ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বর্ণিরচর গ্রামের বাসিন্দা মো. নূরুল ইসলাম আকু (৬৫) একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। বেশ কয়েক বছর আগেই প্যারালাইজড হয়ে পা দুটি অচল হয়ে গেছে। বয়সের ভারে ততটা ভেঙে না পড়লেও পা দুটি অচল হওয়ায় কোন কাজ করতে পারতেন না। আর এজন্য স্বচ্ছল মানুষের কাছে প্রায়শই হাত পাততে হতো। কিন্তু বারবার হাত পাততেও সংকোচবোধ হতো। অবশেষে এক সমাজ সেবকের প্রসারিত সাহায্যের হাত ধরে প্রতিবন্ধী আকু ইসলামের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
আকু ইসলামের এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েটিও প্রতিবন্ধী। ছেলে কৃষিকাজ করে। তবে সে তার স্ত্রী, সন্তান নিয়ে পৃথক। স্ত্রী আর প্রতিবন্ধী মেয়েটাকে নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী নূরুল ইসলাম আকুর সংসার। এতদিন শারীরিক প্রতিবন্ধীকতার কারণে তিনি কোন কাজ করতে পারতেন না।
নিজেও এক স্থান থেকে অন্যত্র চলাচল করতেন ইঞ্জিনচালিত হুইল চেয়ারে। হুইল চেয়ারটি বেশ কয়েক বছর আগেই সুমন রাফি নামের এক যুবক চলাচলের সুবিধার জন্য তৈরি করে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি সেই সুমন রাফিই ইঞ্জিনচালিত হুইল চেয়ারটিকে ব্যাটারি চালিত অটোভ্যানে রূপান্তর করে দিয়েছেন। যাতে যাত্রী টেনে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। অটোভ্যানটি তিনি মহম্মদপুর-বোয়ালমারী সড়কে চালাবেন।
গতকাল দুপুরে এই প্রতিবেদকের কথা হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী নূরুল ইসলাম আকুর সাথে। তিনি বলেন, এতদিন অনিচ্ছা সত্তে¡ও মানুষের কাছে হাত পাততে হতো। একটা অটোভ্যানের ব্যবস্থা হয়েছে। এখন আর কারো কাছে হাত পাতুম না।
এ ব্যাপারে সুমন রাফি বলেন, নূরুল ইসলাম একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। প্রায়শই তাকে আর্থিক সহায়তা করতে হতো। তাই তার ব্যবহৃত হুইল চেয়ারটি অটোভ্যানে রূপান্তর করে দিলাম। এতে যাত্রী টেনে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। সম্মানজনকভাবে উপার্জন করতে পারবেন। বছর খানেক এই অটোভ্যানটি চালাক। এরপরে তাকে একটি চায়ের দোকান করে দেব।
জানতে চাইলে বোয়ালমারী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী হাসান ফিরোজ বলেন, প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমাদের সমাজের স্বচ্ছল লোকেদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। একজন প্রতিবন্ধীর প্রতি সুমন রাফির এ ধরনের মানবিক কাজ খুবই প্রশংসনীয়।
প্রিন্ট