রংপুরের বদরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
শুক্রবার (১৬ জুন) দুপুরে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির এক জরুরি সভা শেষে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বেশ কিছুদিন ধরে ওই ছাত্রীকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌনপীড়ন চালাতেন। বিষয়টি যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্য ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় ফেল করানোর পাশাপাশি নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। ফলে ওই ছাত্রী ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনি। তবে ১০ জুন দুপুরে প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে আপত্তিকর কথাবার্তা বললে তা রেকর্ড করেন ওই ছাত্রী।
বিষয়টি নিয়ে সে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারা বিষয়টি এলাকার লোকজনকে জানালে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিদ্যালয়ে তালা ঝোলানোর পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন। উপজেলা ও থানা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে শান্ত করতে ব্যর্থ হন। কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে বিদ্যালয় পাহারায় বসেন- যাতে করে সেখানে প্রধান শিক্ষক প্রবেশ করতে না পারেন।
রাতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে বদরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে দামোদরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ঝাড়পাড়াস্থ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান।
এদিকে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মমতাজ হোসেন বলেছেন, ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি আব্দুর রাজ্জাককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া তদন্ত কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।