ঢাকা , শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

জামায়াতের তালিমি ক্লাসের মিস্টি কথায় ভুলবেন নাঃ -ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু

মোসলেম উদ্দিন সিরাজীঃ

‎বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আমি যখন সিরাজগঞ্জে আসি তখন শুনি তালিমি ক্লাস নিয়ে নাকি আমাদের মা-বোনদের জামায়াতি করে ফেলেছে। মা-বোনদের বলি, এই তালিমি ক্লাসে ওদের মিস্টি কথায় ভুলবেন না। জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ইসলাম কায়েম করার জন্য তোমাদের প্রয়োজন নাই।

 

বাংলাদেশের মানুষ নামাজ, রোজা, হজ্ব-জাকাতে বিশ্বাস করে। নতুন করে আমাদেরকে ধর্ম শেখাতে হবে না। বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজনে শহরের রেলগেট এলাকার ট্রাক টার্মিনালে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হওয়ায় তাকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আপনারা জীবনে কোনদিনও দেশের মঙ্গল চান নাই। পাকিস্তান আমলে তাদের নেতা মওদুদী লাহোরে রায়ট করে হাজার হাজার কাদিয়ানিকে হত্যা করেছিল। যার জন্য আইয়ুব খান তাকে ফাসির রায় দিয়েছিল, উনি পালিয়ে বেঁচেছিল। আবার মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আমাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করে, ওরা তখন তাদের সাথে হাত মিলিয়ে ইমানী যুদ্ধে নেমেছিল।

 

আলবদর আল শামস বানিয়ে আমাদের মা-বোনদের নিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। তখন ফতোয়া দিয়েছিল, যুদ্ধে নারী নাকি তাদের হক। এই হলে জামায়াতে ইসলাম। তারা বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করেছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, তারা কিন্তু এখনো বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চায় নাই।

 

সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, মওদুদী যদি এতই ইসলামপন্থী হতো তার নয় ছেলে একটাও জামায়াত করে নাই এবং বিলাতে বসবাস করেন। আমার দেশের গরীব খেটে খাওয়া মানুষ ধর্মকে বিশ্বাস করে, ধর্মকে পালন করে। তাদের সরল মনকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। জামায়াত যারা করে তারা মুসলমান, আমরা যারা জামায়াত করি না, আমরা কি মুসলমান নয়। তারা তালিমি ক্লাসের নাম নিয়ে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করছে, এটা কি মোনাফেকি না?

 

জামায়াতের আমির বলেছেন গণভোট না হলে কোন ভোট বাংলাদেশে হবে না। তার অর্থ কি তোমরা ভোট চাও না, ভোটে গেলে তোমাদের হেরে যাওয়ার ভয় আছে। তোমাদের রাজনীতি ব্যান্ড ছিল, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাজনীতি করার লাইসেন্স দিয়েছিল বলেই তোমরা রাজনীতি করতে পারছো। আজ সেই দলকে তোমরা রক্তচক্ষু দেখাবে আর আমরা সেটা মানবো, সেটা ভাবো না। আগামি নির্বাচন বন্ধ করার জন্য এরা চেষ্টা করছে, কিন্তু বিএনপি নির্বাচন করেই ছাড়বে। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, আমরা ৬৯-এ আন্দোলন করেছি, তখন মওলানা ভাসানী ছিল, শেখ মুজিব ছিলেন। ছাত্র আন্দোলন করে আইয়ুব খানের পতন করেছিল।

 

ইয়াহিয়া খানের মার্শাল ল হয়েছিল তখনকার কোন ছাত্ররা তো বলে নাই, আমরা তো পতন আইয়ুব খানের করেছি, সুতরাং ক্ষমতার অংশীদার আমরা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, ছাত্র থেকে আবার ছাত্র হয়েছি, লেখাপড়া করেছি। আবার ৭০ এর নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ হৃদয় নিংড়িয়ে একটি দলকে ভোট দিয়েছিল। তারা নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের মনের আশা যুগিয়েছিল।

 

কিন্তু ইয়াহিয়া খান যখন ২৫ মার্চ রাতে সৈন্যবাহিনী নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের উপর নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলো, সেই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ হতাশ হয়ে কোথায় যাবে জানতো না। সারা বাংলাদেশে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, রাস্তাঘাটে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু যাদের ভোট দিয়েছিল, তাদের ভোট দেখা যায় নাই। এখন যেমন পালিয়ে চলে গেছে ভারতে। ঠিক ১৯৭১ সালে এমনি ওই দলটি পালিয়ে ভারতে চলে গেছিল।

 

যখন মানুষ চরম হতাশ, সেই সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রেডিওর মাধ্যমে ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে হতাশ বাঙালি জাতি জেগে উঠলো। তিনি মাঠে থেকে লড়াই করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছিল। আমরা সেই দলের কর্মী। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি তো বলেন নাই আমাকে ক্ষমতা দিতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখেছিলে। এবং যার যার কাজে ফিরে গিয়েছিলেন।

 

 

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম সহ-সভাপতি ভিপি শামীম খান, রাশেদুল হাসান রঞ্জন, জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাজেশ প্রমূখ। এর আগে কড্ডার মোড় এলাকায় গণসংবর্ধনা দেওয়া হয় ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদীতে ট্রাকসহ ১৪৮ বস্তা জিরা উদ্ধার, দুই ডাকাত গ্রেফতার

error: Content is protected !!

জামায়াতের তালিমি ক্লাসের মিস্টি কথায় ভুলবেন নাঃ -ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু

আপডেট টাইম : ০৯:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
মোসলেম উদ্দিন সিরাজী, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

মোসলেম উদ্দিন সিরাজীঃ

‎বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আমি যখন সিরাজগঞ্জে আসি তখন শুনি তালিমি ক্লাস নিয়ে নাকি আমাদের মা-বোনদের জামায়াতি করে ফেলেছে। মা-বোনদের বলি, এই তালিমি ক্লাসে ওদের মিস্টি কথায় ভুলবেন না। জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ইসলাম কায়েম করার জন্য তোমাদের প্রয়োজন নাই।

 

বাংলাদেশের মানুষ নামাজ, রোজা, হজ্ব-জাকাতে বিশ্বাস করে। নতুন করে আমাদেরকে ধর্ম শেখাতে হবে না। বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজনে শহরের রেলগেট এলাকার ট্রাক টার্মিনালে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হওয়ায় তাকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আপনারা জীবনে কোনদিনও দেশের মঙ্গল চান নাই। পাকিস্তান আমলে তাদের নেতা মওদুদী লাহোরে রায়ট করে হাজার হাজার কাদিয়ানিকে হত্যা করেছিল। যার জন্য আইয়ুব খান তাকে ফাসির রায় দিয়েছিল, উনি পালিয়ে বেঁচেছিল। আবার মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আমাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করে, ওরা তখন তাদের সাথে হাত মিলিয়ে ইমানী যুদ্ধে নেমেছিল।

 

আলবদর আল শামস বানিয়ে আমাদের মা-বোনদের নিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। তখন ফতোয়া দিয়েছিল, যুদ্ধে নারী নাকি তাদের হক। এই হলে জামায়াতে ইসলাম। তারা বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করেছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, তারা কিন্তু এখনো বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চায় নাই।

 

সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, মওদুদী যদি এতই ইসলামপন্থী হতো তার নয় ছেলে একটাও জামায়াত করে নাই এবং বিলাতে বসবাস করেন। আমার দেশের গরীব খেটে খাওয়া মানুষ ধর্মকে বিশ্বাস করে, ধর্মকে পালন করে। তাদের সরল মনকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। জামায়াত যারা করে তারা মুসলমান, আমরা যারা জামায়াত করি না, আমরা কি মুসলমান নয়। তারা তালিমি ক্লাসের নাম নিয়ে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করছে, এটা কি মোনাফেকি না?

 

জামায়াতের আমির বলেছেন গণভোট না হলে কোন ভোট বাংলাদেশে হবে না। তার অর্থ কি তোমরা ভোট চাও না, ভোটে গেলে তোমাদের হেরে যাওয়ার ভয় আছে। তোমাদের রাজনীতি ব্যান্ড ছিল, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাজনীতি করার লাইসেন্স দিয়েছিল বলেই তোমরা রাজনীতি করতে পারছো। আজ সেই দলকে তোমরা রক্তচক্ষু দেখাবে আর আমরা সেটা মানবো, সেটা ভাবো না। আগামি নির্বাচন বন্ধ করার জন্য এরা চেষ্টা করছে, কিন্তু বিএনপি নির্বাচন করেই ছাড়বে। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, আমরা ৬৯-এ আন্দোলন করেছি, তখন মওলানা ভাসানী ছিল, শেখ মুজিব ছিলেন। ছাত্র আন্দোলন করে আইয়ুব খানের পতন করেছিল।

 

ইয়াহিয়া খানের মার্শাল ল হয়েছিল তখনকার কোন ছাত্ররা তো বলে নাই, আমরা তো পতন আইয়ুব খানের করেছি, সুতরাং ক্ষমতার অংশীদার আমরা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, ছাত্র থেকে আবার ছাত্র হয়েছি, লেখাপড়া করেছি। আবার ৭০ এর নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ হৃদয় নিংড়িয়ে একটি দলকে ভোট দিয়েছিল। তারা নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের মনের আশা যুগিয়েছিল।

 

কিন্তু ইয়াহিয়া খান যখন ২৫ মার্চ রাতে সৈন্যবাহিনী নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের উপর নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলো, সেই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ হতাশ হয়ে কোথায় যাবে জানতো না। সারা বাংলাদেশে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, রাস্তাঘাটে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু যাদের ভোট দিয়েছিল, তাদের ভোট দেখা যায় নাই। এখন যেমন পালিয়ে চলে গেছে ভারতে। ঠিক ১৯৭১ সালে এমনি ওই দলটি পালিয়ে ভারতে চলে গেছিল।

 

যখন মানুষ চরম হতাশ, সেই সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রেডিওর মাধ্যমে ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে হতাশ বাঙালি জাতি জেগে উঠলো। তিনি মাঠে থেকে লড়াই করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছিল। আমরা সেই দলের কর্মী। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি তো বলেন নাই আমাকে ক্ষমতা দিতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখেছিলে। এবং যার যার কাজে ফিরে গিয়েছিলেন।

 

 

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম সহ-সভাপতি ভিপি শামীম খান, রাশেদুল হাসান রঞ্জন, জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাজেশ প্রমূখ। এর আগে কড্ডার মোড় এলাকায় গণসংবর্ধনা দেওয়া হয় ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কে।


প্রিন্ট