নাটোরের লালপুরে সরকারি খাস জমি দখল করে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ এবং গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর ২০২৪) সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বেড়িলাবাড়ি গ্রামের জমির উদ্দীনের ছেলে মহিবুর রহমান সরকারি খাস জমি জোরপূর্বক দখল করে একটি ঘর নির্মাণ করেছেন এবং সেখানে রোপিত ৮টি মেহগনি গাছ কেটে নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বসন্তপুর মৌজায় হাজী মোঃ নাজিম উদ্দীনের (৮০) নিজস্ব মালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে একটি সরকারি রাস্তা ছিল। ওই রাস্তা থেকে চলে আসা এই খাস জমিটি ছিল তার দখলে। ২০১৩ সালে সেখানে তিনি কয়েকটি মেহগনি গাছ রোপণ করেছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালে হঠাৎ রাতের অন্ধকারে মহিবুর রহমান সেখানে একটি ঘর নির্মাণ করেন।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করলে ইউএনও অফিস ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা খন্দকার আহসান হাবীবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। ১০৪৯ স্মারক মূলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে ভূমি কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আরএস ১৫ নং মৌজায় ২৮৫ নং দাগের ০.৬৮ একর জমি ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি জমি। মহিবুর রহমান অবৈধভাবে উক্ত সরকারি জমি দখল করে রেখেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদন জমা হওয়ার এক বছর পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উপজেলা প্রশাসন। গত বুধবার (৬ নভেম্বর ২০২৪) লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পুনরায় অভিযোগ দাখিল করেন হাজী নাজিম উদ্দীনের নাতনি জাহাঙ্গীর (৩৫)। অভিযোগে বলা হয়, গত রবিবার (৩ নভেম্বর ২০২৪) রাতে ওই জমিতে রোপিত মেহগনি গাছগুলো রাতের অন্ধকারে কে বা কারা কেটে নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মান্নান ও যাকাত আলী জানান, হাজী নাজিম উদ্দীনের মালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে সরকারি রাস্তা হওয়ার পর থেকে ওই জায়গাটি তার ভোগদখলে ছিল। স্থানীয়রা ওই রাস্তা দিয়ে মাঠে যাতায়াত ও ফসল আনা-নেওয়া করত। কিন্তু মহিবুর ২০২৩ সালে রাতের অন্ধকারে ঘর নির্মাণ করে জমিটি দখল নিলে যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে মহিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাড়ির আঙিনায় গাছের মোটা ডালপালা এলোমেলোভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মহিবুরের স্ত্রী জানান, তারা জমি না থাকার কারণে খাস (সরকারি) জমিতে ঘর নির্মাণ করেছেন এবং গাছ কাটা বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। আঙ্গিনায় থাকা গাছের ডালপালা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "এগুলো আমার স্বামী মহিবুর বসন্তপুর বিল থেকে নিয়ে এসেছেন।"
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, "মহিবুর সরকারি জমিতে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করেছেন, তবে গাছ কাটার বিষয়টি জানি না।"
এ ব্যাপারে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, "অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদি ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়, তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।