এস. এম সালমান হৃদয়ঃ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে কিছু নাম এমন আছে, যাদের উপস্থিতি দৃশ্যমান না হলেও দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং বিরোধী রাজনীতির ভাষা গঠনে অদৃশ্যভাবে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই নেতৃত্বের অন্যতম। লন্ডনের দূর প্রবাসে থেকেও তিনি দেশের রাজনীতিকে ধারাবাহিকভাবে প্রভাবিত করছেন। তার নেতৃত্বের বহুমাত্রিক দিক, জীবনদর্শন এবং সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে দৈনিক পীরগাছা সংবাদ পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রযুক্তি দল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও গাবতলী উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য শহিদুল ইসলাম রতন।
শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, তারেক রহমান কেবল বিএনপির নেতৃত্বই দেন না, তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। তিনি লন্ডন থেকেও দলকে সংগঠিত রাখছেন, আন্দোলনের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করছেন এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর দল পরিচালনার মাধ্যমে রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নতুন মাত্রা দিচ্ছেন। তাঁর মতে, “একজন নেতার সরাসরি উপস্থিতি নয়, প্রভাবই রাজনীতিকে গঠন করে। তারেক রহমান সেই প্রভাবের এক প্রতীক।”
বিএনপির ভেতরে তারেক রহমানের উত্থান ছিল আধুনিক, তরুণমুখী এবং সংগঠিত নেতৃত্বের একটি যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত। তিনি তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত বৈঠক করেছেন, স্থানীয় নেতৃত্বকে ক্ষমতায়ন করেছেন এবং দলকে ডিজিটাল মাধ্যমে পরিচালনার নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, “তারেক রহমানের ধারণা ‘রাজনীতি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া’ বিএনপির তৃণমূলকে শক্তিশালী করেছে। এ কারণে স্থানীয় নেতৃত্ব ও ভোটারদের সঙ্গে দলের সংযোগ নতুন মাত্রা পেয়েছে।”
২০০১ সালের নির্বাচনের পর তারেক রহমান তরুণ নেতৃত্বকে সংযুক্ত করেছেন, কেন্দ্র-তৃণমূল সম্পর্ক জোরদার করেছেন এবং সাংগঠনিক পুনর্গঠন করেছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা সেই সময়টিকে তাঁর “উদীয়মান নেতৃত্বের সময়” হিসেবে উল্লেখ করেন। শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, “রাজনীতি শুধু উত্তরাধিকার বা অভিজ্ঞতা দিয়ে হয় না; মাঠের বাস্তবতা বোঝা, কৌশলগত বিশ্লেষণ এবং নেতৃত্বের সক্ষমতা প্রয়োজন। তারেক রহমান সেই যোগ্যতা প্রদর্শন করেছেন।”
২০০৭ সালের ১/১১’র ঘটনায় তিনি গ্রেপ্তার হন, নির্যাতনের শিকার হন এবং পরে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান। নির্বাসনে থেকেও তিনি দলের মনোবল ধরে রাখেন, অনলাইন বৈঠক ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সংগঠন পরিচালনা করেন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দলের অবস্থান দৃঢ় রাখেন। শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, “নির্বাসনে থেকেও তারেক রহমান দলের নেতৃত্ব ধরে রেখেছেন। ডিজিটাল রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা তাঁর নেতৃত্বকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।”
শহিদুল ইসলাম রতন আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান এবার প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন জন্মভূমি বগুড়ায়। ৪১ (বগুড়া-৬) সদর আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর দলীয় নবীন ও প্রবীণ নেতারা উচ্ছ্বাসিত। দেশের সর্বত্র থেকে নেতা-কর্মীরা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁকে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে চাইছেন।
বগুড়া সদর উপজেলা, যা একটি পৌরসভা ও এগারোটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এবং প্রায় সাড়ে চার লাখ ভোটার রয়েছে, এই এলাকার মানুষ দেখাতে চান তারেক রহমান কেবল দলের জন্য নয়, দেশের গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী নীতির জন্যও শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, “ইতিপূর্বে এই আসন থেকে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিজয়ী হয়েছেন। এবার প্রথমবার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তারেক রহমান এখানে দাঁড়াচ্ছেন। নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাসিত এবং আশাবাদী যে তিনি নির্বাচিত হয়ে দেশের জনগণের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।”
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানের জাতীয়তাবাদী দর্শন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর দাঁড়ানো। শহিদুল ইসলাম রতন মনে করেন, “বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, নির্বাচনী প্রশ্নবিদ্ধতা ও বিরোধী রাজনীতির সংকোচনে তারেক রহমানের নেতৃত্ব গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
সাক্ষাৎকারের শেষ অংশে শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, “ইতিহাস কখনো কারও জন্য অপেক্ষা করে না। কিন্তু ইতিহাসের মোড় ঘোরে কিছু মানুষের কারণে। তারেক রহমান সেই মোড়ের একজন সম্ভাব্য নির্মাতা। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথ যতদিন অব্যাহত থাকবে, ততদিন তিনি আলোচনায় ও বিশ্লেষণে অনিবার্য চরিত্র হিসেবে থাকবেন।”
প্রিন্ট

বালিয়াকান্দিতে মোবাইলকোট পরিচালনায় দুই ট্রলি চালককে জরিমানা 
এস. এম সালমান হৃদয়, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি 




















