দেশের মহাসড়কগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সমন্বিত ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা ও ঘটনা শনাক্তকরণ সিস্টেম (আইটিআমআইডিএস) প্রবর্তন করার পরিকল্পনা করছে। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা একথা জানান।
সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের (আরএইচডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যানবাহনের গতিসীমা ও ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন শনাক্তকরণ এবং যান-চলাচল বিশ্লেষণে এই আইটিএমআইডিএস গ্রহণ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু মহাসড়ক করিডোর পরীক্ষামূলক প্রকল্পে সার্বক্ষণিক তদারকি অনুসরণ করা হবে।
আইটিএমআইডিএস সিসিটিভি, ভিডিও, অডিও ফিডস এবং স্বয়ংক্রিয় নাম্বার প্লেট শনাক্তকরণ (এএনপিআর) প্রযুক্তির পাশাপাশি ন্যাশনাল হাইওয়ে সেইফ করিডোর ডেমোন্সট্রেশন প্রজেক্ট সাইটসের সাথে কাজ করবে।
সরকার বহু-খাত প্রকল্পের আওতায় এ আইটিএমআইডিএস প্রবর্তন করতে যাচ্ছে। আরএইচডির মতো বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প, স্বাস্থ্য অধিদফতর (জিডিএইচএস), বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮০ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৩৫৭ দশমিক ৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর বাকি ১২২ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আসবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে।
ড. মামুন বাসস-এর সাথে আলাপকালে বলেন, প্রকল্পটি এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি আরো জানান, বিশ্বব্যাংক কয়েকটি উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়ক ও জেলা সড়কের নিরাপত্তা উন্নয়ন এবং সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা হ্রাসে ইতোমধ্যেই ৩৫৭ দশমিক ৯১ মিলিয়ন আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এই সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প বাংলাদেশকে ২০৩০ সাল নাগাদ সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সক্ষমতা তৈরি এবং সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন।
মামুন আরো বলেন, এই প্রকল্পে চারটি অংশ রয়েছে- বহু-খাত বিশিষ্ট সড়ক নিরাপত্তা পাইলট প্রকল্প, অগ্রাধিকারভিত্তিক সড়ক নিরাপত্তা বিনিয়োগ, কারিগরি সহায়তা ও আকস্মিক জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা।
|
এই বহু-খাত বিশিষ্ট সড়ক নিরাপত্তা পাইলট প্রকল্পের আওতায় সড়ক নিরাপত্তা পাইলট প্রকল্পগুলো উচ্চ-ঝুঁকি হ্রাস ও নেটওয়ার্কের উচ্চ-দৃশ্যমান অংশের ওপর প্রকল্প বাস্তবায়নকালে সড়কে মৃত্যু হার কমাতে বহু-খাত ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা প্রদর্শনের লক্ষ্য পূরণ সামনে রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিভিন্ন সড়ক সংস্থা (আরএইচডি, এলজিইডি, জেলা প্রতিনিধি), হাইওয়ে ও মেট্রোপলিটন পুলিশ, বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা ও সিভিল সোসাইটির মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
এই পদক্ষেপগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নকালে সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পরিবর্তন নিরূপণের লক্ষ্যে স্বাধীনভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে সংশ্লিষ্ট সকলের বৃহত্তর সমন্বয়ের মাধ্যমে এগুলো আরো ব্যাপক এলাকায় এবং পরবর্তীতে সারা দেশে চালু করা যায়।এই পদক্ষেপগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে দুর্যোগ-ভিত্তিক দুর্ঘটনা হ্রাস করতে সক্ষম হবে। উন্নত ব্যবস্থা/সুবিধার পাশাপাশি এই অবকাঠামো উন্নয়ন তখন পাইলট প্রকল্পটিকে আরো করিডোর, পল্লী এলাকা ও জেলাগুলোতে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে।
সূত্র : বাসস
প্রিন্ট