কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত আপন দুই ভাইয়ের মরদেহ একসঙ্গে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাদ আসর জানাজা শেষে সাতারপাড়া গোরস্তানে তাদের মরদেহ পাশাপাশি দাফন করা হয়। জানাজায় হাজারো মুসল্লি অংশ নেন।
গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাতারপাড়া গ্রামের বাজারে পূর্বশত্রুতার জেরে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের বাড়িতে দুই ভাইয়ের মরদেহ পৌঁছালে পরিবারের সদস্য, স্বজন ও স্থানীয়রা কান্না ও আহাজারিতে ভেঙে পড়েন। শোকার্তদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। নিহতদের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে স্বজনরা ছুটে আসেন, কেউ সান্ত্বনা দেন, কেউ চোখের পানি ফেলেন। দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়দের মতে, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে এই নৃশংস হামলা হয়েছে। তারা বলেন, “এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাদের পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।”
নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে সুরুজ আলী জানান, তিনি, তার বাবা নজরুল ইসলাম ও চাচা আব্দুল হামিদ বুধবার বিকেলে বাজারে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের সদস্যরা পিস্তল, রামদা ও চাপাতি নিয়ে হামলা করে। সুরুজ বলেন, “আমার চোখের সামনে আব্বা ও চাচাকে হত্যা করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আসমত, সাইফুল ও জামান গুরুতর আহত আকবর ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নিহতরা হলেন: দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের সাতারপাড়া গ্রামের রমজান মন্ডলের ছেলে হামিদ (৫০) ও নজরুল ইসলাম মন্ডল (৪৫)। নজরুল ব্যবসা করতেন এবং হামিদ কৃষক।
কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) আবদুল খালেক দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, “সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রিন্ট