মোঃ আলম মৃধাঃ
নরসিংদী সদর উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) লঙ্ঘন করে গড়ে উঠছে একের পর এক বহুতল আবাসিক, অনাবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক ভবন। এসব ভবনের অধিকাংশই সরকারের অনুমোদন ব্যতীত নির্মিত হচ্ছে, যার ফলে সরকার প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
–
সদরের একাধিক ইউনিয়নে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নতুন বিল্ডিং নির্মাণ যেন প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। আধুনিক ডিজাইনের দৃষ্টিনন্দন বহুতল ভবন, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট উঠছে যত্রতত্র, কিন্তু সেগুলোর বেশিরভাগেরই নেই কোনো বৈধ প্লান কিংবা নকশা অনুমোদন। অনেকে জানেন না যে, একটি স্থাপনা নির্মাণের আগে অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। আবার কেউ কেউ জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে বিধিমালা উপেক্ষা করছেন।
–
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব অবৈধ নির্মাণ ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ভূমিকম্প বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব অননুমোদিত স্থাপনা মারাত্মক প্রাণহানির কারণ হতে পারে। তাছাড়া নকশাবহির্ভূত নির্মাণের ফলে নগর পরিকল্পনা যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি কর ফাঁকির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র।
–
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার একজন প্রকৌশলী জানান, “বিএনবিসি ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মেনে ভবন নির্মাণ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি নিয়মকে পাশ কাটিয়ে লাভবান হচ্ছে। এটা শুধু অনৈতিকই নয়, আইনত অপরাধও বটে।”
–
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, এখনই সময় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার। অবিলম্বে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো, ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও অননুমোদিত ইমারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তবেই সরকারের রাজস্ব রক্ষা পাবে এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।
–
নির্বিকার নির্মাণযজ্ঞ বন্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে নরসিংদী সদর উপজেলার সচেতন মহল। উন্নয়ন হোক পরিকল্পিত, নিরাপদ ও বিধিমালানুসারী-এটাই সময়ের দাবি।
প্রিন্ট