কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টার অভিযোগ করেছেন তার পৌরসভার ২৩ কাউন্সিলর। তারা মেয়রের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগও করেন।
কুষ্টিয়ার একটি রেস্টুরেন্টে মেয়র আনোয়ার আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন তার পৌরসভার কাউন্সিলরা। এতে ২৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৩ জন উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কাউন্সিলর সাইফ-উল হক মুরাদ বলেন, গত ৩ মাস ধরে আমরা দেখছি মেয়র পৌরসভায় আসেন না। অথচ পৌরসভার গাড়ি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছেলের পক্ষে নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী পুত্র পারভেজ আনোয়ার তনু স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।গত ৩ মাস ধরে আমরা দেখছি মেয়র সাহেব পৌরসভায় আসেন না অথচ পৌরসভার গাড়ি নিয়ে ছেলের নির্বাচনে কাজে বিভিন্ন এলাকায় গেছেন। যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও সোশ্যাল মিডিয়া উঠে এসেছে। আজ আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি মেয়র আনোয়ার আলী তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছে পৌরসভার কর্মচারী ও গাড়ি।
কুষ্টিয়া পৌরসভার সুবিধাভোগী বিভিন্ন বস্তি এলাকা ও পৌরসভা কর্মরত মাস্টার রোলে কর্মচারীদের কর্মচারীদের সাথে নিয়ে কুষ্টিয়া উন্নয়নের বিরুদ্ধে এবং শান্তিপূর্ণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কুষ্টিয়া পৌরবাসী অতিরিক্ত ট্যাক্সের যন্ত্রণা ভোগ করছে। পানির বিল আগের ৫০০ টাকা থাকলেও এখন তিনি প্রতি ইউনিটে ৫০০ টাকা করায় একটি ভবনে কম পক্ষে ৪০০০ টাকা বিল আছে।পৌর ট্যাক্স এখন মাত্রা অতিরিক্ত নিচ্ছে এসব টাকা শিক্ষা খাতে ব্যয় দেখিয়ে তসরুপাত করা হচ্ছে শিক্ষা খাতে কাদের টাকা দেয় কত টাকা দেয় তা কোন পৌর কাউন্সিলর কে জানানো হয় না। পৌর পরিষদ কে উপেক্ষা করে স্বেচ্ছাচারিতার চরম শিখরে অবস্থান করছে মেয়র আনোয়ার আলী।
কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কাউন্সিলররা সোচ্চার হয়েছে পৌরবাসী। স্বজন প্রীতি ও আঞ্চলিকতায় বিশ্বাসী মেয়রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। সারা দেশের অবাধ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে তিনি পৌরসভা কে ব্যবহার করছেন। আন্দোলনের নামে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। আমরা কুষ্টিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর গণ দীর্ঘদিন ধরে তার স্বেচ্ছাচারিতার কথা বললে তিনি এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেন না। তার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার তার কথা বললে কর্মচারী ও কাউন্সিলরদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন।
প্রিয় গণমাধ্যম কর্মীরা, আপনারা জাতির বিবেক আপনাদের মাধ্যমে পৌর মেয়রের স্বেচ্ছাচারিতা দুর্নীতির বিরুদ্ধে গঠনমূলক সংবাদ তুলে ধরবেন সেই প্রত্যাশা করি সবাই। মশার উৎপাত থেকে শুরু করে সমস্যার নানান সমস্যায় জর্জরিত কাউন্সিলররা মেয়রকে বারবার জানালেও কোন ব্যবস্থা নেন না বা কোন কার্যকর ভূমিকা নেন না। আপনারা আপনাদের অনুসন্ধানের দৃষ্টি দিয়ে এবং নিজ নিজ গণ মাধ্যমে কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়রের অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার সংবাদ প্রকাশ করবেন পৌর বাসীর পাশে থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।
ধন্যবাদসহ কুষ্টিয়া পৌরসভার সকল কাউন্সিলরবৃন্দ এ ছাড়া বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দিন, কাউন্সিল আনিস কোরাইশী, কৌশিক আহমেদ সহ অনেকেই। তারা বলেন, প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে আমরা আলোচনা করে মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনব।
প্রিন্ট