আজকের তারিখ : নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ৪:২২ পি.এম || প্রকাশকাল : জুন ১৯, ২০২৪, ১:৪৭ পি.এম
মধুখালীতে ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেফতার
মধুখালীতে ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০। এ ব্যাপারে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ফরিদপুর জেলার মধুখালী এলাকায় বসবাসকারী ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রীকে (১৩) গত ২৮ মে
সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। পরবর্তীতে স্কুল ছুটি হওয়ার পরও সে বাড়ীতে না ফিরলে তার পিতাসহ পরিবারের লোকজন নিকটাত্মীয় স্বজনদের বাসায় এবং বিভিন্ন জায়গায় খুঁজাখোঁজি করতে থাকেন। খুঁজাখোঁজি করে কোথায় তার কোন সন্ধান না পেয়ে মেয়েটির পিতা মধুখালী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন, যার ডায়রী নম্বর-১৩৫৯, তারিখ-২৯/০৫/২০২৪ ।
এর পর ভিকটিমের পিতার খুঁজাখোঁজির এক পর্যায় গত ০২ জুন মধুখালী থানাধীন একটি বাজারে মেয়েটিকে’ খুজে পাওয়া যায়। এরপর তার পরিবারের লোকজন তাকে নিখোঁজের কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় গত ১ জুন রাত আনুমানিক ১:৩০ মিনিটে আসামী তুহিন অজ্ঞাত আরো ২ জন ব্যক্তির সহযোগীতায় তাকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে তুহিনের বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায় উক্ত বাড়ীর একটি কক্ষের ভিতরে সোহান ও অন্তর অবস্থান করছে। এরপর তাকে উক্ত কক্ষের ভিতরে নিয়ে আসামী তুহিন, সোহান ও অন্তর মিলে জোরপূর্বক ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে।
উক্ত ঘটনায় মেয়েটি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবারের লোকজন তাকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করেন।
উক্ত ঘটনায় মেয়েটির পিতা বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী (১৩)’কে অপহরণ করে গণধর্ষণের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ধর্ষক সোহান, তুহিন ও অন্তরসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২ জনের বিরুদ্ধে একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর-১২, তারিখ-০৯/০৬/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩)/৩০।
উক্ত মামলার বিষয়টি জানতে পেরে সকল আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এই গণধর্ষণের ঘটনা ফরিদপুর সহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
উক্ত ঘটনায় কিশোরী জানায়, প্রায় দেড় মাস আগে সে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য গেলে অন্তর জামান অন্তু এবং তুহিন বিশ্বাস নামে দুই ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে পরিচয় হয়। তারা দুজন ওই কিশোরীকে সাহায্যের নামে সখ্যতা গড়ে তোলে। এরপর ওই কিশোরীকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখে। ধর্ষণের ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে দীর্ঘদিন অন্তু এবং তুহিন কিশোরীকে জিম্মি করে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্তু এবং তুহিন ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করলেও তারা মাদকসেবী। সে সূত্রে মাদক কেনাবেচার সময় মাদক কারবারি গ্রেফতারকৃত সোহান শাহের কাছ থেকে ফ্রি মাদক পেতে ভুক্তভোগী কিশোরীর আপত্তিকর অবস্থার ছবি সোহানকে দেয় অন্তু এবং তুহিন। এরপর মাদক ব্যবসায়ী সোহান কিশোরীকে ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিল।
উক্ত গণধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী ১৩ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সকল আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১৯ তারিখ সকাল আনুমানিক ০৬:৩০ মিনিটে র্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের উক্ত আভিযানিক দল র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতা ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানাধীন নাকোল এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে।
উক্ত অভিযানে চাঞ্চল্যকর ফরিদপুর জেলার মধুখালীতে ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী ১৩ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় পলাতক অন্যতম প্রধান আসামী সোহান ওরফে টেরা সোহান (২৫), পিতা-শাহ আলম, সাং-গোন্দারদিয়া, থানা-মধুখালী, জেলা-ফরিদপুর’কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha