ঢাকা , শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বিএমডিএ চেয়ারম্যানের শূন্য পদ ঘিরে গুঞ্জন আলোচনায় এক বোর্ড সদস্য

আলিফ হোসেনঃ

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যানের পদটি বর্তমানে শূন্য রয়েছে। চেয়ারম্যান ড, এম আসাদুজ্জামানের মৃত্যুর পর থেকেই এ পদ ঘিরে দপ্তরের অভ্যন্তরে চলছে নানা গুঞ্জন, আলোচনা ও তদবিরের প্রতিযোগিতা। কে হচ্ছেন পরবর্তী নতুন চেয়ারম্যান—তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। আলোচনা ও দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য।
জানা গেছে, বিএমডিএ’র সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ও নীতিনির্ধারণী এ পদটি বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে সংশ্লিষ্টরা প্রত্যাশা করছেন, একজন যোগ্য, দক্ষ, কৃষিবান্ধব এবং দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিকে সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ এই পদে দায়িত্ব দেওয়া হবে।

.

বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানায়, পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যকে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বরেন্দ্রের অভ্যন্তরে এই একজন সদস্যের নাম আলোচনায় বেশি উঠে আসছে।এছাড়াএ বগুড়া এলাকার কিছু রাজনৈতিক নেতার নামও শোনা যাচ্ছে।
তবে সিংহভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মত, এমন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক যিনি সুশাসনের পক্ষে ও ব্যক্তিগতভাবে “ক্লিন ইমেজ” সম্পন্ন। তারা আরো মনে করেন, যেহেতু বোর্ড সদস্যরা সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে অভিজ্ঞ, তাই এ পদে সাধারণত পর্ষদের মধ্য থেকেই নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয় যেহুতু রাজশাহী সেহেতু রাজশাহীর কাউকে চেয়ারম্যান করা হলে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিএমডিএ’র একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা এমন একজনকে চাই, যিনি কেবল রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য করে দায়িত্ব পালন করবেন।এদিকে, বিভিন্ন মহলে তদবির ও লবিং জোরদার হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনের কেউ কেউ নিজস্ব প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

.

বিশ্লেষক মহলের অভিমত, বৃহত্তর বরেন্দ্র অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বিএমডিএ’র নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তির নীতিগত স্বচ্ছতা, দক্ষ প্রশাসনিক পরিচালনা এবং জনগণের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখা জরুরি। তা না হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং জনস্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

.

এদিকে চূড়ান্তভাবে কে হচ্ছেন বিএমডিএ’র নতুন চেয়ারম্যান, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সবার দৃষ্টি এখন সরকারের দিকে। বিএমডিএ’র পরিচালনা পর্ষদে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, কৃষি খাতের বিশেষজ্ঞ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিএমডিএ ১৯৯২ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত হয়। এর আগে, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের অধীনে বরেন্দ্র সমন্বিত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল, যা ১৯৯০ সালে শেষ হয়। প্রকল্পটির সফলতা থেকেই বিএমডিএ গঠিত হয়, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, সেচ ব্যবস্থার বিস্তার, খাল-পুকুর পুনঃখনন, সড়ক নির্মাণ ও বনায়ন কার্যক্রম পরিচালনা। বিএমডিএ’র সর্বশেষ চেয়ারম্যান ছিলেন ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি গত ২৪ মে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি এর আগে নির্বাহী পরিচালক এবং পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সময়ে সংস্থাটি বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ ও কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

.

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাঠ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান,চেয়ারম্যান হবার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরোক।কারণ সৎ, নিষ্ঠাবান ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজ সম্পন্ন সাইফুল ইসলাম হিরোক সংস্থার সকলের কাছে সমান জনপ্রিয মুখ।এছাড়াও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে,আছে তাদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক,তিনি চেয়ারম্যান হলে বরেন্দ্রের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।

.

তারা বলেন, হিরোক সাহেব সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে বোর্ড সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু এখানো তিনি সম্মানির কোনো অর্থ গ্রহণ করেন নি। বরেন্দ্র জন্য তিনি নিবেদিত প্রাণ, তিনি বরেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরদের রাজস্বখাতে নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি বরেন্দ্রের উন্নয়নে আরো ব্যাপক অবদান রাখতে পারবেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাগাতিপাড়ায় তিনদিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন

error: Content is protected !!

বিএমডিএ চেয়ারম্যানের শূন্য পদ ঘিরে গুঞ্জন আলোচনায় এক বোর্ড সদস্য

আপডেট টাইম : ১১:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যানের পদটি বর্তমানে শূন্য রয়েছে। চেয়ারম্যান ড, এম আসাদুজ্জামানের মৃত্যুর পর থেকেই এ পদ ঘিরে দপ্তরের অভ্যন্তরে চলছে নানা গুঞ্জন, আলোচনা ও তদবিরের প্রতিযোগিতা। কে হচ্ছেন পরবর্তী নতুন চেয়ারম্যান—তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। আলোচনা ও দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য।
জানা গেছে, বিএমডিএ’র সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ও নীতিনির্ধারণী এ পদটি বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে সংশ্লিষ্টরা প্রত্যাশা করছেন, একজন যোগ্য, দক্ষ, কৃষিবান্ধব এবং দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিকে সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ এই পদে দায়িত্ব দেওয়া হবে।

.

বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানায়, পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যকে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বরেন্দ্রের অভ্যন্তরে এই একজন সদস্যের নাম আলোচনায় বেশি উঠে আসছে।এছাড়াএ বগুড়া এলাকার কিছু রাজনৈতিক নেতার নামও শোনা যাচ্ছে।
তবে সিংহভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মত, এমন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক যিনি সুশাসনের পক্ষে ও ব্যক্তিগতভাবে “ক্লিন ইমেজ” সম্পন্ন। তারা আরো মনে করেন, যেহেতু বোর্ড সদস্যরা সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে অভিজ্ঞ, তাই এ পদে সাধারণত পর্ষদের মধ্য থেকেই নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয় যেহুতু রাজশাহী সেহেতু রাজশাহীর কাউকে চেয়ারম্যান করা হলে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিএমডিএ’র একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা এমন একজনকে চাই, যিনি কেবল রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য করে দায়িত্ব পালন করবেন।এদিকে, বিভিন্ন মহলে তদবির ও লবিং জোরদার হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনের কেউ কেউ নিজস্ব প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

.

বিশ্লেষক মহলের অভিমত, বৃহত্তর বরেন্দ্র অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বিএমডিএ’র নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তির নীতিগত স্বচ্ছতা, দক্ষ প্রশাসনিক পরিচালনা এবং জনগণের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখা জরুরি। তা না হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং জনস্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

.

এদিকে চূড়ান্তভাবে কে হচ্ছেন বিএমডিএ’র নতুন চেয়ারম্যান, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সবার দৃষ্টি এখন সরকারের দিকে। বিএমডিএ’র পরিচালনা পর্ষদে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, কৃষি খাতের বিশেষজ্ঞ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিএমডিএ ১৯৯২ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত হয়। এর আগে, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের অধীনে বরেন্দ্র সমন্বিত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল, যা ১৯৯০ সালে শেষ হয়। প্রকল্পটির সফলতা থেকেই বিএমডিএ গঠিত হয়, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, সেচ ব্যবস্থার বিস্তার, খাল-পুকুর পুনঃখনন, সড়ক নির্মাণ ও বনায়ন কার্যক্রম পরিচালনা। বিএমডিএ’র সর্বশেষ চেয়ারম্যান ছিলেন ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি গত ২৪ মে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি এর আগে নির্বাহী পরিচালক এবং পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সময়ে সংস্থাটি বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ ও কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

.

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাঠ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান,চেয়ারম্যান হবার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরোক।কারণ সৎ, নিষ্ঠাবান ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজ সম্পন্ন সাইফুল ইসলাম হিরোক সংস্থার সকলের কাছে সমান জনপ্রিয মুখ।এছাড়াও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে,আছে তাদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক,তিনি চেয়ারম্যান হলে বরেন্দ্রের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।

.

তারা বলেন, হিরোক সাহেব সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে বোর্ড সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু এখানো তিনি সম্মানির কোনো অর্থ গ্রহণ করেন নি। বরেন্দ্র জন্য তিনি নিবেদিত প্রাণ, তিনি বরেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরদের রাজস্বখাতে নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি বরেন্দ্রের উন্নয়নে আরো ব্যাপক অবদান রাখতে পারবেন।


প্রিন্ট