মোঃ নুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার
ফরিদপুরের পুখুরিয়া রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেন না থামার ঘোষণার প্রতিবাদে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া রেলস্টেশনে এলাকাবাসী এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে ২৩ মিনিট আটকে রাখা হয়। পরে সমাধানের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার রেল কর্তৃপক্ষ এক ঘোষণায় ১৯ জানুয়ারি থেকে আন্তনগর ট্রেন পুখুরিয়া স্টেশনে না থামার ঘোষণা দেয়। কারণ হিসেবে যাত্রীস্বল্পতার কথা বলা হয়। তবে এ ঘোষণা শোনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি চালু রাখার দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে পুখুরিয়া রেলস্টেশনের পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণকান্দা আবদুস শরীফ একাডেমির শিক্ষার্থীরা এবং সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা থেকে নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করা যাত্রীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুর ১২টার দিকে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা পুখুরিয়া রেলস্টেশনে জড়ো হয়। তারা লাল পতাকা টানিয়ে রেললাইনের ওপর অবস্থান করে। বেলা ১টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস পুখুরিয়া স্টেশন অতিক্রম করতে গেলে অবরোধকারীরা ট্রেনটি থামিয়ে দেন। প্রায় ২৩ মিনিট পর ট্রেনে থাকা কর্মকর্তারা পুনরায় মধুমতি এক্সপ্রেস পুখুরিয়া স্টেশনে বিরতির আশ্বাস দিলে দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে অবরোধকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
ব্রাহ্মণকান্দা আবদুস শরিফ একাডেমির এসএসসি পরীক্ষার্থী মার্জিয়া আক্তার বলেন, পুখুরিয়া রেলস্টেশনটি অনেক পুরোনো। এই স্টেশন থেকে অনেক যাত্রী ওঠানামা করেন। হঠাৎ আন্তনগর ট্রেন এখানে থামবে না বলে ঘোষণা আসে। এ অন্যায় ঘোষণা আমরা মেনে নিতে পারি না। এ জন্য আমরা আন্দোলনে গিয়েছি।
সদরপুর উপজেলার বাসিন্দা মাহবুব হোসেন সজিব বলেন, পুখুরিয়া স্টেশনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সদরপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও চন্দ্রপাড়া দরবার শরিফে অসংখ্য ভক্তবৃন্দ এবং সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার অসংখ্য যাত্রীরা প্রতিনিয়ত এই স্টেশন থেকে রেলপথে আসা-যাওয়া করেন। তাই আন্তনগর ট্রেন এখানে থামাতেই হবে। নাহলে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার যাত্রীদের অনেক ভোগান্তি হবে।
সদরপুর উপজেলার এক শিক্ষার্থী শান্ত হোসেন বলেন, আমরা সদরপুর থেকে নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করে পুখুরিয়া স্টেশন থেকে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে আসা-যাওয়া করি৷ এখানে ট্রেন না থামায় আমাদের বেশি ভাড়া দিয়ে বাসে বা অন্য কোন গাড়িতে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এই স্টেশনে ট্রেন থামানো জরুরি।
তালমা ও পুখুরিয়া রেলস্টেশনের ইনচার্জ রকিবুল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবার রেলপথ বিভাগ পুখুরিয়া স্টেশনে আন্তনগর ট্রেন না থামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সেদিন থেকেই এ নির্দেশ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস রোববার দুপুরে পুখুরিয়া স্টেশন এলাকায় এলে শত শত লোক ট্রেনটি থামান। ট্রেনের পরিচালকেরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিলে অবরোধকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
প্রিন্ট