কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার দেখানোর জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা ও জনবল সংকটের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের জোতভালুকা গ্রামের হাফিজা খাতুন (৫০) মারা যান। তার আত্মীয় রোমেসা খাতুন জানান, রোববার রাতে শাশুড়ির বুকে ব্যথা শুরু হলে, তারা চিকিৎসার জন্য সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে যান। সেখানে দীর্ঘ এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটেন এবং পরবর্তীতে আরও আধা ঘণ্টা ডাক্তার দেখানোর জন্য অপেক্ষা করেন। বারবার অনুরোধ করেও তারা ডাক্তার দেখাতে পারেননি। শেষমেশ, দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হাফিজা খাতুন মেঝেতে পড়ে যান। পরে তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার জানান, তিনি মারা গেছেন।
রোমেসা খাতুন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে তার শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটের কারণে হাসপাতাল সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। উপসহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিয়ে হাসপাতাল চালানো হচ্ছে।"
অধিকাংশ চিকিৎসক ও নার্সের অভাবের কারণে হাসপাতালটিতে ভোগান্তি চলছে। কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫৯টি পদে ৯৮টি শূন্য, এর মধ্যে ২০টি চিকিৎসক পদ ফাঁকা। বর্তমানে ১০ জন চিকিৎসক কাজ করছেন, যার মধ্যে তিনজন ছুটিতে আছেন।
উপ-সহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাইদুল আলম বলেন, "আমি জানি না, কক্ষে কী ঘটেছে। তবে রোগী দেখতে আসার জন্য একজন চিকিৎসক দরকার ছিল, কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ চালানো হচ্ছে।"
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিপাশা বৈশাখী জানান, মৃত রোগীটি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৯ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও, এখানে প্রয়োজনীয় জনবল নেই। হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ৯০ থেকে ১২০ রোগী ভর্তি হন এবং বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪০০-৫১০ রোগী সেবা নেন। এর মধ্যে জরুরি বিভাগে ১৫০ রোগী সেবা নেয়।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শামীমা আক্তার জানান, রোগীর চাপ অনেক, কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবল নেই। বর্তমানে উপসহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
এ ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস. এম. মিকাইল ইসলাম বলেন, "মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং জনবলের সংকট সমাধানে জেলার সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।"
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫