ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু Logo লালপুরে বিএনপির মতবিনিময় ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরে ৭ই ডিসেম্বর কর্মশালা সফল করার লক্ষ্যে ফরিদপুর বিভাগীয় বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত Logo তানোরে সার পচার, বিতরণে অনিয়ম, হট্টগোল ও মারপিট Logo ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় কওমী মাদরাসা ঐক্য পরিষদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশের নৃত্য দল ভারতে সাংস্কৃতিক উৎসবে অংশগ্রহণ করে Logo সুন্দরবন প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন Logo বাগাতিপাড়ায় স্ত্রীর পরকীয়ার অভিযোগে স্বামীর আত্মহত্যা ! Logo কালুখালীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ Logo বাগাতিপাড়ায় জাটকা মাছ জব্দ করে দন্ড
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ট্রায়াল রানের প্রস্তুতি

বঙ্গবন্ধু টানেলের শেষ পর্বের কাজ চলছে সেপ্টেম্বরে উদ্বোধন

-কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে সুড়ঙ্গপথ অর্থাৎ টানেল নির্মাণ পুরো দেশের জন্য বিস্ময়েরও বিস্ময়।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে সুড়ঙ্গপথ অর্থাৎ টানেল নির্মাণ পুরো দেশের জন্য বিস্ময়েরও বিস্ময়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামের চ্যালেঞ্জিং এ টানেল নির্মাণের সফলতা এখন সরকারের হাতের মুঠোয়। প্রি কমিশনিং, কমিশনিং কাজ সমাপ্ত। মূল টানেলের নির্মাণকাজ বলতে গেলে ৯৯ শতাংই সম্পন্ন। আর পুরো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ। এখন প্রস্তুতি চলছে ট্রায়াল রানের।  মে মাসের শেষার্ধে ট্রায়াল রান হতে পারে। এ কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হলে আগামী সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বঙ্গবন্ধু টানেলের। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বুধবার ঢাকার সেতু ভবনে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর বঙ্গবন্ধু টানেল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে যান চলাচলের জন্য।

জোয়ার ভাটার কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণকাজ ছিল বড় ধরনের চ্যালেঞ্জিং। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলতা এসে গেছে। এখন ক্ষণগণনা চলছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার। এর পর দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি বাণিজ্যনগরী চট্টগ্রাম চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউনে’ গড়ে উঠবে। আর দেশের ইতিহাসে রচিত হবে নতুন এক মাইলফলক।

এ টানেল শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম টানেল। কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত এ টানেল চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্তি ঘটিয়েছে। উত্তর প্রান্তে মহানগরীর পতেঙ্গা। এ টানেলের মূল দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেল অভ্যন্তরে রয়েছে চারলেন বিশিষ্ট দুটি টিউব। যার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। টানেলের দুই প্রান্তে নির্মিত হয়েছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। আর দক্ষিণ প্রান্তে আনোয়ারায় ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যে একটি ফ্লাইওভারও নির্মিত হয়েছে।

বর্তমান সরকারের বহু মেগাপ্রকল্প ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। এরসঙ্গে সফলতার খাতায় যুক্ত হচ্ছে চ্যালেঞ্জিং এ টানেল প্রকল্প। টানেলের পূর্ত কাজ আগেই সম্পন্ন হয়েছে। কনসাল্টিংয়ে নিয়োজিতদের ৫৫ শতাংশ তাদের কাজ সম্পন্ন করে বিদায় নিয়েছেন। অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ কনসালট্যান্ট তাদের শেষ দিকের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। টানেলের দুই প্রান্তে স্থাপিত হয়েছে দুটি লিফট। টোল আদায়ের জন্য স্থাপিত টোলপ্লাজাসহ টানেল অভ্যন্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের সার্বিক ব্যবস্থার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারামুখী প্রথম সুড়ঙ্গ খনন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২ হাজার ৪৪৬ মিটার দীর্ঘ এ খনন কাজ শেষ হয় ২০২০ সালের দুই আগস্ট। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ অর্থাৎ আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গামুখী খনন কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। গেল বছরের সাত অক্টোবর এ খননকাজ সম্পন্ন হয়। টানেলের দুই টিউবের মধ্যে তিনটি ক্রস প্যাসেজের কাজও সম্পন্ন হয়েছে।

এ টানেলের তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে  চীনের চায়না কমিউনিকেশনস অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসিএল)।  টানেল অভ্যন্তরে অগ্নিপ্রতিরোধক বোর্ড, ডেকোরেটিভ বোর্ড স্থাপনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। একেবারে শেষ মুহূর্তের বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক কাজের খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

টানেলের দুই প্রান্তে ১৫ মেগাওয়াট করে দুটি সাবস্টেশন স্থাপিত হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশের মাঝ বরাবর ৩১ মিটার ও দুই প্রান্তে ১৮ মিটার গভীরে এ টানেল নির্মিত হয়েছে। ২০১৫ সালের নভেম্বরে এপ্রকল্প অনুমোদন পায় ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকায়। পরবর্তীতে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকা। পুরো  ব্যয়ের মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা প্রদান করছে। অবশিষ্ট অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পের সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী মেয়াদ বেড়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু

error: Content is protected !!

ট্রায়াল রানের প্রস্তুতি

বঙ্গবন্ধু টানেলের শেষ পর্বের কাজ চলছে সেপ্টেম্বরে উদ্বোধন

আপডেট টাইম : ১১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে সুড়ঙ্গপথ অর্থাৎ টানেল নির্মাণ পুরো দেশের জন্য বিস্ময়েরও বিস্ময়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামের চ্যালেঞ্জিং এ টানেল নির্মাণের সফলতা এখন সরকারের হাতের মুঠোয়। প্রি কমিশনিং, কমিশনিং কাজ সমাপ্ত। মূল টানেলের নির্মাণকাজ বলতে গেলে ৯৯ শতাংই সম্পন্ন। আর পুরো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ। এখন প্রস্তুতি চলছে ট্রায়াল রানের।  মে মাসের শেষার্ধে ট্রায়াল রান হতে পারে। এ কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হলে আগামী সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বঙ্গবন্ধু টানেলের। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বুধবার ঢাকার সেতু ভবনে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর বঙ্গবন্ধু টানেল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে যান চলাচলের জন্য।

জোয়ার ভাটার কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণকাজ ছিল বড় ধরনের চ্যালেঞ্জিং। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলতা এসে গেছে। এখন ক্ষণগণনা চলছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার। এর পর দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি বাণিজ্যনগরী চট্টগ্রাম চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউনে’ গড়ে উঠবে। আর দেশের ইতিহাসে রচিত হবে নতুন এক মাইলফলক।

এ টানেল শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম টানেল। কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত এ টানেল চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্তি ঘটিয়েছে। উত্তর প্রান্তে মহানগরীর পতেঙ্গা। এ টানেলের মূল দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেল অভ্যন্তরে রয়েছে চারলেন বিশিষ্ট দুটি টিউব। যার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। টানেলের দুই প্রান্তে নির্মিত হয়েছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। আর দক্ষিণ প্রান্তে আনোয়ারায় ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যে একটি ফ্লাইওভারও নির্মিত হয়েছে।

বর্তমান সরকারের বহু মেগাপ্রকল্প ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। এরসঙ্গে সফলতার খাতায় যুক্ত হচ্ছে চ্যালেঞ্জিং এ টানেল প্রকল্প। টানেলের পূর্ত কাজ আগেই সম্পন্ন হয়েছে। কনসাল্টিংয়ে নিয়োজিতদের ৫৫ শতাংশ তাদের কাজ সম্পন্ন করে বিদায় নিয়েছেন। অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ কনসালট্যান্ট তাদের শেষ দিকের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। টানেলের দুই প্রান্তে স্থাপিত হয়েছে দুটি লিফট। টোল আদায়ের জন্য স্থাপিত টোলপ্লাজাসহ টানেল অভ্যন্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের সার্বিক ব্যবস্থার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারামুখী প্রথম সুড়ঙ্গ খনন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২ হাজার ৪৪৬ মিটার দীর্ঘ এ খনন কাজ শেষ হয় ২০২০ সালের দুই আগস্ট। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ অর্থাৎ আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গামুখী খনন কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। গেল বছরের সাত অক্টোবর এ খননকাজ সম্পন্ন হয়। টানেলের দুই টিউবের মধ্যে তিনটি ক্রস প্যাসেজের কাজও সম্পন্ন হয়েছে।

এ টানেলের তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে  চীনের চায়না কমিউনিকেশনস অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসিএল)।  টানেল অভ্যন্তরে অগ্নিপ্রতিরোধক বোর্ড, ডেকোরেটিভ বোর্ড স্থাপনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। একেবারে শেষ মুহূর্তের বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক কাজের খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

টানেলের দুই প্রান্তে ১৫ মেগাওয়াট করে দুটি সাবস্টেশন স্থাপিত হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশের মাঝ বরাবর ৩১ মিটার ও দুই প্রান্তে ১৮ মিটার গভীরে এ টানেল নির্মিত হয়েছে। ২০১৫ সালের নভেম্বরে এপ্রকল্প অনুমোদন পায় ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকায়। পরবর্তীতে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকা। পুরো  ব্যয়ের মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা প্রদান করছে। অবশিষ্ট অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পের সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী মেয়াদ বেড়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।


প্রিন্ট