপর বিন্দু বিন্দু শিশির কণা । বাইরে বের হলেই দেহে কাঁপুনি দিচ্ছে দুয়েকটি শিশির বিন্দুর পতন। এ যেন শীতেরই উঁকি। ষড়ঋতুর চতুর্থ ঋতু হেমন্ত আসলেই প্রকৃতি নিজেকে সাজানোর ঢঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পুরোপুরি শীত খুব একটা না থাকলেও শীতের আভাস ভাল ভাবে টের পাওয়া যাচ্ছে। এ দিকে কারিগরদের টুংটাং আওয়াজ আর বাতাসে উড়ে বেড়ানো তুলা জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে। উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে লেপ তৈরির ধুম। ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লেপ তৈরির কারিগররা।

 

গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা জুড়ে গভীর রাত ও খুব সকাল পর্যন্ত শীত অনুভূত হচ্ছে। আর এ অনুভূতির ফলে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ও পাড়ায় পাড়ায় প্রস্তুতি নিচ্ছে বাক্সবন্দি করে রাখা লেপ-তোশক বের করা সহ ঠিক করার জন্য। আবার কেউ নতুন ভাবে তৈরি করছেন তাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লেপ-তোষকের কারিগররা। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজারে লেপ-তোশক বিক্রি ও তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গোমস্তাপুরে প্রায় অর্ধ শতাধিক লেপ-তোষকের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমে ব্যবসায়ীরা রেডিমেড লেপ তোষক তৈরি করে তা বিক্রি করছেন। এই শীতে উষ্ণতা ছড়াতে লেপ-তোষক এর জুড়ি নেই। এর ফলে উপজেলা সদরে লেপ-তোষকের দোকান গুলোতে চলছে লেপ বানানোর ধুম। অনেকেই পুরোনো লেপ-তোশকের কভার পাল্টিয়ে নিচ্ছেন। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার শীতের তীব্রতা বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

এদিকে সাধারণ মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় করছে। অপর দিকে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তদের লক্ষ্য করা যাচ্ছে উপজেলার স্থায়ী বড়-বড় কাপড়ের দোকান গুলোতে কম্বল কিনতে। তবে তুলা, লেপের কাপড়, ফোম এবং মজুরী সব মিলে গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

 

স্থানীয় লোকজন বলছেন, গোমস্তাপুর উপজেলা বরেন্দ্র এলাকা ও সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় এখানে শীতের পার্দুভাব অনেক বেশি। তাই শীতের আগমনে এবার আগাম লেপ-তোষক বানানোর ধুম পড়েছে। সাধারণ মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় করছে। প্রায় প্রতি বছরই কোন না কোন পরিবারে নতুন লেপ তৈরি করাই লাগে।

 

উপজেলার লেপ তৈরির কারিগর জাহাঙ্গীর আলম জানান, এক সপ্তাহ আগে তেমন কোন কাজকর্ম ছিলে না। গত এক সপ্তাহ ধরে সন্ধ্যার পর হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ায় এবং ভোরের হালকা কুয়াশা শীতের আমেজ একটু বিরাজ করছে। এতেই লেপ তৈরির অর্ডার শুরু হয়ে গেছে। আর কয়েক দিন পর রাত-দিন সমান তালেই কাজ করতে হবে আমাদের। বর্তমানে পুরাতন লেপ ভেঙ্গে নতুন ভাবে তৈরির অর্ডারই বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের কাজ ২-৩ গুন বেড়ে যাবে।

 

ভাই বোন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মোস্তাকিন জানান, আমাদের দোকানে আগে যেখানে প্রতিদিন ২-৩টি লেপের অর্ডার আসতো। এখন শীতের আভাস পাওয়ায় লেপের অর্ডার প্রতিদিন ৮-১০ টি করে আসছে। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহ পর শীতকে সামনে রেখে ও বিয়ের মাস সে কারণে প্রতিদিন ২০-২৫ টি লেপের অর্ডার পারো। এখন প্রতিটি লেপ ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায় বানিয়ে বিক্রি করছি। পাশাপাশি অগ্রিম কিছু লেপ-তোশক বানিয়ে রাখছি।

 

সাধারণত অনেক ক্রেতায় রেডিমেট ভাবে এসব ক্রয় করে থাকে। তিনি আরও জানান, এবার তুলার দাম একটু বেশি হবার কারনে বড় লেপের দাম গত বছরের চেয়ে ১৫০ টাকা হতে ২০০ টাকা বেশি লাগছে। আবার সিঙ্গেল লেপ এ বেড়েছে ১০০ টাকা মত পাশাপাশি কারিগরদের মুজুরি ও এবার একটু বেশি বেড়েছে।


প্রিন্ট