সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডগুলোর পেছনে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটিয়ে তারা (বিএনপি-জামায়াত) ভিন্নপথ বেছে নিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।’ সেই সঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটগুলোতে নজরদারি জোরদার করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী যেকোনো দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্য এবং বিএনপি-জামায়াত চক্রের অগ্নিসন্ত্রাসের কথা ভুলে না যেতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের কথা ভুলে যাবেন না। কারণ তাদের অগ্নিসন্ত্রাস অন্য কোনো উপায়ে আছে কি না বা তারা বিভিন্ন উপায়ে তা ঘটিয়েছে কি না, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
এ সময় সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। প্রত্যেককে নিজ উদ্যোগে নিজের স্থাপনা পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর সময় বিনা প্রয়োজনে ভিড়ের অনুমতি দেওয়া যাবে না এবং এ ব্যাপারে কেউ কোনো বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, যখন প্রথম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, তখন ধারণা করা হয়েছিল যে এটি একটি দুর্ঘটনা হবে। কিন্তু প্রথমটির পর একই সময়ে আরও কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সকাল ৬টার পরে। নজরদারি বাড়াতে হবে এবং অন্য মার্কেটগুলোকেও সতর্ক থাকতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, এটি লক্ষণীয় যে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা যখন আসে, তখন তারা কিছু লোকের বাধার সম্মুখীন হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘কেন তারা বাধার সম্মুখীন হবে? সেই সময় আগুন নেভাতে গিয়ে কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে দমকলকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এই লোকগুলো কারা?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কেউ এই চারটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে নিয়ে একটু চিন্তা করলেই তার মনে এই প্রশ্ন আসবে যে এগুলো কী সাধারণ দুর্ঘটনা, নাকি এসব ঘটনার পেছনে কোনো কারসাজি আছে?’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা জানি, কিছু রাজনৈতিক দল ঈদের পর আন্দোলন করতে, অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিতে এবং সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। হ্যাঁ, আপনি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারেন, তবে এই সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের কী দোষ?’
ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ তারা তাদের ব্যবসার জন্য এই মৌসুমের অপেক্ষা করতেন। যারা এসব করেছে তারা সহজে রেহাই পাবে না, আমরা এই বিষয়ে আমাদের নজরদারি বাড়িয়েছি।’ দেশবাসীকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অতীতে বিএনপি-জামায়াত চক্রের ‘অগ্নিসন্ত্রাসের কথা’ স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে তারা সাধারণ মানুষকে পুড়িয়েছে। এখনো তারা অর্থনীতিকে পঙ্গু করার পথ নিয়েছে কি না, আমাদের এই রহস্য বের করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বিএনপি-জামায়াতের ‘অগ্নিসন্ত্রাসের কৌশল’ পরিবর্তনের বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের এটি নজরে রাখতে হবে। কারণ তারা ৩ হাজার ৫০০টিরও বেশি যানবাহন, ২৯টি ট্রেন এবং ৮-৯টি লঞ্চ, ৫০০ স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস এবং ছয়টি ভূমি অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা ৩ হাজারের বেশি লোক আহত ও ৫০০ জনকে হত্যা করেছে।’
কভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে তার সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। -বাসস
প্রিন্ট