ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরা সদর উপজেলার প্রায় সকল ধানের জমিতে পার্চিং নিরাপদ ও সুস্বাস্থ্যকর ধান বৃদ্ধির আশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের

মাগুরার সদর উপজেলায় ধানের জমিতে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের আক্রমণ রোধে জমিতে গাছের ডাল, বাঁশের চটা ও কঞ্চি পুঁতে (পার্চিং পদ্ধতি) নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন জনপ্রিয় হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে চাষীরা। মাগুরা সদর উপজেলার প্রায় শতভাগ জমিতে পার্চিং করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হুমায়ুন কবির। বুধবার ১৫ মার্চ মাগুরা সদর উপজেলার পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে জমিতে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার দেখা যায়। এর মধ্যে মঘী, জগদল, কুচিয়ামোড়া, বেরইল পলিতা, আঠারখাদা, হাজীপুর, রাঘবদাইড়, হাজরাপুর, বগিয়া, কছুন্দী, চাউলিয়া, শত্রুজিৎপুর, গোপালগ্রাম, কাশিনাথপুর, আবালপুর এলাকায় প্রতি বিঘা জমিতে পাখি বসার জন্য ৫ থেকে ৭টি গাছের ডাল বা বাঁশের কঞ্চি পুঁতেছে কৃষকেরা।
যেখানেই ধানের গাছ, সেখানেই গাছের ডাল স্লোগানকে সামনে রেখে গত বুধবার ১ মার্চ মঘী ইউনিয়নের মঘীর মাঠে বিভিন্ন জমিতে পার্চিং পদ্ধতির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। পরে সদর উপজেলার কৃষি দপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ১৩ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের সহায়তায় পার্চিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। জগদল ও মঘী ইউনিয়নের কৃষক জহুর বিশ্বাস ও বাচ্চু বলেন, আমরা পাখি বসার জন্য প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৭ টি গাছের ডাল পুঁতেছি, যাতে সেখানে পাখিরা বসে ও ধানখেতের ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলে।
হাজীপুর ইউনিয়নের কৃষক টিপু সুলতান এবার ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে। মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ৫ বিঘা জমিতেই গাছের ডাল পুঁতে দিয়েছে। মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, ধান চাষে পার্চিং পদ্ধতিতে কৃষকরা বেশ সাড়া দিচ্ছে। এভাবে পার্চিং পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষাবাদ করলে ধানের ফলন বেশি হবে বলে আশা করা যায়। তিনি আরও বলেন এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করতে আমাদের দপ্তর থেকে কৃষক সভা, মাইকিং, বিভিন্ন জনসমাগম স্থলে গিয়ে পার্চিং বিষয়ে পরামর্শদান সহ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মাগুরা সদর উপজেলার প্রায় শতভাগ জমিতে পার্চিং করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মাগুরা সদর উপজেলার নিবাহী অফিসার তারিফ উল হাসান জানান সরকারের নির্দেশনা এবং জেলা প্রশাসক মাগুরা মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ এর তত্ত্বাবধানে মাগুরা সদর উপজেলায় শতভাগ পার্চিং কাযক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই পার্চিং পদ্ধতির জন্য ২০-২৫% বোরো ধান বৃদ্ধি পাবে এবং সেই সাথে কৃষকদের কীটনাশক ব্যয় অনেক কমে যাবে। এর ফলে মাগুরা সদর উপজেলাবাসী মানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য সংগ্রহ করতে পারবে।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি উপপরিচালক কৃষিবিদ সুফি মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন পার্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে পাখি বসার কারণে জমিতে কীটনাশক ঔষধ ব্যবহার কম হয় এবং ফসলের জমিতে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন ইতিমধ্যে মাগুরা জেলার প্রায় ৮০ ভাগ ধানের জমিতে পার্চিং পদ্ধতিতে পাখি বসার জন্য ডালের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

মাগুরা সদর উপজেলার প্রায় সকল ধানের জমিতে পার্চিং নিরাপদ ও সুস্বাস্থ্যকর ধান বৃদ্ধির আশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের

আপডেট টাইম : ০৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
ফারুক আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা :
মাগুরার সদর উপজেলায় ধানের জমিতে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের আক্রমণ রোধে জমিতে গাছের ডাল, বাঁশের চটা ও কঞ্চি পুঁতে (পার্চিং পদ্ধতি) নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন জনপ্রিয় হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে চাষীরা। মাগুরা সদর উপজেলার প্রায় শতভাগ জমিতে পার্চিং করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হুমায়ুন কবির। বুধবার ১৫ মার্চ মাগুরা সদর উপজেলার পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে জমিতে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার দেখা যায়। এর মধ্যে মঘী, জগদল, কুচিয়ামোড়া, বেরইল পলিতা, আঠারখাদা, হাজীপুর, রাঘবদাইড়, হাজরাপুর, বগিয়া, কছুন্দী, চাউলিয়া, শত্রুজিৎপুর, গোপালগ্রাম, কাশিনাথপুর, আবালপুর এলাকায় প্রতি বিঘা জমিতে পাখি বসার জন্য ৫ থেকে ৭টি গাছের ডাল বা বাঁশের কঞ্চি পুঁতেছে কৃষকেরা।
যেখানেই ধানের গাছ, সেখানেই গাছের ডাল স্লোগানকে সামনে রেখে গত বুধবার ১ মার্চ মঘী ইউনিয়নের মঘীর মাঠে বিভিন্ন জমিতে পার্চিং পদ্ধতির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। পরে সদর উপজেলার কৃষি দপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ১৩ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের সহায়তায় পার্চিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। জগদল ও মঘী ইউনিয়নের কৃষক জহুর বিশ্বাস ও বাচ্চু বলেন, আমরা পাখি বসার জন্য প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৭ টি গাছের ডাল পুঁতেছি, যাতে সেখানে পাখিরা বসে ও ধানখেতের ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলে।
হাজীপুর ইউনিয়নের কৃষক টিপু সুলতান এবার ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে। মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ৫ বিঘা জমিতেই গাছের ডাল পুঁতে দিয়েছে। মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, ধান চাষে পার্চিং পদ্ধতিতে কৃষকরা বেশ সাড়া দিচ্ছে। এভাবে পার্চিং পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষাবাদ করলে ধানের ফলন বেশি হবে বলে আশা করা যায়। তিনি আরও বলেন এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করতে আমাদের দপ্তর থেকে কৃষক সভা, মাইকিং, বিভিন্ন জনসমাগম স্থলে গিয়ে পার্চিং বিষয়ে পরামর্শদান সহ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মাগুরা সদর উপজেলার প্রায় শতভাগ জমিতে পার্চিং করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মাগুরা সদর উপজেলার নিবাহী অফিসার তারিফ উল হাসান জানান সরকারের নির্দেশনা এবং জেলা প্রশাসক মাগুরা মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ এর তত্ত্বাবধানে মাগুরা সদর উপজেলায় শতভাগ পার্চিং কাযক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই পার্চিং পদ্ধতির জন্য ২০-২৫% বোরো ধান বৃদ্ধি পাবে এবং সেই সাথে কৃষকদের কীটনাশক ব্যয় অনেক কমে যাবে। এর ফলে মাগুরা সদর উপজেলাবাসী মানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য সংগ্রহ করতে পারবে।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি উপপরিচালক কৃষিবিদ সুফি মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন পার্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে পাখি বসার কারণে জমিতে কীটনাশক ঔষধ ব্যবহার কম হয় এবং ফসলের জমিতে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন ইতিমধ্যে মাগুরা জেলার প্রায় ৮০ ভাগ ধানের জমিতে পার্চিং পদ্ধতিতে পাখি বসার জন্য ডালের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রিন্ট