মিজান উর রহমানঃ
বোয়ালমারীতে সংহতি দিবসের সংঘর্ষে ৫ ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামী করা হয়েছে। ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানায় দায়েরকৃত বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষে বিস্ফোরক মামলায় পাঁচ ইউপি চেয়ারম্যান আসামী হয়েছেন। গত ৭ নভেম্বর বিকালে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন কালে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী খোন্দকার নাসিরুল ইসলামের গ্রুপ ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি, সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর গ্রুপের মধ্যে প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় ১৫/১৬টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, বিএনপির অফিস ভাঙচুর এবং মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ৮ নভেম্বর রাতে বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। মামলা নন্বর ১০ এবং ১১। এ বিষয়ে বুধবার (১২ নভেম্বর ২০২৫) মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, এই মামলায় গুনবাহা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলামকে ৫ নম্বর, শেখর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমেদকে ২২ নম্বর, দাদপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো: মোশাররফ হোসেন মুশা, তিনি ১১৩ নম্বর, সাতৈর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টুকে ১১২ নম্বর এবং রুপাপাত ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সোনা মিয়াকে ১৫০ নম্বর আসামী করা হয়েছে।
বিএনপির নবনির্বাচিত কমিটির সহসভাপতি সামছুদ্দিন মিয়া ঝুনুর পক্ষে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মুজিবুর রহমান বাবুর দায়েরকৃত মামলায় এই পাঁচ চেয়ারম্যানকে আসামী করা হয়। পাঁচ চেয়ারম্যানকে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য খোন্দকার নাসিরুল ইসলামের পক্ষভূক্ত বলে জানান হয়েছে ।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। একটি মামলার বাদী আমি নিজে । আমার প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে ৫ নম্বর আসামি করে আমার নামে মামলা দিয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ বলেন, ঘটনার দিন আমি সহস্রাইল বাজারে ছিলাম। উপজেলা পরিষদের একটা প্রকল্পের কাজ চলছে। আমি সহস্রাইল বাজারে সেই কাজের দেখভাল করছিলাম। ঘটনার দিন সকাল থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত রাস্তার কাজের তদারকিতে ব্যস্ত ছিলাম। আমি সেই রাস্তার কাজের লিভারদের সাথে ছিলাম। অন্যায় ভাবে আমাকে বিস্ফোরক মামলায় ২২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
রুপাপাত ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সোনা মিয়া বলেন, সংঘর্ষের দিন আমি বরিশাল ছিলাম। ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত থাকা স্বত্বেও আমাকে বিস্ফোরক মামলার ১৫০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
রাফিউল আলম মিন্টু ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয় নাই। দাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মুশার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তাঁর মতামত জানা যায় নাই। এদিকে চেয়ারম্যানদের এক চাটিয়া আসামী করায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিশেষ করে মুশা চেয়ারম্যানকে আসামী করায় দাদপুর ইউপির সাধারণ জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মামলার বাদী পক্ষের লোকজনের অভিযোগ, এই ৫ চেয়ারম্যান তাদের লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্র লাঠি সোঠা নিয়ে পৌর বাজারে এসে নেতাদের সাথে মিশে তান্ডব চালায়।
বোয়ালমারী থানা অফিসার-ইন-চার্জ মাহমুদুল হাসান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষেরই মামলা হয়েছে। মামলার বাদী কিছু আসামির নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন এবং কিছু অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করেছেন । মামলা তদন্ত কাজ চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ্য, এই দুই মামলায় তিন নেতা শাহ মো: আবু জাফর, খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম, সামছুদ্দিন মিয়া ঝুনুসহ আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু নামে এক ব্যাক্তিকে মুল আসামী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রিন্ট

বালিয়াকান্দিতে মোবাইলকোট পরিচালনায় দুই ট্রলি চালককে জরিমানা 
মিজান উর রহমান, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার 




















