ফরিদপুরের বিভিন্ন সড়কের উপর চলছে অবাধে মৌসুমি ফসল শুকানোর কাজ। যার ফলে একদিকে যেমন রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে সড়ক দূর্ঘটনার আশঙ্কা।
জমি থেকে বিভিন্ন ধরনের ফসল কেটে এনে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে সড়কের পাঁশে । পরে সেই ফসল সড়কের একটা জায়গা দখলে নিয়ে মাড়াই মেশিন বসিয়ে দিব্বি চলছে মাড়াইয়ের কাজ। আর এ অবস্থায় সড়কের অর্ধেক অংশে বিভিন্ন ধরণের ফসল শুকানো ছাড়াও ফসলের অবশিষ্ট অংশ সড়কের উপরেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে রোদে শুকানো হচ্ছে।
এতে সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। যানবাহনের মধ্যে প্রতিনিয়ত অটোভ্যান, সিএনজি, মোটরবাইক, রিক্সা-ভ্যান এবং ইজিবাইক বেশি চোখে পড়ে। এসব গাড়ী চালকেরা সর্বক্ষণ দুর্ঘটনার আতঙ্কের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে।
শুধু কি তাই কোনো কোন পাকা সড়কে গম, ভুট্টা, মুসুরি, কলায় মাড়াইয়ের কাজের চিত্র চোখে পড়ে। পাকা সড়কে যানবাহন চলাচলে চরম অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং দুর্ঘটনার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও এই বেআইনি কাজ জেনে বুঝে তারা কাজ করে যাচ্ছে ।
পাকা সড়কে ফসল শুকানসহ বিভিন্ন কাজ করতে আসা ( নাম প্রকাশ না করার শর্তে) এক ব্যক্তি জানান, এই মৌসুমে বাড়ীতে কাঁচা মাটিতে গম-গমের খড় শুকাতে বেশি সময় লাগে। তা ছাড়া যেকেন সময় বৃষ্টি বাদল, ঝড়ে ক্ষতিও হয়। তাই তারা অত্যন্ত নিরাপদ এবং দ্রুত শুকানোর স্বার্থেই পাকা সড়কে ধান এবং খড় শুকিয়ে থাকেন।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার টাবনি ইউনিয়নের ইউনুস মোল্লা নামে এক পথচারী বলেন, এরা নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করে সড়ক বন্ধ করে সড়কের উপর ধান, গম, কালোই, মুসুরিসহ ডাটা শুকাচ্ছে স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীরা।
তিনি আরো বলেন, সড়ক গুলো দেখলে মনে হয় চলাচলের জন্য সড়ক নয় এ যেন ধান ও খড় শুকানো ব্যক্তিদের পৈত্রিক সম্পত্তি।
অপরদিকে সিএনজি চালক ইসলাম বলেন, এসব ফসল শুকানোর জন্য একদিন আগে থেকেই সড়কের দু-ধারে বড় বড় করে ফসলের পালা দিয়ে সড়ক দখল করে রাখা হয়। এতে সড়কের প্রশস্ততা কমে সরু হয়ে যাওয়ায় পাশাপাশি দুটি গাড়ি চলাচলের সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ইমরানই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তবে…
সরেজমিনে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় যানবাহনগুলো দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কৃষক-কৃষাণীসহ কৃষক পরিবারের ছোট- ছোট শিশু বাচ্চারা। আবার রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে অনেক স্থানে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও অটোভ্যান ও রিকশা দুর্ঘটনা নিত্যদিনের স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেকেরই হাত-পা কেটে গেছে ও ভেঙে গেছে বলে জানান তারা।
এব্যাপারে ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হযরত আলী বলেন, রাস্তার উপর মৌসুমি ফসল শুকানোর ফলে অহরহ দূর্ঘটনা ঘটছে। এতে মারাও যাচ্ছে মানুষ। তবে এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি করা উচিত।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপক কুমার রায় বলেন, এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।