২৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) রাতে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের পাবনা কার্যালয়ে আন্দোলনের সদস্যদের উপর আকস্মিক হামলা চালিয়েছে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী।
এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন হেযবুত তওহীদের একজন কর্মী, আহত হন আরো দশজন। রাত সাড়ে আটটার সময় হামলার ঘটনা ঘটে। এই বর্বোরচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ ২৭ শে আগস্ট শনিবার ফরিদপুর জেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে ফরিদপুর জেলা হেযবুত তওহীদ। এতে মূল বক্তব্য দেন বরিশাল বিভাগীয় হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো: আল আমিন সবুজ। এতে সভাপতিত্ব করেন এবং গরুত্বপূর্ন বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর জেলা সভাপতি মাহবুবুল আলম নিক্কন । আরো বক্তব্য দেন ফদিরপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারন সম্পাদক মো: রেজাউল করিম, জেলা নারী সম্পাদক সুস্মিতা জামান , জেলা কমিটির সদস্য মাহিদুল ইসলাম মৃদুল, মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ। তারা নেক্করজনক এ হামলায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতারের জোর দাবি জানান।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদ উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ফরিদপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মাহবুবুল আলম নিক্কন ঘটনার বিবরন উল্লেখ্য করে বলেন, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে পাবনা শহরের ভাটামোড় এলাকায় অবস্থিত জেলা কার্যালয়ে জেলা সভাপতি সেলিম শেখ আন্দোলনের ১৫/১৬ জন সদস্যকে নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করছিলেন। হঠাৎ করে ‘হেযবুত তওহীদের আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ এই শ্লোগান দিতে দিতে কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে একদল সশস্ত্র হামলাকারী। তাদের হাতে ছিল ধারালো চাপাতি, হাঁসুয়া, রাম দা, লাঠিসোটা, জিআই পাইপ, লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। কোনো কথা না বলে তারা বৈঠকে উপস্থিত সবার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে থাকে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দশজন সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হন যাদের একজন পরবর্তীতে মারা যান। রাতেই দুজনকে জরুরি চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মো. সুজন (৩৩) রাত আড়াইটায় মারা যান এবং গুরুতর আহত আমিনুল ইসলাম (২৭) সেখানে আইসিইউ-তে রয়েছেন, যার অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আলামিন শেখ (২৭) ও সেলিম শেখ (৪১)সহ অন্য ছয়জন।
হেযবুত তওহীদের পাবনা জেলা কার্যালয়ে প্রবেশকারী হামলাকারীদের সংখ্যা প্রায় ৪০/৫০ জনের মত ছিল। তবে কার্যালয়ের বাইরেও আরো অনেক সন্ত্রাসী অবস্থান করছিল। হেযবুত তওহীদের সদস্যরা তৎক্ষণাৎ পাবনা সদর থানায় ফোন করে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পৌঁছাতে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা লেগে যায়। পুলিশ পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। জেলা সভাপতি সেলিম শেখ বাদি হয়ে চিহ্নিত ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে রাতেই মামলা দায়ের করেন। ঘরটনার পর এ পর্যন্ত পুলিশ সাতজন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে এবং অন্যদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মানববন্ধনে হেযবুত তওহীদের বরিশাল বিভাগীয় সভাপতি মো: আল আমিন সবুজ বলেন, ‘হেযবুত তওহীদ যেহেতু জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে সোচ্চার, তাই বেশ কিছুদিন থেকেই আমরা উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের একটি হামলার ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েছিলাম। তারা বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন থেকে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল এবং অপপ্রচারমূলক মিথ্যা বক্তব্যসংবলিত হ্যান্ডবিল এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছিল। এর প্রেক্ষিতে গত মাসেই আমরা পাবনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। সাধারণ ডায়েরি নং-৩৯৭, তারিখ: ০৬/০৭/২০২২। প্রশাসন সাধারণ ডায়েরিটিকে আমলে নিয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। নিলে আজকের এই ঘটনা ঘটত না।
তিনি এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আরো বলেন, ‘যারা এ হামলা চালিয়েছে এবং যারা পেছন থেকে ইন্ধন যুগিয়েছে তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিচয় যাই হোক না কেন তারা সন্ত্রাসী। কাজেই তাদেরকে বিচারের মুখোমুখী করতে হবে।’
প্রিন্ট