বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে কুষ্টিয়ায় দিনব্যাপী চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পে ১৮০০ রোগীকে নিখরচায় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৬০ জনকে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিণায়নপুরে দোয়ারকা দাস আগারওয়ালা মহিলা কলেজে দোয়ারকা দাস ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এবং বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী এ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আব্দালপুর এলাকার ষাটোর্ধ্ব আছিয়া বেগম বলেন, ছয়/সাত মাস ধরে চোখে ঝাপসা দেখি। এখন তো দূরের মানুষ দেখি কিন্তু কে তা চিনতে পারিনা। নাতি-নাতনিদের চিনতে হয় মুখের কথা শুনে। লোকে বলে ভালো ডাক্তার দিয়ে চোখ দেখাতে, তবে টাকা কোথায় পাবো? বড় ডাক্তারকে চোখ দেখাতে সে মেলা টাকা লাগে। গরিব মানুষ ঢাকায় গিয়ে চোখ দেখাবো এমনটা স্বপ্নেও আসে না।
গ্রামের ডাক্তারদের কাছ থেকে ড্রপ কিনি চোখে দেই, একটু ভালো দেখি আবার আগের মতো হয়ে যায়। ভেবেই নিয়েছিলাম যে এভাবেই দিন কাটাতে হবে। পরিষ্কার কিছু আর হয়তো দেখা হবে না। কারণ দুনিয়া দেখার সম্বলই চোখ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শুনেছি এই কলেজে নাকি ঢাকা থেকে বড় ডাক্তাররা আসবে তাই সকাল থেকে এসেছি এখানে চোখ দেখাবো। টাকা নেয় না, আবার অপারেশনও নাকি এমনি করে দেয়।
আছিয়া বেগম বলেন, চোখের ডাক্তাররা মেলা টাকা নেয়। কিন্তু এখানে ফ্রি চোখ দেখে, ওষুধ দেয়, চশমা লাগলে চশমা দেয়, অপারেশনও করে দেয় তাই এখানে এসেছি।
দিনব্যাপী এ চক্ষু ক্যাম্পে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ফ্যাকো অ্যান্ড রেটিনা স্পেশালিস্ট প্রফেসর ডা. মো. সালেক আহমেদের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম চিকিৎসাসেবা দেন। এর মধ্যে ছিলেন ডা. মুত্তাকিন মনির, ডা. জেরিন পারভীন, ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বি। এছাড়াও ৪জন অপট্রোমিটেক ও ৬জন মেডিকেল সাপোর্ট।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ফ্যাকো অ্যান্ড রেটিনা স্পেশালিস্ট প্রফেসর ডা. মো. সালেক আহমেদ বলেন, এ চক্ষু ক্যাম্পের মাধ্যমে আমরা চক্ষু রোগীদের নিখরচায় ব্যবস্থাপনা, চশমা ও ওষুধ দিয়েছি। সেই সঙ্গে যেসব রোগীদের চোখ অপারেশন করা প্রয়োজন তাদের নির্বাচন করেছি।
দিনব্যাপী চলা এ ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন দোয়ারকা দাস আগারওয়ালা মহিলা কলেজের ১২০জন শিক্ষার্থীসহ দোয়ারকা দাস ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যরা।