২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সকালের দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সংগ্রামপুর গ্রামের একটি ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে খেজের আলী মন্ডল নামে এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের দেয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটস্থলে গিয়ে খেজের আলীর লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় পরেরদিন নিহত খেজের আলীর ভাই নাজির আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার দুই মাসেও মামলার কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে দেওয়া হয়।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডের ৫ মাস পর রহস্য উন্মোচন করেতে সক্ষম হন পিবিআই কর্মকর্তারা। তদন্তের এক পর্যায়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশ্চিত হন পারিবারিক বিরোধ এবং অভিমান থেকে বাবা খেজের আলীকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করেন তার একমাত্র ছেলে আনোয়ার হোসেন।
রোববার বেলা ২টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কুষ্টিয়া কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পিবিআই কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শহীদ আবু সারোয়ার।
তিনি বলেন, মামলাটির তদন্ত ভার তাদের উপর আসার পর তারা সেটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে সরোজমিন তদন্ত এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে পিবিআই এক পর্যায়ে নিশ্চিত হয় এই হত্যাকাণ্ডে খেজের আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন জড়িত। নিশ্চিত হওয়ার পর গত শনিবার সন্ধায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআইর কুষ্টিয়া কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে তার দেখানো জায়গা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদালটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার শহীদ আবু সারোয়ার আরো জানান, আনোয়ার তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে খেজের আলীর সামনে আনোয়ারকে তার ছেলে শিশির সামান্য বিষয়ে মারধর করে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ না করায় বাবা খেজের ওপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয় আনোয়ারের। সেই রাগে-ক্ষোভে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ার তার বাবা খেজের আলীকে গোপন কথা আছে বলে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে পেছন থেকে কোদাল দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করে।
পরে রোববার বিকেলে আনোয়ারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে আদালতের কাছে আনোয়ার তার দোষ স্বীকার করেন। পরে আদালত আনোয়ারের জামিন আবেদন বাতিল করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।