ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

মুকসুদপুরে গণপিটুনিতে গরুচোর নিহতের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার, আতঙ্কে পুরুষশূন্য চারগ্রাম

বাদশাহ মিয়াঃ

 

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে গণপিটুনিতে গরুচোর নিহতের ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকায় মুকসুদপুর উপজেলার হাজিরবাগ, জানবাগ, পশারগাতী ও কৃষ্ণাদিয়া গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুকসুদপুর থানার এসআই আব্দুল হাকিম গ্রেপ্তারের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) উপজেলার হাজিরবাগ গণপিটুনিতে গরু চোর শামীম মিয়া (৩৬) মৃত্যু হয়। আহত হন সাতজন। পরদিন নিহতের মা মেহেরুন নেছা ওরফে পাচি বেগম মুকসুদপুর থানায় ওই চার গ্রামের ৪৩ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

নিহত শামীম মিয়া উপজেলার পশারগাতি ইউনিয়নের বাহিরবাগ গ্রামের মৃত মুন্নু মিয়ার ছেলে। তিনি অটোভ্যান চালক ছিলেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানাযায়, গত ১১ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে খাওয়াদাওয়া শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন শামীম। পরদিন সকালে তিনি বাড়িতে না থাকায় পরিবার মনে করে কাজে বের হয়েছেন। কিন্তু দুপুরে খবর আসে, মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শামীম মিয়া মারা গেছেন।

 

ওইদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাজিরবাগ গ্রামের ইদ্রিস আলী, রহমত মিয়া ও কালাম শরীফ জানান, ওই ঘটনার সময় চার গ্রামের হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। হত্যা মামলা দায়েরের পর গ্রামগুলোর পুরুষরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা ঢাকা দিয়েছেন। এ কারণে এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হাকিম জানান, গণপিটুনিতে আহত বরিশালের সদর উপজেলার লিটন, উজিরপুর থানার সকরাইল গ্রামের সুমন হাওলাদার, বাবুগঞ্জ থানার চর ফতেপুর গ্রামের ইলিয়াছ সরদার, বগুড়ার সদর উপজেলার মালগ্রামের ফারুক শেখ, একই উপজেলার রসুলপুর গ্রামের সোহাগ, নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর পাথড়া গ্রামের বিপ্লব সরকার ও ময়মনসিংহের নান্দাইলের পূর্বধলা গ্রামের ফয়সাল মিয়াকে মুকসুদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের গরু চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনজন এখনও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, এ সংক্রান্ত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে মাদরাসায় এক ব্যক্তি চাকরি করেন দুই পদে

error: Content is protected !!

মুকসুদপুরে গণপিটুনিতে গরুচোর নিহতের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার, আতঙ্কে পুরুষশূন্য চারগ্রাম

আপডেট টাইম : ১১ ঘন্টা আগে
বাদশাহ মিয়া, মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি :

বাদশাহ মিয়াঃ

 

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে গণপিটুনিতে গরুচোর নিহতের ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকায় মুকসুদপুর উপজেলার হাজিরবাগ, জানবাগ, পশারগাতী ও কৃষ্ণাদিয়া গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুকসুদপুর থানার এসআই আব্দুল হাকিম গ্রেপ্তারের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) উপজেলার হাজিরবাগ গণপিটুনিতে গরু চোর শামীম মিয়া (৩৬) মৃত্যু হয়। আহত হন সাতজন। পরদিন নিহতের মা মেহেরুন নেছা ওরফে পাচি বেগম মুকসুদপুর থানায় ওই চার গ্রামের ৪৩ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

নিহত শামীম মিয়া উপজেলার পশারগাতি ইউনিয়নের বাহিরবাগ গ্রামের মৃত মুন্নু মিয়ার ছেলে। তিনি অটোভ্যান চালক ছিলেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানাযায়, গত ১১ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে খাওয়াদাওয়া শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন শামীম। পরদিন সকালে তিনি বাড়িতে না থাকায় পরিবার মনে করে কাজে বের হয়েছেন। কিন্তু দুপুরে খবর আসে, মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শামীম মিয়া মারা গেছেন।

 

ওইদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাজিরবাগ গ্রামের ইদ্রিস আলী, রহমত মিয়া ও কালাম শরীফ জানান, ওই ঘটনার সময় চার গ্রামের হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। হত্যা মামলা দায়েরের পর গ্রামগুলোর পুরুষরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা ঢাকা দিয়েছেন। এ কারণে এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হাকিম জানান, গণপিটুনিতে আহত বরিশালের সদর উপজেলার লিটন, উজিরপুর থানার সকরাইল গ্রামের সুমন হাওলাদার, বাবুগঞ্জ থানার চর ফতেপুর গ্রামের ইলিয়াছ সরদার, বগুড়ার সদর উপজেলার মালগ্রামের ফারুক শেখ, একই উপজেলার রসুলপুর গ্রামের সোহাগ, নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর পাথড়া গ্রামের বিপ্লব সরকার ও ময়মনসিংহের নান্দাইলের পূর্বধলা গ্রামের ফয়সাল মিয়াকে মুকসুদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের গরু চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনজন এখনও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, এ সংক্রান্ত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


প্রিন্ট