কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পূর্বশত্রুতার জেরে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের ওই নেতা পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া শহরে এক আত্মীয়ের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেছেন এস এস আল হোসাইনের (সোহাগ) স্ত্রী আঞ্জুমান আরা। মামলা হওয়ার পর থেকেই হোসাইন পলাতক। সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার সময় ঢাকার একটি শপিং মলে তাঁদের কেনাকাটা করার সিসিটিভি ফুটেজ সাংবাদিকদের দেখানো হয়।
এস এস আল হোসাইন ভেড়ামারা উপজেলার পৌর ৪ নম্বর ওয়ার্ড নওদাপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এস এস আল হোসাইনের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা ছাড়া তাঁর বড় মেয়ে সুমাইয়া হোসাইন (১৪) ও ছোট মেয়ে সাইদা হোসাইন (৭) উপস্থিত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আঞ্জুমান আরা বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে তাঁরা ঢাকায় বসবাস করছেন। তাঁর স্বামী দীর্ঘদিন কিডনিতে ও পায়ে মারাত্মক সংক্রামক রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভালোভাবে চলাফেরাও করতে পারেন না। হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর পালিয়ে থাকতে থাকতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর বাজারে একটি চায়ের দোকানে প্রতিপক্ষের হামলায় মো. তুষার নামের এক যুবক নিহত হন। তুষার ভেড়ামারার মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদ ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় তুষারের বাবা রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলায় এস এস আল হোসাইনকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে।
আঞ্জুমান আরার দাবি, তাঁর স্বামীকে এজাহারে দুই নম্বর আসামি করা হলেও ঘটনার সময় তিনি দুই মেয়েসহ পরিবার নিয়ে রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। এজাহারে উল্লেখিত ঘটনার সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্বামীসহ ঢাকার নিউমার্কেটের তৃতীয় তলায় টপ টেন নামের একটি দোকানে তাঁরা ঈদের কেনাকাটা করছিলেন। সেই সময়ের সিসিটিভির ফুটেজ গণমাধ্যমকর্মীদের দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই তারিখ ও সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ প্রমাণ করে যে আমার স্বামী নির্দোষ। শুধু বিরোধী দলের সমর্থক হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তাঁকে হত্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে স্বামীকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তিনি।
এ সময় দুই মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আঞ্জুমান আরা বলেন, বড় মেয়ে মিরপুর মডেল একাডেমিতে অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে অন্য একটি বিদ্যালয়ে নার্সারিতে পড়ে। মামলা হওয়ার পর থেকে স্বামীসহ আমরা সবাই একপ্রকার পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মেয়েদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
মামলার বাদী মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার সময় ছেলেকে যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তোমাকে কারা মেরেছে, ছেলে তখন হোসাইনের নামও বলেছিল। কারও প্ররোচনায় মামলায় আসামি করেছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, যদি সিসিটিভি ফুটেজ সত্য হয়, তাহলে আল হোসাইন বেঁচে যাবেন।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা ভেড়ামারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাভেদ পারভেজ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত এখনো চলছে। যদি কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হন, তাহলে তাঁকে তদন্ত শেষে অব্যাহতি দেওয়া হবে। নির্দোষ কোনো ব্যক্তির নাম মামলায় রাখা হবে না।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha