ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫ Logo ফরিদপুরে আ.লীগের ব্যানারে মিছিল দেওয়ার প্রস্তুতিকালে বিএনপি নেতার ছেলেসহ আটক ৮ Logo বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন Logo শ্রমিকদল নেতাদের সহযোগীতায় জোরপূর্বক জমি দখলে শসস্ত্র হামলা Logo ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্সদের একদফা দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত Logo ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা Logo আলফাডাঙ্গায় শিক্ষকদের সংবর্ধনা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক Logo মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ Logo ভূরুঙ্গামারীতে নাশকতা বিরোধী বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা না মানার অভিযোগ

কুষ্টিয়ায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়যোগ্য টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) র নির্দেশনা মানছেন না কেউ। এমন অভিযোগ জেলার শীর্ষস্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল থেকে।

সূত্রমতে, করোনা সংক্রমনের কারণে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসময়ে অভিভাবকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় বিধিমতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুধুমাত্র টিউশন ফি’ই আদায় করতে পারবেন মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন খাতে  কোনও ফি নেওয়া যাবে না, কোনোও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে থাকলেও আদায় করা ওই টাকা শিক্ষার্থীদের  ফেরত দিতে বা পরবর্তী সময়ের টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করে নিতে হবে।

কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ার বাসিন্দা খন্দকার রুমেল হোসেন নামে এক অভিভাবক  অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিই সরকারি নির্দেশনা মানছে না। সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে আমার মেয়ের টিউশন ফি দিতে গিয়ে রীতিমতো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিলো। গত বছরের এপ্রিল থেকে শুরু করে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১৭ মাস বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও টিউশন ফির সঙ্গে কম্পিউটার ল্যাব খাতে শিক্ষার্থী প্রতি ২০ টাকা করে আদায় করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’

একইভাবে অভিন্ন অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও।
কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রভাতী ও দিবা শাখায় মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা যথাক্রমের ২৩৫৯ জন এবং ২২৭৪ জন শিক্ষর্থীসহ মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ হাজার ৬শ ৩৩ জন। এদের মধ্যে (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত) মোট ২ হাজার ৮শ ৯৫ জন।

অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দুটি প্রতিষ্ঠানের (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত) মোট ২ হাজার ৮শ ৯৫ শিক্ষার্থীর প্রতি জনের কাছ থেকে প্রতি মাসে কম্পিউটার ও আইসিটি খাতের নামে ২০ টাকা হিসেবে মোট ৫৭ হাজার ৯শ টাকা আদায় করা হয়েছে। হিসেব মতে, বিদ্যালয় বন্ধের ১৭ মাসে ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩শ টাকা বিধি বহির্ভুতভাবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদায় করেছে এমন অভিযোগ তুলে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ ন্যায় বিচারের দাবি অভিভাবকদের।

জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান, এখানে সরকারি নিয়মের বাইরে কোনো ফি আদায় করা হয়নি। স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব সংরক্ষণের দায়িত্ব বিদ্যালয়কে নিজ নিজ দায়িত্বে পালন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আইসিটি খাতে আদায় করা টাকা কম্পিউটার ল্যাব রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যয় করা হয়।

সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আইসিটি বা কম্পিউটার খাতে সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। আমরা এর খরচ চালাতে টাকা পাবো কোথায় ? এতোদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকলেও কম্পিউটারে সব রকম কাজ করতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাজে ব্যবহৃত আইসিটি খাতের খরচটাও তো শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে।’

কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জায়েদুর রহমান বলেন, মাউশির ওই প্রজ্ঞাপনে টিউশন ফি ব্যাতিত অন্যান্য ফি না নেওয়ার  জন্য  যে সব খাতের উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে আইসিটি খাত থেকে কোনো ফি নেওয়া যাবে না এমন কথা বলা হয়নি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫

error: Content is protected !!

সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা না মানার অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ :
কুষ্টিয়ায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়যোগ্য টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) র নির্দেশনা মানছেন না কেউ। এমন অভিযোগ জেলার শীর্ষস্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল থেকে।

সূত্রমতে, করোনা সংক্রমনের কারণে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসময়ে অভিভাবকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় বিধিমতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুধুমাত্র টিউশন ফি’ই আদায় করতে পারবেন মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন খাতে  কোনও ফি নেওয়া যাবে না, কোনোও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে থাকলেও আদায় করা ওই টাকা শিক্ষার্থীদের  ফেরত দিতে বা পরবর্তী সময়ের টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করে নিতে হবে।

কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ার বাসিন্দা খন্দকার রুমেল হোসেন নামে এক অভিভাবক  অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিই সরকারি নির্দেশনা মানছে না। সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে আমার মেয়ের টিউশন ফি দিতে গিয়ে রীতিমতো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিলো। গত বছরের এপ্রিল থেকে শুরু করে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১৭ মাস বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও টিউশন ফির সঙ্গে কম্পিউটার ল্যাব খাতে শিক্ষার্থী প্রতি ২০ টাকা করে আদায় করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’

একইভাবে অভিন্ন অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও।
কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রভাতী ও দিবা শাখায় মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা যথাক্রমের ২৩৫৯ জন এবং ২২৭৪ জন শিক্ষর্থীসহ মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ হাজার ৬শ ৩৩ জন। এদের মধ্যে (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত) মোট ২ হাজার ৮শ ৯৫ জন।

অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দুটি প্রতিষ্ঠানের (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত) মোট ২ হাজার ৮শ ৯৫ শিক্ষার্থীর প্রতি জনের কাছ থেকে প্রতি মাসে কম্পিউটার ও আইসিটি খাতের নামে ২০ টাকা হিসেবে মোট ৫৭ হাজার ৯শ টাকা আদায় করা হয়েছে। হিসেব মতে, বিদ্যালয় বন্ধের ১৭ মাসে ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩শ টাকা বিধি বহির্ভুতভাবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদায় করেছে এমন অভিযোগ তুলে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ ন্যায় বিচারের দাবি অভিভাবকদের।

জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান, এখানে সরকারি নিয়মের বাইরে কোনো ফি আদায় করা হয়নি। স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব সংরক্ষণের দায়িত্ব বিদ্যালয়কে নিজ নিজ দায়িত্বে পালন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আইসিটি খাতে আদায় করা টাকা কম্পিউটার ল্যাব রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যয় করা হয়।

সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আইসিটি বা কম্পিউটার খাতে সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। আমরা এর খরচ চালাতে টাকা পাবো কোথায় ? এতোদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকলেও কম্পিউটারে সব রকম কাজ করতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাজে ব্যবহৃত আইসিটি খাতের খরচটাও তো শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে।’

কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জায়েদুর রহমান বলেন, মাউশির ওই প্রজ্ঞাপনে টিউশন ফি ব্যাতিত অন্যান্য ফি না নেওয়ার  জন্য  যে সব খাতের উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে আইসিটি খাত থেকে কোনো ফি নেওয়া যাবে না এমন কথা বলা হয়নি।


প্রিন্ট