চাটমোহরে উৎপাদিত ফসল গুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে রসুন।বিগত বছরগুলতে বেশি লাভ হওয়ায় রসুন চাষে ঝুঁকে পরে চাটমোহরের অনেক চাষী। ফলে এ এলাকায় ব্যাপক রসুন উৎপাদন হওয়ায় শত শত মানুষ রসুনের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন।
কিন্তু চলতি বছরে চায়না রসুন আমদানী করার প্রভাবে দেশী রসুনের ব্যাপক দর পতন হয়। প্রায় গত ৬ মাস যাবত কমছে রসুনের দাম। দাম কমে যাওয়ায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। ব্যাপক লোকসান হচ্ছে তাদের। পাশাপাশি লোকসান গুনতে গুনতে হতাশ হয়ে পরেছেন রসুন ব্যবসায়ীরা।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে চাটমোহরে ৬,২০০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছিল ৭.৮ মেট্রিক টন। সে হিসেবে চাটমোহরে গত মৌসুমে ৪৮,৩৬০ মেট্রিক টন রসুন উৎপাদন হয়।চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ও অমৃতকুন্ডা হাটে বেশি রসুন ক্রয় বিক্রয় হয়।
রসুন ব্যবসায়ী ছাইকোলা গ্রামের আব্দুল কাদের জানান, “চৈত্র বৈশাখ মাসে, রসুনের ভর মৌসুমে বড় আকারের রসুন ২ হাজার টাকা মন এবং ছোট আকারের রসুন ১ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমান সময়ে বড় আকারের রসুন ৯ শ টাকা মন এবং ছোট আকারের রসুন ৭০০ টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। আমরা যে দামে রসুন কিনছি বিক্রি করার সময় তার চেয়ে কম দাম পাচ্ছি। হাটে প্রচুর পরিমানে রসুন উঠছে। দেশে চায়না রসুন আমদানী করা হচ্ছে। এর ফলে এ এলাকার কৃষক রসুনের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের ও লোকসান যাচ্ছে। এ বছর এখন পর্যন্ত আমার অন্তত দশ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
ছাইকোলা গ্রামের রসুন ব্যবসায়ী জাইদুল ইসলাম জানান, বিদেশ থেকে রসুন আমদানী করা হচ্ছে। এর ফলে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে রসুন চাষীরা। ব্যবসায়ীরা ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী হাজার হাজার মন রসুন কিনে রেখেছেন। রসুনের ব্যাপক দাম কমে যাওয়ার ফলে চাটমোহরের শত শত রসুন ব্যবসায়ী এখন লোকসানে রয়েছেন। অনেকে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। ঋণের টাকা পরিশোধ করা তাদের জন্য খুব কষ্টকর হয়ে পরবে। এ বছর ১,৫০০ মন রসুন কিনে রেখেছিলেন তিনি। পরে লোকসানে বিক্রি করে দেন। এখন ও হাটে রসুন কেনা বেঁচা করেন। সব মিলিয়ে এ বছর রসুনের ব্যবসায় তার প্রায় ১২ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
নিমাইচড়া ইউনিয়নের করকোলা গ্রামের রসুন ব্যবসায়ী মনসুর রহমান বাবু জানান, যারা ভর মৌসুমে রসুন কিনে রেখেছিলেন তাদের মন প্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। ১,২০০ মন রসুন কিনে তার লোকসান হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা।
বিদেশ থেকে রসুন আমদানি বন্ধ হলে এবং রসুনের বাজার দর বৃদ্ধি পেলে লোকসান কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন চাটমোহরের রসুন ব্যাবসায়ীরা।
প্রিন্ট