ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বাবার বেঁচে দেয়া জমি সন্তানেরা অবৈধভাবে আবার দখল করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুনরায় বেদখলের এক পর্যায়ে বাধা পেয়ে জমির মালিকের স্ত্রীকে জীবন নাশের হুমকি দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে ক্ষিপ্ত দখলকারীদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের জয়পাশা মধ্যপাড়া গ্রামের সৈয়দ আজগর আলী ও সৈয়দ আকবর আলীর বাবা সৈয়দ আব্দুল আলী ১৯৭৫ সালে জয়পাশা মৌজার ৬৩ নং খতিয়ানের ২২৩৮ দাগের ৭ শতাংশ, ১৮৬ নং খতিয়ানের ২২৩২ দাগের ১২ শতাংশ এবং ৬৩৮/৬২ নং খতিয়ানের ২৭১৭/২৭১৮ দাগের ৯ শতাংশ মোট ২৮ শতাংশ জমি মো. ওহাব ঠাকুরের নিকট থেকে ক্রয় করেন।
কিন্তু চাকরিজনিত কারণে সৈয়দ আব্দুল আলীর ছেলেরা বাড়িতে না থাকায় ২০০৭ সালে ওহাব ঠাকুরের ছেলে ও ভাতিজারা ওই জমি জবরদখলের চেষ্টা করে। সে সময় ওহাব ঠাকুরের ছেলে মো. মিন্টু ঠাকুর, মো. মন্টু ঠাকুর, মো. জুয়েল ঠাকুর, মো. আসাদ ঠাকুর এবং ওহাব ঠাকুরের ভাতিজা সহিদ ঠাকুর ৯ শতাংশ জমি জোর করে দখলে নিয়ে আধা পাকা ঘর তোলে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
সৈয়দ আব্দুল আলীর ছেলে সৈয়দ আজগর আলী আনসার কমাণ্ডার। তিনি নরসিংদীতে কর্মরত। অপর ছেলে সৈয়দ আকবর আলী জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা গ্রামের দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। আজগর আলীর স্ত্রী মোসান্মাৎ রেহেনা বেগম তার ৯ বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে এবং ৫ বছর বয়সী এক মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বাড়িতে বয়স্ক কোন পুরুষ সদস্য না থাকায় দখলদার মিন্টু ঠাকুর গংরা আজগর আলীর ঘরের চালে রাতের বেলায় ঢিল ছুঁড়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এছাড়া তার স্ত্রী রেহেনা বেগমকে জীবননাশের হুমকিও দেন বলে আজগর আলী অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, ওহাব ঠাকুরের নিকট থেকে ২২৩৮ দাগের সৈয়দ আজগর আলীর পিতার ক্রয়কৃত ৭ শতাংশ জমির মধ্যে মিন্টু ঠাকুর গংরা ৫ শতাংশ জমি আগেই দখল করে আধা পাকা ঘর তুলে আছে। বাকি ২ শতাংশও দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। ২২৩২ দাগ থেকে ওহাব ঠাকুরের নিকট থেকে ক্রয়কৃত ১২ শতাংশের মধ্যে ৪ শতাংশ জমি মিন্টু ঠাকুর গংরা জোরপূর্বক বেদখলে রেখেছেন।
এছাড়া ২৭১৭/২৭১৮ দাগের ওহাব ঠাকুরের নিকট থেকে ক্রয়কৃত ৯ শতাংশ জমির উপর লাগানো মূল্যবান গাছ মিন্টু ঠাকুর গংরা কেটে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ।
|
এ বিষয়ে থানায় একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জমা দিলেও কোন সুরাহা হয়নি।
ভুক্তভোগী সৈয়দ আজগর আলী বলেন, মিন্টু ঠাকুর গংরা ২০০৪ সালে ফরিদপুর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই জমির বিষয়ে মামলা করেন। মামলা নং ১০১/২০০৪। ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর ওই মামলার রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে বাদি মিন্টু ঠাকুর হেরে যায়। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট আপিল করলে আপিলেও হেরে যান মিন্টু ঠাকুর গংরা।
প্রিন্ট