ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

এক মঞ্চে আ.লীগ নেতা, ওসি ও বিএনপি নেতা!

- একই মঞ্চে আওয়ামী লীগ নেতা ও অধ্যক্ষ মোহন মিয়া, ওসি মোঃ শহীদুল্লাহ এবং বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান সোহাগ; পাশে ভাইরাল হওয়া ফেসবুক স্ক্রিনশট।

মোঃ ইপাজ খাঁঃ

 

হবিগঞ্জের মাধবপুরে চৌমুহনী খুর্শিদ হাই স্কুল এন্ড কলেজে আয়োজিত মাদকবিরোধী সচেতনতা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।গত রবিবার(১৬ নভেম্বর)প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রিয়া ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মোহন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শহীদুল্লাহ। একই মঞ্চে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগসহ বিএনপির আরও কয়েকজন বিএনপি নেতা। ক্ষমতাসীন দল,প্রায় বিরোধী দল ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের একই মঞ্চে উপস্থিতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

অধ্যক্ষ মোহন মিয়া সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর ও আওয়ামী লীগ নেতা রহম আলীর ঘনিষ্ঠ হিসেবেও এলাকায় পরিচিত। রাজনৈতিক পরিচয়সহ তার পুরোনো ছবি আবারও ভাইরাল হওয়ায় নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় একটি অংশের অভিযোগ—তিনি অতীতে আওয়ামী লীগের প্রতি এতটাই অনুগত ছিলেন যে স্বতন্ত্র এমপি ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন তার কলেজে গেলে নাকি যথাযথ অভ্যর্থনা দেওয়া হয়নি এবং এমপি হয়েও তিনি প্রটোকল পাননি। পাশাপাশি কলেজ পরিচালনা নিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগও মাঝে মাঝে ওঠে বলে দাবি করছে আরেকটি মহল।

 

তবে সমর্থকদের দাবি, মোহন মিয়া ছিলেন উপজেলার একমাত্র নেতা যিনি আগে প্রকাশ্যে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন এবং বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এদিকে এক মঞ্চে ওসি, বিএনপি নেতা ও আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে জনমনে ভিন্নমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ মনে করছেন মাদকবিরোধী কর্মসূচিতে রাজনীতি প্রধান বিষয় নয়, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন—প্রশাসনের নিরপেক্ষতা কি বজায় থাকল?

 

বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। কয়েকজন জানিয়েছেন,অতীতে আওয়ামী লীগ তাকে ব্যবহার করেছে।বর্তমানে বিএনপি নেতারা তার কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছেন। ঘুরেফিরে ঘটনা একই।

 

এদিকে সমালোচনা ও আলোচনা চলমান থাকলেও অধ্যক্ষ মোহন মিয়া নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তিনি বলেন, “পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে একসময় দল করতাম। আমি কোনো অপরাধ বা বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই। রাজনীতি করা খারাপ কিছু না। আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি।”

 

চৌমুহনী খুর্শিদ হাই স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচি এবং একই মঞ্চে আ.লীগ নেতা, ওসি ও বিএনপি নেতার উপস্থিতি নিয়ে মাধবপুরজুড়ে এখনো ব্যাপক আলোচনা চলছে।

 

 

 

 


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ভূরুঙ্গামারীতে ওসি’র প্রেস ব্রিফিং

error: Content is protected !!

এক মঞ্চে আ.লীগ নেতা, ওসি ও বিএনপি নেতা!

আপডেট টাইম : ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
মোঃ ইপাজ খাঁ, মাধবপুর ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :

মোঃ ইপাজ খাঁঃ

 

হবিগঞ্জের মাধবপুরে চৌমুহনী খুর্শিদ হাই স্কুল এন্ড কলেজে আয়োজিত মাদকবিরোধী সচেতনতা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।গত রবিবার(১৬ নভেম্বর)প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রিয়া ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মোহন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শহীদুল্লাহ। একই মঞ্চে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগসহ বিএনপির আরও কয়েকজন বিএনপি নেতা। ক্ষমতাসীন দল,প্রায় বিরোধী দল ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের একই মঞ্চে উপস্থিতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

অধ্যক্ষ মোহন মিয়া সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর ও আওয়ামী লীগ নেতা রহম আলীর ঘনিষ্ঠ হিসেবেও এলাকায় পরিচিত। রাজনৈতিক পরিচয়সহ তার পুরোনো ছবি আবারও ভাইরাল হওয়ায় নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় একটি অংশের অভিযোগ—তিনি অতীতে আওয়ামী লীগের প্রতি এতটাই অনুগত ছিলেন যে স্বতন্ত্র এমপি ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন তার কলেজে গেলে নাকি যথাযথ অভ্যর্থনা দেওয়া হয়নি এবং এমপি হয়েও তিনি প্রটোকল পাননি। পাশাপাশি কলেজ পরিচালনা নিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগও মাঝে মাঝে ওঠে বলে দাবি করছে আরেকটি মহল।

 

তবে সমর্থকদের দাবি, মোহন মিয়া ছিলেন উপজেলার একমাত্র নেতা যিনি আগে প্রকাশ্যে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন এবং বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এদিকে এক মঞ্চে ওসি, বিএনপি নেতা ও আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে জনমনে ভিন্নমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ মনে করছেন মাদকবিরোধী কর্মসূচিতে রাজনীতি প্রধান বিষয় নয়, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন—প্রশাসনের নিরপেক্ষতা কি বজায় থাকল?

 

বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। কয়েকজন জানিয়েছেন,অতীতে আওয়ামী লীগ তাকে ব্যবহার করেছে।বর্তমানে বিএনপি নেতারা তার কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছেন। ঘুরেফিরে ঘটনা একই।

 

এদিকে সমালোচনা ও আলোচনা চলমান থাকলেও অধ্যক্ষ মোহন মিয়া নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তিনি বলেন, “পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে একসময় দল করতাম। আমি কোনো অপরাধ বা বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই। রাজনীতি করা খারাপ কিছু না। আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি।”

 

চৌমুহনী খুর্শিদ হাই স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচি এবং একই মঞ্চে আ.লীগ নেতা, ওসি ও বিএনপি নেতার উপস্থিতি নিয়ে মাধবপুরজুড়ে এখনো ব্যাপক আলোচনা চলছে।

 

 

 

 


প্রিন্ট