ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

দেড় বছর যাবত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সদরপুরের চরাঞ্চলবাসির

মোঃ নুরুল ইসলামঃ

 

বিদ্যুতের অভাবে ফ্রিজ, পাখা, টেলিভিশন সব অকেজো হয়ে পড়ে আছে। মাছ মাংস কিছুই সংরক্ষণ করা যায় না। গরমে ছোট বাচ্চা আর বৃদ্ধদের কষ্ট দেখতেও কষ্ট হয়।’ কথাগুলো বলছিলেন ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের মোজাফফরপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজা মল্লিক। একই গ্রামের আরেক বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ‘দেড় বছর ধরে আমরা অন্ধকারে আছি। রাতে শিশুদের পড়াশোনা করানো যায় না। মোবাইল চার্জ দিতে নদী পাড়ি দিয়ে অন্য ইউনিয়নে যেতে হয়। জীবনটা কষ্টকর হয়ে গেছে।’

 

এমনি করে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বিদ্যুৎবিহীন জীবন যাপন করছে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ও চর নাছিরপুর ইউনিয়নের দুরগম চরাঞ্চলের প্রায় দুই হাজার পরিবার। পদ্মা নদীবেষ্টিত ও মূল ভূখন্ড থেকে সম্পূর্ণ ছিন্ন এই দুই উপজেলায় বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোন চার্জ দিতে নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় অন্য ইউনিয়নে।

 

জানা যায়, সাবমেরিন ক্যাবল ছিড়ে যাওয়ার পর থেকে এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের সময় চরাঞ্চলে বসানো সাবমেরিন ক্যাবল ছিঁড়ে যায়। এরপর থেকে এলাকাবাসী বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বহুবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ ও দাবি জানানো হলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী বা বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

 

এদিকে দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তিতে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা অবিলম্বে স্থায়ী সমাধান ও বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

 

এ প্রসঙ্গে দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় শুধু সাধারণ মানুষ নয়, এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দোকানে ফ্রিজ, লাইট কিংবা ফ্যান চালাতে না পারায় তাদের ব্যবসা প্রায় অচল হয়ে গেছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। আশা করি খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে এবং মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।’

 

দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ইউনিয়ন দুটি পদ্মা নদীবেষ্টিত হওয়ায় এখানকার বিদ্যুৎ লাইন রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন। ক্যাবল মেরামত এবং নতুন করে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনে সময় ও বাজেটের প্রয়োজন রয়েছে।’

 

এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে , ক্যাবলটি মেরামতের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম কে মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে বিএনপি’র বিজয় হবে

error: Content is protected !!

দেড় বছর যাবত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সদরপুরের চরাঞ্চলবাসির

আপডেট টাইম : ১০ ঘন্টা আগে
মোঃ নুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার :

মোঃ নুরুল ইসলামঃ

 

বিদ্যুতের অভাবে ফ্রিজ, পাখা, টেলিভিশন সব অকেজো হয়ে পড়ে আছে। মাছ মাংস কিছুই সংরক্ষণ করা যায় না। গরমে ছোট বাচ্চা আর বৃদ্ধদের কষ্ট দেখতেও কষ্ট হয়।’ কথাগুলো বলছিলেন ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের মোজাফফরপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজা মল্লিক। একই গ্রামের আরেক বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ‘দেড় বছর ধরে আমরা অন্ধকারে আছি। রাতে শিশুদের পড়াশোনা করানো যায় না। মোবাইল চার্জ দিতে নদী পাড়ি দিয়ে অন্য ইউনিয়নে যেতে হয়। জীবনটা কষ্টকর হয়ে গেছে।’

 

এমনি করে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বিদ্যুৎবিহীন জীবন যাপন করছে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ও চর নাছিরপুর ইউনিয়নের দুরগম চরাঞ্চলের প্রায় দুই হাজার পরিবার। পদ্মা নদীবেষ্টিত ও মূল ভূখন্ড থেকে সম্পূর্ণ ছিন্ন এই দুই উপজেলায় বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোন চার্জ দিতে নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় অন্য ইউনিয়নে।

 

জানা যায়, সাবমেরিন ক্যাবল ছিড়ে যাওয়ার পর থেকে এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের সময় চরাঞ্চলে বসানো সাবমেরিন ক্যাবল ছিঁড়ে যায়। এরপর থেকে এলাকাবাসী বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বহুবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ ও দাবি জানানো হলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী বা বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

 

এদিকে দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তিতে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা অবিলম্বে স্থায়ী সমাধান ও বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

 

এ প্রসঙ্গে দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় শুধু সাধারণ মানুষ নয়, এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দোকানে ফ্রিজ, লাইট কিংবা ফ্যান চালাতে না পারায় তাদের ব্যবসা প্রায় অচল হয়ে গেছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। আশা করি খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে এবং মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।’

 

দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ইউনিয়ন দুটি পদ্মা নদীবেষ্টিত হওয়ায় এখানকার বিদ্যুৎ লাইন রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন। ক্যাবল মেরামত এবং নতুন করে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনে সময় ও বাজেটের প্রয়োজন রয়েছে।’

 

এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে , ক্যাবলটি মেরামতের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।’


প্রিন্ট