ঢাকা , বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জায়গা পরিদর্শন করলেন ফরিদপুরের ডিসি Logo পাংশায় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির ভাতাভোগীদের এসবিসিসি প্রশিক্ষণ শুরু Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে ছেলের মৃত্যু, আহত মা Logo তানোরে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা Logo বাংলাদেশ কিন্ডার গার্ডেন অ্যাসোসিয়েশনের পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় হুমায়রা তৃতীয় Logo তানোর পৌরসভা দাখিল মাদরাসা সভাপতি মালেককে সংবর্ধনা Logo তিল চাষে আগ্রহ হারিয়েছে আত্রাইয়ের কৃষকরা Logo রাস-আল-খাইমাহ চেম্বার এর চেয়ারম্যান মোঃ আলী আল নুয়াইমির সঙ্গে কনসাল জেনারেলের সাক্ষাৎ Logo নলছিটিতে ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতির নামে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ Logo রূপগঞ্জে সাংবাদিক রিয়াজ হোসেনের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

দেশের একমাত্র লাল তেঁতুল গাছ খোকসার হিজলাবটে !

তেঁতুল দেখে জিহ্বায় পানি আসে না- এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আর সেই তেঁতুলের রঙ যদি হয় লাল, তাহলে অবস্থাটি কী দাঁড়াবে একটু চিন্তা করে দেখেছেন ?কুষ্টিয়ার খোকসায় এমন এক তেঁতুল গাছ আছে যার রঙ লাল। সত্যিই অবাক করার মতোই লাল রঙের তেঁতুল!

তবে এই তেঁতুলের বীজ থেকে অন্য কোথাও চারা হয় না। আর বাংলাদেশে সম্ভবত এমন লাল রঙের তেঁতুল গাছ আর কোথাও নেই। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাট এলাকায় এমন একটি গাছ রয়েছে। তবে সেটির বয়স ৫০০ বছরেরও বেশি বলে জানা যায়।

তবে এই তেঁতুলের রঙ লাল হলেও বাইরের অংশটি অন্য সাধারণ তেঁতুলের মতোই। তবে তা ভাঙলেই লাল টকটকে তেঁতুল। তবে এলাকায় প্রচলিত আছে- এই তেঁতুলের অলৌকিকতা নিয়ে। বিষ্ময়কর এই তেঁতুল নিয়ে স্থানীয়দের জল্পনা কল্পনারও শেষ নেই।

এলাকাবাসীর মতে, গাছটির বয়স ৩০০ বছর কিংবা তারও বেশি। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন তেঁতুল গাছ এটি। যার তেতুঁলের রং টকটকে লাল। এই লাল রঙের তেঁতুল গাছটি দেখলেও অবাক হতে হয়!

বটগাছের মতো বিশালাকার এই তেঁতুলগাছ। আকারে প্রায় ২৫ফুট ব্যাসার্ধ ও লম্বায় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ ফুট। এই গাছের জন্ম কবে তাও কারো জানা নেই। স্থানীয়দের মতে, এই গাছ তিনটির পাশেই রয়েছে নীলকুঠি। ধারণা করা হয়, এই গাছটির বয়স নীলকুঠির চেয়েও বেশি। সেখানে তিনটি গাছ রয়েছে। তার মধ্যে একটি গাছের তেঁতুলের রঙ ভিতরে সাদার বদলে লাল।

এই লাল তেঁতুল গাছ আমাদের দেশে বেশ দুর্লভ। ওই গ্রামের স্থানীয় বয়স্করাও ছোটবেলা থেকেই এই গাছগুলোকে একই রকমের দেখে আসছেন। তাদের মতে, এই গাছগুলোর বয়স ৩০০ বছর বা তারও বেশি। ঝড়ে ভেঙ্গে গিয়ে বড় গাছটি এখন ছোট হয়ে গিয়েছে আগে আরও বড় ছিল।

তাই এলাকাবাসী এই রক্তলাল তেঁতুল গাছের ডাল কাটতে এমনকি পাতা ছিঁড়তেও ভয় পায়। অনিষ্ঠ হয় ভেবে কেউ এই গাছের ডালও কাটে না। তেঁতুল গাছটির সঙ্গে জড়িত রয়েছে একজন মুসলিম পীরের কাহিনী। সেই পীর নাকি এই লাল রঙের তেঁতুল দিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করতেন। শুধু তাই নয় কবিরাজ হিসেবে পানি, তেল পড়া দিয়ে তিনি নাকি বহু মানুষের রোগ নিরাময় করেছিলেন।

সেখানকার আশপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে এই পীরবাবার কথা। শুধু মুসলিম নয়, দূরদূরান্ত থেকে নানা ধর্মের মানুষ আসতে শুরু করেন তার কাছে। পীরবাবার মৃত্যু হলে তেঁতুল গাছের নীচেই তাকে সমাহিত করা হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এরপর থেকে সেই গাছে লাল তেঁতুলের ফলন শুরু হয়।

এরপর থেকে সেখানকার নাম দেওয়া হয় আজগুবি তলা। লাল তেঁতুল খেতেও নাকি চমৎকার। এর টক-মিষ্টি স্বাদ অন্যান্য তেঁতুলের থেকেও শতগুণ ভালো। এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর । ধারণা করা হয়, নদীয়া থেকে সেই পীরের কোনো মুরীদের মাধ্যমেই খোকসার হিজলাবটের লাল তেঁতুলের আগমন ঘটে। এই লাল তেঁতুলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা খুবই ভালো। কারণ খাদ্য ও ওষুধ শিল্পে এই লাল বায়োকালারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণে ও কনফেকশনারিতেও এই লাল রংটি ফুড কালার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

 

বিজ্ঞানীদের দাবি, এর বীজ থেকে তৈরি তেল টেক্সটাইল ও পেইন্ট শিল্পে বেশ কার্যকরী। এই গাছের চাষে বেশি পানিরও প্রয়োজন হয় না। খরা প্রবণ অঞ্চলেও এই লাল তেঁতুল গাছের ভালো ফলন হয়ে থাকে। এদিকে বিজ্ঞানীরা অবশ্য লাল তেঁতুলের অলৌকিকতা মেনে নেননি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জায়গা পরিদর্শন করলেন ফরিদপুরের ডিসি

error: Content is protected !!

দেশের একমাত্র লাল তেঁতুল গাছ খোকসার হিজলাবটে !

আপডেট টাইম : ০৫:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :

তেঁতুল দেখে জিহ্বায় পানি আসে না- এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আর সেই তেঁতুলের রঙ যদি হয় লাল, তাহলে অবস্থাটি কী দাঁড়াবে একটু চিন্তা করে দেখেছেন ?কুষ্টিয়ার খোকসায় এমন এক তেঁতুল গাছ আছে যার রঙ লাল। সত্যিই অবাক করার মতোই লাল রঙের তেঁতুল!

তবে এই তেঁতুলের বীজ থেকে অন্য কোথাও চারা হয় না। আর বাংলাদেশে সম্ভবত এমন লাল রঙের তেঁতুল গাছ আর কোথাও নেই। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাট এলাকায় এমন একটি গাছ রয়েছে। তবে সেটির বয়স ৫০০ বছরেরও বেশি বলে জানা যায়।

তবে এই তেঁতুলের রঙ লাল হলেও বাইরের অংশটি অন্য সাধারণ তেঁতুলের মতোই। তবে তা ভাঙলেই লাল টকটকে তেঁতুল। তবে এলাকায় প্রচলিত আছে- এই তেঁতুলের অলৌকিকতা নিয়ে। বিষ্ময়কর এই তেঁতুল নিয়ে স্থানীয়দের জল্পনা কল্পনারও শেষ নেই।

এলাকাবাসীর মতে, গাছটির বয়স ৩০০ বছর কিংবা তারও বেশি। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন তেঁতুল গাছ এটি। যার তেতুঁলের রং টকটকে লাল। এই লাল রঙের তেঁতুল গাছটি দেখলেও অবাক হতে হয়!

বটগাছের মতো বিশালাকার এই তেঁতুলগাছ। আকারে প্রায় ২৫ফুট ব্যাসার্ধ ও লম্বায় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ ফুট। এই গাছের জন্ম কবে তাও কারো জানা নেই। স্থানীয়দের মতে, এই গাছ তিনটির পাশেই রয়েছে নীলকুঠি। ধারণা করা হয়, এই গাছটির বয়স নীলকুঠির চেয়েও বেশি। সেখানে তিনটি গাছ রয়েছে। তার মধ্যে একটি গাছের তেঁতুলের রঙ ভিতরে সাদার বদলে লাল।

এই লাল তেঁতুল গাছ আমাদের দেশে বেশ দুর্লভ। ওই গ্রামের স্থানীয় বয়স্করাও ছোটবেলা থেকেই এই গাছগুলোকে একই রকমের দেখে আসছেন। তাদের মতে, এই গাছগুলোর বয়স ৩০০ বছর বা তারও বেশি। ঝড়ে ভেঙ্গে গিয়ে বড় গাছটি এখন ছোট হয়ে গিয়েছে আগে আরও বড় ছিল।

তাই এলাকাবাসী এই রক্তলাল তেঁতুল গাছের ডাল কাটতে এমনকি পাতা ছিঁড়তেও ভয় পায়। অনিষ্ঠ হয় ভেবে কেউ এই গাছের ডালও কাটে না। তেঁতুল গাছটির সঙ্গে জড়িত রয়েছে একজন মুসলিম পীরের কাহিনী। সেই পীর নাকি এই লাল রঙের তেঁতুল দিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করতেন। শুধু তাই নয় কবিরাজ হিসেবে পানি, তেল পড়া দিয়ে তিনি নাকি বহু মানুষের রোগ নিরাময় করেছিলেন।

সেখানকার আশপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে এই পীরবাবার কথা। শুধু মুসলিম নয়, দূরদূরান্ত থেকে নানা ধর্মের মানুষ আসতে শুরু করেন তার কাছে। পীরবাবার মৃত্যু হলে তেঁতুল গাছের নীচেই তাকে সমাহিত করা হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এরপর থেকে সেই গাছে লাল তেঁতুলের ফলন শুরু হয়।

এরপর থেকে সেখানকার নাম দেওয়া হয় আজগুবি তলা। লাল তেঁতুল খেতেও নাকি চমৎকার। এর টক-মিষ্টি স্বাদ অন্যান্য তেঁতুলের থেকেও শতগুণ ভালো। এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর । ধারণা করা হয়, নদীয়া থেকে সেই পীরের কোনো মুরীদের মাধ্যমেই খোকসার হিজলাবটের লাল তেঁতুলের আগমন ঘটে। এই লাল তেঁতুলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা খুবই ভালো। কারণ খাদ্য ও ওষুধ শিল্পে এই লাল বায়োকালারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণে ও কনফেকশনারিতেও এই লাল রংটি ফুড কালার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

 

বিজ্ঞানীদের দাবি, এর বীজ থেকে তৈরি তেল টেক্সটাইল ও পেইন্ট শিল্পে বেশ কার্যকরী। এই গাছের চাষে বেশি পানিরও প্রয়োজন হয় না। খরা প্রবণ অঞ্চলেও এই লাল তেঁতুল গাছের ভালো ফলন হয়ে থাকে। এদিকে বিজ্ঞানীরা অবশ্য লাল তেঁতুলের অলৌকিকতা মেনে নেননি।


প্রিন্ট