ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (বাবুর্চী) বাসারুল ইসলাম তার বাবুর্চী পরিচয় গোপন করে নিজেকে ল্যান: নায়েক পরিচয় দিয়ে একাধিক বিয়ে করেছেন এবং যৌতুক হিসেবে লক্ষ লক্ষ টাকা গ্রহন করেছেন। তিনি শুধু বিয়ে করেই থেমে থাকেননি, বরং বিবাহ বহির্ভূত একাধিক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে তাঁদের ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগও রয়েছে।
বাসারুল ইসলাম, যিনি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ধাওড়া গ্রামের বকুল খাঁনের ছেলে, বর্তমানে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন ১১ এ বাবুর্চী হিসেবে কর্মরত আছেন। বাবুর্চী পরিচয় ছোট মনে হতে পারে বলে, তিনি নিজেকে ল্যান: নায়েক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাসারুলের ব্যক্তিগত ব্যাচ নং ৫১৩৪।
কুষ্টিয়া, খোকসা, ঝিনাইদহ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে একাধিক বিয়ে করেছেন। প্রতিটি বিয়ের পর, বাসারুল পরিবারকে তার বাড়িতে না এনে বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতেন, যাতে বউদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করা না যায়। তার কয়েকটি বাচ্চাও রয়েছে। বিয়ের পর, তিনি শশুরবাড়ির লোকজনদের কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে লক্ষ লক্ষ টাকা নিতেন এবং পরে সেসব টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতেন।
এছাড়া, বাসারুল মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে তিনি চাকরি দেওয়ার নামে স্থানীয়দের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা এলাকার বাকারুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা চলেছে, যেখানে বাসারুল তার ভাইকে বিজিবিতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন, কিন্তু চাকরি না পাওয়ায় টাকা ফেরত চাওয়ার পর বাসারুল তা ফেরত দেননি।
বাসারুলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা রয়েছে, যেখানে মোংলা এলাকার শ্বশুরবাড়ির লোকজন অভিযোগ করেছে যে, তিনি তাদের কাছ থেকে যৌতুক গ্রহণ করে পালিয়ে গেছেন। মোংলায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং সেখানে তার বাবা-মায়েরও জেল হয়েছে।
এমনকি কুষ্টিয়ার পান্টি এলাকায়ও নতুন করে বিয়ে করেছেন এবং সেখান থেকেও যৌতুক নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তার কারণে মোটামুটি ৫টি পরিবারের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী স্ত্রীদের মধ্যে এক জন জানিয়েছেন, বাসারুল তাদের পূর্ববর্তী বিয়ের কথা গোপন করে তাদের বিয়ে করেছিলেন। তিনি তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। তিনি বলেছেন, “বিজিবি ও পুলিশ কিছুই করছে না, আমি তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।”
এই বিষয়ে বিজিবির চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী বাসারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা গুজব।” তবে বিষয়টি নিয়ে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল এস কে এম কফিল উদ্দিন জানান, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন এবং অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট