লিয়াকত হোসেন লিংকনঃ
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৩ বছর ধরে প্রায় অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াউদ হোসেন কাশিয়ানী সদরের উত্তরপাড়ায় ১৩ শতাংশ জমি কিনে ৪১ বছর ধরে সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। হঠাৎ করে প্রতিবেশি শাহজাহান মিয়া ও সাগর ফকির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। পাশে সরকারি জমি থাকলেও প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় ব্যবহার করতে পারছেন না পরিবারটি। এছাড়া ওই এলাকার আরও ১০টি পরিবার রাস্তার অভাবে চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের প্রগতিপাড়ার বাসিন্দা ইয়াউদ হোসেন প্রতিবেশিদের বেড়ায় অবরুদ্ধ। সরকারি জমি থাকলেও প্রভাবশালীদের বাঁধায় সেখান দিয়ে চলাচল করতে পারছেন না। প্রতিবেশিরা ঘরের জানালা খোলার জন্য সরু জায়গা রেখেছেন, সেখান দিয়ে কোনো মতে নিচু হয়ে যাতায়াত করছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এম ইয়াউদ হোসেন বলেন, “একাত্তরের রণাঙ্গনে দেশ স্বাধীন করতে যুদ্ধ করেছিলাম, আজ নিজেই অবরুদ্ধ। প্রতিবেশিরা চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। অপর প্রতিবেশির ঘরের জানালা খোলার জন্য রাখা জায়গা দিয়ে নিচু হয়ে চলাচল করছি। যে কারণে আত্মীয়-স্বজনরা আমার বাড়িতে বেড়াতে আসেন না। কেউ আত্মীয়তা করতে চান না। ছেলে বিয়ে দিতে পারছি না। নির্মাণ সামগ্রী আনতে না পারায় বাড়ি সংস্কার করতে পারছি না। অবরুদ্ধ হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি। মুক্তি পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
রাস্তা বন্ধের বিষয়ে সাগর ফকিরের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা উনার রাস্তা বন্ধ করিনি। মিথ্যা অভিযোগ করছেন তিনি। আর সরকারি জমি দখলের যে অভিযোগ করেছেন, ওই জমি ভিপি সম্পত্তি, যা আমার বাবার নামে দীর্ঘদিন ধরে বন্দোবস্ত রয়েছে।”
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা জান্নাত বলেন, “অভিযোগের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রিন্ট