নাটোরের লালপুর উপজেলার বড়বড়িয়া বাজার থেকে খাটখইর বাজার পর্যন্ত মাত্র ১.৪ কিলোমিটার রাস্তার ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থা নিয়ে বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার অন্তত ১০টি গ্রামের সাধারণ জনতা। বিকল্প সড়ক না থাকায়, রাস্তাটি দিয়ে প্রতিনিয়ত সীমাহীন দূর্ভোগ সহ্য করে চলাচল করছে পথচারী এবং বিভিন্ন যানবাহন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে সরোজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আরবার ইউনিয়নের অন্তর্গত বড়বড়িয়া বাজার থেকে শুরু হওয়া রাস্তাটি বড়বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে খাটখইর বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত, যার মোট দৈর্ঘ্য ১.৪ কিলোমিটার। এই রাস্তাটি চিথলিয়া, লোকমানপুর, বাগাতিপাড়া, ধরবিলা, দিঘা, চৌমুহনী, বাহাদুরপুর, ঢুষপাড়া, হাসেমপুর এবং রঘুনাথপুর গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি খারাপ হওয়ায় এলাকাবাসীকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
খাটখইর যাওয়ার পথে রাস্তাটির অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে গিয়ে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বড়বড়িয়া বাজার, বড়বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এবং খাটখইর বাজারের পূর্বপাশে রাস্তাটির পিচ উঠে গিয়ে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যা যাত্রীদের জন্য মারাত্মক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খাটখইর গ্রামের বাসিন্দা ফখরুল (৬০) জানান, “এই রাস্তাটি দিয়ে বড়বড়িয়া, খাটখইর, চিথলিয়া, লোকমানপুর, দিঘা, চৌমুহনীসহ অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। এসব গ্রামের মানুষকে রাস্তাটি দিয়ে লালপুর থানা, উপজেলা পরিষদ, আবদুলপুর রেল জংশন, আবদুলপুর সরকারি কলেজ, লোকমানপুর কলেজ, চৌমুহনী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মিল্কিপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বড়বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সালামপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বড়বড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু ভাঙা রাস্তার কারণে প্রায়ই বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।”
বড়বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোসা: সুমাইয়া আক্তার সুমি বলেন, “স্কুলের সামনে রাস্তা ভেঙে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় কিছুদিন আগে এক ভিক্ষুক তার হুইলচেয়ারসহ পাশের নিচু জমিতে পড়ে আহত হন। এছাড়া ভাঙা রাস্তার জন্য কোন যানবাহন চলাচল করতে চায় না, ফলে স্কুলে যাওয়ার সময় দূর্ভোগ পোহাতে হয়। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা হলে স্কুলে যাওয়া সহজ হবে।”
হাসেমপুর গ্রামের শিক্ষক সুশান্ত পাল জানান, “রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় অনেক দূরপথ ঘুরে আমাকে কর্মস্থলে যেতে হয়। এছাড়া অত্র এলাকার মানুষকে আবদুলপুর রেল স্টেশন, উপজেলা পরিষদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে আসা-যাওয়ার সময় যানবাহন সংকটে পড়তে হয়।”
বড়বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোফাজ্জল হোসেন বলেন, “এই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি ভেঙে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সাধারণত গাড়ি-ঘোড়া আসতে চায় না। ফলে স্কুল-কলেজ গামী শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষকে প্রায় বিপাকে পড়তে হয়। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জানান, “রাস্তাটি মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রিন্ট