বাড়ীর দ্বোতলার ছাদে রংয়ের কাজ করছিল শ্রমিক নইম (২৫) ও তুষার (২২)। ওই ছাদেরই কিছু দুরেই ছিল ৩৩ হাজার ভোল্টেজ বিদুৎ সরবরাহ লাইন। অসাবধানতাবশত কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ ওই বিদুৎতের তারের ভোল্টেজে টেনে নেয় দু’জনকে। ঝুলতে থাকে বিদুৎতের তারে। এ সময় তাদের আর্তচিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে বাঁশ খুটি দিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। এরিমধ্যে ঘটনাস্থলেই নইম নিহত ও অপরজন আহত হয়।
হৃদয় বিদারক এমন ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়া নদীপাড়া এলাকায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ হাসপাতালে পাঠায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানাতে নিয়ে আসে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানায়, আড়পাড়া নদীপাড়ার আনিচুর রহমানের বাড়ীর দ্বোতলাতে রংয়ের কাজ করছিল দুই রংমিস্ত্রি শ্রমিক। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে হঠাৎ তাদের আর্তচিৎকারে এগিয়ে এসে দেখেন দুইজন শ্রমিক বিদ্যুতের তারে ঝুলছে। এ সময় তারা বাঁশ খুটি দিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করলেও ঘটনাস্থলেই নইম মারা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সুমাইয়া আফরিন জানান, নইমকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। আর আহত তুষারের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। নিহত নইম উপজেলার কাদিরকোল গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র। আহত তুষারের বাড়ীও একই গ্রামে। পেশায় তারা দু’জনেই রংমিস্ত্রি শ্রমিক বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস আগেও একই এলাকায় ৩৩ হাজার হাই ভোল্টেজ তারে আরো একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। কালীগঞ্জ আবাসিক প্রকৌশলী মতিয়ার রহমান জানায়, তাদের বিদুৎতের ওই লাইনটি ৩৩ হাজার হাই ভোল্টেজ। তার থেকে ১০ ফুট দুরের মানুষকে আকর্ষণ করতে পারে। এটি ঝিনাইদহ সাব ষ্টেশন থেকে কালীগঞ্জের জন্য ব্যাবহৃত বিদুৎ আনা হয়। এসব লাইনের নিচে দ্বোতলা ভবন করা যাবেনা মর্মে নির্দ্দেশনা দিয়ে একাধিকবার শহরে মাইকিং করাও হয়েছে। কিন্তু তারপরও অসাবধানতাবশত দূর্ঘটনায় এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান।
কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মতলেবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ীর মালিককে জিঞ্জাসাবাদ সহ লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় থানাতে একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রিন্ট