সবুজের শ্যামলে বেষ্টিত নয়নাভিরাম অজপাড়া গায়ের মধ্যে ইতিহাসের কালের স্বাক্ষী হিসেবে প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছে খোকসায় অবস্থিত ফুলবাড়ি জরাজীর্ণ মঠটি ।
গফুর মুন্সির ৬২ শতক বসত ভিটার পাশে একাংশে অবস্থিত এই মঠ । গফুর মুন্সির বাবা মরহুম বাছের মুন্সি বহু আগে এই জমি কিনেছিলেন । সেই থেকে আর কেউই এই মঠটি ধ্বংস করেননি ।
আঙিনার এক কোণে রয়েছে দোতলা মঠ আর ওপর কোণে আছে একতলা মন্দির আর তৃতীয় কোণে আছে ত্রিভুজাকৃতির নাগ মন্দির । বর্তমানে সাত তলা বিশিষ্ট মঠটি মাটির নিচে বসে এখন দোতলা অবশিষ্ট রয়েছে । মন্দির গুলো ছোট ছোট প্রাচীন আমলের ইট দিয়ে তৈরি ।
মুঘল রাজত্বের প্রথম দিকে অথবা পাঠান রাজত্বের শেষ ভাগে ব্রজ বল্লভ ক্রোড়ী নামে এক বৈষ্ণব ধনী ব্যবসায়ী এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন এবং রাধারমন বিগ্রহ স্থাপন করেন।
ফুলবাড়ি মঠ সম্পর্কে আরও জানা যায়, বাংলা ১৩৪৩ সালে বিখ্যাত ভারত বর্ষ পত্রিকা তারাপদ দাস নামে একজন লেখক লিখেছেন, ফুলবাড়ি মঠের গৃহটি পাবনার জোড় বাংলার মন্দির ধরণের । এই মন্দিরের দেয়ালের গায়ে শিরভাগে বহু দেবদেবী বিচিত্র মূর্তি দেখতে পাওয়া যায় । তবে এই মঠ কে ঘিরে এখনো রূপকথার মত এলাকায় বহু গল্প ছড়িয়ে আছে ।
শোনা যায়, দেবদেবীরা সাপের রূপ মঠ আঙ্গিনায় ঘুরতে দেখা যায় । আবার চোখের পলকেও অদৃশ্য হয়ে যায় । বহু আগে একজন সাপুড়িয়া সাপ ধরতে এসে মারাও গিয়েছেন । আবার অনেকে রং বেরঙের হাজার হাজার সাপের সম্মুখীন হয়েও ভয়ে পালিয়েছেন ।
স্থানীয় একজন গফুর সাপুড়িয়া বলেন, অনেকবার মঠে সাপ ধরতে গিয়েছি নাগমনির আশায় । সাপের গর্জনে ভয়ে চলে এসেছি। লক্ষ টাকা দিলেও আমি আর ওখানে যাব না । এখনো নাগ মন্দিরে অমাবস্যা-পূর্ণিমায় সন্ধ্যা প্রদীপ দেওয়া হয় । সপ্তাহে এক দু'বার দুধ কলাও দিয়ে যায় মানত করা ভক্তরা ।
বর্তমানে মঠটির মালিক মুন্সি গফুর বলেন, এই মঠকে ঘিরে বহু রহস্যময় কাহিনী জড়িয়ে আছে । আমি রাতে মঠে আলোর গোল্লা দেখেছি । মাঝেমধ্যেই দেখি । বড় বড় সাপও চোখে পড়ে আবার পলকে হারিয়ে যায়। আমার বাড়ির ঘরের মধ্যেও সাপ ধরা জড়াজড়ি করে । আমরা এখানে কোন অনিষ্ট করি না, করতে দিই না । প্রতিদিনই মঠ দেখতে লোকজন আসে । ভারত থেকেও মাঝে মধ্যে পর্যটক আসে দেবদেবীরা সাপের রূপ মঠ আঙ্গিনায় ঘুরতে ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha