মিথ্যা তথ্য দেওয়ায়, নরসিংদীর বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের আট বছরের বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা, শেখ আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে এবং সেই তথ্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করায় সাংবাদিক ও সম্পাদক এবং প্রকাশকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ৫০ লক্ষ টাকার মানহানি মামলা করেছেন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের বিশেষ প্রতিনিধি, মোঃ শফিকুল ইসলাম সুমন। নরসিংদী বিজ্ঞ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। গত ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং নরসিংদী সি আর -১০৪১।
মামলার আসামিরা হলেন- দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার বেলাবো প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ আব্দুল্লাহ, এই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আশরাফ আলী, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসান এবং বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের, মৃত আসমত আলীর ছেলে বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা, শেখ আতাউর রহমান।
এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে দৈনিক গণকণ্ঠ ও দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এবং দুর্নীতি দমনে তথ্য প্রকাশকারী সংস্থার নরসিংদীর জেলার পরিচালক মো: আলম মৃধা, দৈনিক বজ্র শক্তির নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি মোঃ আলতাব হোসেন এবং মনোহরদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল ভয়েজ বিডি২৪.কমের সম্পাদক ও প্রকাশক, কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিলকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মোঃ শফিকুল ইসলাম সুমন দীর্ঘদিন ধরে বহুল প্রচারিত, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩শে আগস্ট দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের শেষ পৃষ্ঠার নিচের অংশে "নরসিংদীর বেলাবতে সন্ধান মিলেছে আট বছরের এক বীর মুক্তিযোদ্ধার" শিরোনামে ২-৩ নং সাক্ষিগনকে সাথে নিয়ে সরজমিনে তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাছায় পূর্বক বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে বিগত ২৭ আগস্ট তারিখে উক্ত সংবাদের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করেন।
এছাড়াও জাতীয় দৈনিক দেশেরপত্র, দৈনিক বজ্রশক্তি, দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা এবং নরসিংদীর বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক আজকের চেতনা এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।
এর প্রেক্ষিতে শেখ আতাউর রহমান অত্র মামলার বাদিকে, বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে বাংলাদেশ বুলেটিনের বেলাবো প্রতিনিধি, ফয়সাল আহমেদ আব্দুল্লাহ ও শেখ আতাউর রহমানের কুপ্ররোচনায় অন্যান্য আসামির যোগসাজসে ফয়সাল আহমেদ আব্দুল্লাহ, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনে ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ২০২৩ বাদীর বিরুদ্ধে "বেলাবতে চাঁদা না দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার " শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২ সেপ্টেম্বর শনিবার দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় "চাঁদা না দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগ" শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করে।
এ ধরনের মানহানি কর ও অবাস্তব সংবাদ প্রকাশ করায় বাদী ও সাক্ষী গনের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। এতে বাদীর সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার মানহানি হয়েছে।
এই ধরনের সংবাদ প্রকাশে সুনামধারী সমাজের দর্পণ সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে হতাশ হবেন এবং পাঠকগণ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পাওয়া থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
প্রকৃতপক্ষে শেখ আতাউর রহমান বিগত ৭/৮/১৯৭৯সনে, জয়নগর আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। যাহাতে উল্লেখিত জন্ম তারিখ ৩/১/১৯৬৩ইং। উক্ত জন্ম তারিখ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় তাহার বয়স হয় আট বছর। অতপর বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা অভিযুক্ত শেখ আতাউর রহমান তার জাতীয় পরিচয় পত্রে ১/ ১/ ১৯৫৭ইং সৃজন করেছে।
সুতরাং আসামিগণ বাদির বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই না করে শেখ আতাউর রহমানের দ্বারা প্রভাবিত ও আর্থিক লাভবান হয়ে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করে দন্ডবিধি ৫০০ ধারার অপরাধ করেছে।
উক্ত মামলার আইনজীবী ছিলেন নরসিংদী আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম এবং তার জুনিয়র আইনজীবী মামুন উর রশিদ। শুনানি শেষে মামলাটি আমলে নেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সন্মানীয় মেহনাজ সিদ্দিকী। তিনি নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ খোকন চন্দ্র সরকার কে তদন্তভার দেন। আগামী ৮-১০- ২০২৩ইং তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার বাদী মোঃ শফিকুল ইসলাম সুমন জানান, এ মামলা অপসংবাদিকতা ও হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে
বস্তুনিষ্ঠ এবং প্রকৃত সাংবাদিকের মামলা। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আশা করছি বিজ্ঞ আদালতের কাছে আমি ন্যায় বিচার পাবো।