ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ার মিরপুর রেলস্টেশনের ভৌতিক কাহিনী !

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মিরপুর রেলস্টেশন একটি পুরোনো ও নীরব রেলস্টেশন, যার দেয়ালে লেগে আছে সময়ের ধুলো আর ইতিহাসের চিহ্ন। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই মিরপুর রেলস্টেশনটি মূলত: ছিল একটি ছোট রেল স্টেশন, যেখানে মাটি আর ইটের সংমিশ্রণে তৈরি হয় একটি ‘সিগন্যাল কক্ষ’। উঁচু এই লাল বিল্ডিংটি থেকে এক সময় রেললাইনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হতো। কালের পরিক্রমায় বিল্ডিংটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে অব্যবহৃত হয়ে যায়।

 

তবে মিরপুরবাসীর মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায় এক ভয়ের ভৌতিক গল্প । প্রায় ৫০ বছর আগে, একজন রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার, নাম ছিল হরিলাল, প্রতিদিন রাতের ডিউটি করতেন এই ঘরটিতে। ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দের এক বর্ষার রাতে আচমকা বজ্রপাত হয়, আর ট্রেন আসার আগেই সিগন্যাল সিস্টেমে বিপর্যয় ঘটে। হরিলাল উঠে যান এই ঘরের ছাদে সিগন্যাল লাইন ঠিক করতে। কিন্তু কেউ জানে না আসলে কী হয়েছিল। পরদিন তার মৃতদেহ পাওয়া যায় নিচে, রক্তাক্ত অবস্থায়। অথচ, শরীরে কোনো বৈদ্যুতিক দাহ বা বজ্রপাতের চিহ্ন ছিল না ।

 

তার মৃত্যুর পর থেকে প্রতি বছর সেই নির্দিষ্ট রাতে কেউ না কেউ ঘরের পাশে অদ্ভুত কান্না শুনেছেন বলে দাবি করেন। অনেকে বলেন, ঘরের জানালা দিয়ে মাঝে মাঝে দেখা যায় এক ছায়ামূর্তি সাদা জামা পরা, মাথা নিচু করে তাকিয়ে আছে লাইনের দিকে। রেলওয়ের কর্মীরা ধীরে ধীরে এই ঘরে যাওয়া বন্ধ করে দেন।

 

স্থানীয় বৃদ্ধরা আবুল কালাম আজাদ, মকছেদ আলী, কামাল মন্ডল বলেন, হরিলালের আত্মা এখনও ডিউটি শেষ করতে পারেনি। সে এখনও অপেক্ষা করে সিগন্যাল দেওয়ার জন্য, যেন ট্রেন নিরাপদে চলে যেতে পারে। কেউ কেউ রাত ৩ টার দিকে ঘরের জানালায় আলো জ্বলে উঠতেও দেখেছেন, অথচ ঘরটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন বহু বছর ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ার মিরপুর রেলস্টেশনের ভৌতিক কাহিনী !

আপডেট টাইম : ৮ ঘন্টা আগে
ইসমাইল হােসেন বাবু, সিনিয়র ষ্টাফ রিপাের্টার :

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মিরপুর রেলস্টেশন একটি পুরোনো ও নীরব রেলস্টেশন, যার দেয়ালে লেগে আছে সময়ের ধুলো আর ইতিহাসের চিহ্ন। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই মিরপুর রেলস্টেশনটি মূলত: ছিল একটি ছোট রেল স্টেশন, যেখানে মাটি আর ইটের সংমিশ্রণে তৈরি হয় একটি ‘সিগন্যাল কক্ষ’। উঁচু এই লাল বিল্ডিংটি থেকে এক সময় রেললাইনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হতো। কালের পরিক্রমায় বিল্ডিংটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে অব্যবহৃত হয়ে যায়।

 

তবে মিরপুরবাসীর মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায় এক ভয়ের ভৌতিক গল্প । প্রায় ৫০ বছর আগে, একজন রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার, নাম ছিল হরিলাল, প্রতিদিন রাতের ডিউটি করতেন এই ঘরটিতে। ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দের এক বর্ষার রাতে আচমকা বজ্রপাত হয়, আর ট্রেন আসার আগেই সিগন্যাল সিস্টেমে বিপর্যয় ঘটে। হরিলাল উঠে যান এই ঘরের ছাদে সিগন্যাল লাইন ঠিক করতে। কিন্তু কেউ জানে না আসলে কী হয়েছিল। পরদিন তার মৃতদেহ পাওয়া যায় নিচে, রক্তাক্ত অবস্থায়। অথচ, শরীরে কোনো বৈদ্যুতিক দাহ বা বজ্রপাতের চিহ্ন ছিল না ।

 

তার মৃত্যুর পর থেকে প্রতি বছর সেই নির্দিষ্ট রাতে কেউ না কেউ ঘরের পাশে অদ্ভুত কান্না শুনেছেন বলে দাবি করেন। অনেকে বলেন, ঘরের জানালা দিয়ে মাঝে মাঝে দেখা যায় এক ছায়ামূর্তি সাদা জামা পরা, মাথা নিচু করে তাকিয়ে আছে লাইনের দিকে। রেলওয়ের কর্মীরা ধীরে ধীরে এই ঘরে যাওয়া বন্ধ করে দেন।

 

স্থানীয় বৃদ্ধরা আবুল কালাম আজাদ, মকছেদ আলী, কামাল মন্ডল বলেন, হরিলালের আত্মা এখনও ডিউটি শেষ করতে পারেনি। সে এখনও অপেক্ষা করে সিগন্যাল দেওয়ার জন্য, যেন ট্রেন নিরাপদে চলে যেতে পারে। কেউ কেউ রাত ৩ টার দিকে ঘরের জানালায় আলো জ্বলে উঠতেও দেখেছেন, অথচ ঘরটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন বহু বছর ।


প্রিন্ট