কাঁচা রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ১০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের।
এ সমস্যা নিত্তদিনের। মহম্মদপুর সদর ইউনিয়নের বঙ্গেশ^র গ্রামের মোজাম মোল্যার মোড় থেকে দীঘা ইউনিয়নের চিত্তবিশ্রাম জোড়া ব্রিজ পর্যন্তু তিন কিলোমিটার এই কাঁচা রাস্তার বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিনের।
ইটের সলিং দেয়া থাকলেও তা দীর্ঘদিন আগে হওয়ায় ভেঙ্গেচুরে হাজারো খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে শুষ্ক মৌসুমে বালুকাময় এবং বর্ষাকালে কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। পায়ে হেঁটে যাওয়া দূস্কর ওই রাস্তা দিয়ে। মহম্মদপুর সদর ইউনিয়নের ৪ গ্রাম এবং দীঘা ইউনিয়নের ৬ গ্রামের মানুষের উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগের এই একমাত্র রাস্তাটি পাকাকরণে এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি থাকলেও স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনাতায় সারা বছর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের।
আজ বুধবার সকালে সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমে ধূলোময় হয়ে খানাখন্দে ভরা এই রাস্তাটি চলাচলে যেমন দূর্ভোগ তেমনই বর্ষাকালেও বৃষ্টির পানি জমে রাস্তাটি কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। ফলে কোমলমতি শিশুদের স্কুলে আসতে এবং বাড়ি ফিরতে অনেক কষ্টো হয়।
বৃষ্টি নামলে এখানের স্কুলটির ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কমে যায়। তাছাড়া রাস্তাটি ভেঙ্গেচুরে যানবাহন চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য ঘরে তুলতে এবং বাজারজাত করতে অনেক অসুভিধায় পড়তে হয়। গুরুতর অসুস্থ্য কাউকে উপজেলা বা জেলা সদরে নিতে বেকাদায় পড়তে হয় বলেও অভিযোগ করেন অনেকে।
মহম্মদপুর সদর ইউনিয়নের বঙ্গেশ^র, রায়পুর, পোয়াইল, কাশিপুর এবং দীঘা ইউনিয়নের চিত্তবিশ্রাম, সিন্ধাইন, দীঘা, বিলঝলমল, খাদুনা ও নাগড়িপাড়া গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি দুই যুগের বেশী সময় সংস্কার বা পাকাকরণ না হওয়ায় চরম ভোগান্তি তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। কারন, নানা কাজে তাদের উপজেলা সদরের সাথে এ রাস্তাটির মাধ্যমেই যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়।
সম্প্রতি স্থানীয় যুব সমাজর উদ্যোগে কিছুকিছু জায়গায় ইট বালু দিয়ে মেরামত করার পর সাময়িকভাবে ভোগোন্তি কমলে গত দুই দিনের বৃষ্টিতে কাঁদা-পানিতে সড়কটি ফের যোগাযোগের অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে।
চিত্তবিশ্রাম গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, এই কাচা রাস্তা দিয়ে আমাদের মাঠের ফসল ঘরে আনতে জীবন শেষ হয়ে যায়। উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে খরচ অনেক বেশী হয়।
ভ্যান নছিমন আসতে চাই না। অনেক সময় ভ্যান বা নছিমন উল্টে কৃষিপণ্যের অনেক ক্ষতি হয়। তিনি হাফ ছেড়ে আরো বলেন, এই কাঁচা রাস্তাটি পাকা হলে আমরা বাঁচতাম। একই গ্রামের বাজারের পল্লী চিকিৎসক জাকারিয়া বলেন, খানাখন্দে ভরা এই সড়কটি চলাচল করতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। চিত্তবিশ্রাম বাজারের পাশে প্রায় প্রতিদিন মানুষকে দূর্ঘটনায় পড়তে হয়। মাঝে মধ্যেই ঘটে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনা।
এছাড়াও কোনো ব্যক্তি অসুস্থ্য হলে তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায় । রায়পুর সহকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন বলেন, এই এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, গোস্তান, ঈদগাহ ও এতিমখানাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। শুকনো মৌসুমে ধূলাবালি ও খানা-খন্দ এবং বর্ষা মৌসুমে কাদা পানিতে পরিনত হয় এই রাস্তাটি।
ফলে এলাকার মানুষের দূর্ভেগের সীমা থাকেনা। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষার্থী ও পথচারীদের চলাচলে সারা বছরই দূর্ভোগ পোহাতে হয়। রাস্তাটি পাকাকরণ হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কাজ শুরু করা হবে।
প্রিন্ট