আওয়ামী লীগের ভোট চুরি করা লাগে না বলে দাবি করেছেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ এমনিতেই ভোট পায়। যখনই মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেছি। কক্সবাজারে মেয়র নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা, কোনো অভিযোগ করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তাদের বলব- আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচন স্বচ্ছ হয়, নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা যে আমরা করতে পারি, সেটা কিন্তু আমরা প্রমাণ করেছি। কাজেই এটা নিয়ে আর কারও কোনো প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।’
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা দেশগুলোকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যেসব দেশ আমাদের নির্বাচনের দিকে শ্যেনদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন, তাদেরও বলব, আমাদের যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা আমাদের যে উপনির্বাচনগুলো হলো, সেই নির্বাচনগুলো দেখেন কীভাবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। এরপর আবার কেন প্রশ্ন ওঠে?’ নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয়ী করায় রাজশাহী ও সিলেটবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জানান দলটির সভাপতি।
বিএনপি আমলের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আমলে নির্বাচন মানে কী ছিল? উপনির্বাচন মানে ছিল আমরা যে বলতাম- ১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা।
তিনি আরও বলেন, ভোট ডাকাতি করেই তাদের (বিএনপি) জন্ম, ভোট ডাকাতি করাই তাদের অভ্যাস। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি।
২০০১ সালে ক্ষমতায় না আসার কারণ হিসেবে শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিতে পারলাম না বলেই সরকারে আসতে পারিনি। চক্রান্ত করে আমাদের ক্ষমতা থেকে হটানো হয়। সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াত জোট।
পঁচাত্তরের পরে বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যারা মানবাধিকার নিয়ে এত সোচ্চার ও সচেতন, তারা তখন কেন এত নিশ্চুপ ছিল, সেটা আমার কাছে বোধগম্য নয়। কিন্তু আমরা কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, মানবাধিকার সুরক্ষা করেছি। কিন্তু আমাদের তো মানবাধিকার ছিল না, হারিয়েছি।
রিজার্ভের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পাঁচ মাসের খাবার কেনার মতো সক্ষমতা এখনো আছে। আর খাদ্যের অভাবও নেই। রিজার্ভের টাকা দিয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে ব্যয়ের ফান্ডের কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, সেটা রিজার্ভের হিসাবে আনা যায় না। সেটা আনলে আমাদের রিজার্ভ বেশি হয়। সেগুলো বাদ দিয়ে আমরা রিজার্ভ হিসাব করব। তাতে কিছু আসে-যায় না।
প্রিন্ট