মাগুরা সদর উপজেলার মঘী ইউনিয়নের আন্দোলবাড়িয়া গ্রামে গত শুক্রবার ১৯ মে পবিত্র জুম্মার নামাজের পর আন্দোলবাড়িয়া উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম নিয়োগকে কেন্দ্র করে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। কাপাসাটি মাদ্রাসার ইমাম কবির সাহেবের পিছনে নামাজ পড়া এবং মসজিদে ইমাম নিয়োগ নিয়ে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে মসজিদে বসে কথা কাটাকাটি হয় একপর্যায়ে তুমুল সংঘর্ষ, বাড়ি-ঘর, দোকান ও মরিচের ক্ষেত নষ্ট এবং ব্যাপক আকারে ঘরবাড়ি ভাঙ্চুর ও লুটপাট হয়।
ক্ষতিগ্রস্থ ভুক্তভোগীরা হলো আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের লুৎফর মন্ডলের ছেলে বদর মন্ডলের বসত ঘর ও গোয়ালঘর ভাংচুর এবং নগদে গরু ও ধান বিক্রির ১ লাখ টাকা নিয়ে গেছে, মহিউদ্দিনের ছেলে আক্তার মন্ডলের বসত ঘর ও গোয়ালঘর ভাংচুর, ইসমাইলের ছেলে জসিমের বসত ঘর ও দোকান ভাংচুর, মশিয়ার মন্ডলের ছেলে মাসুদ ও আরজ আলীর বসত ঘর ভাংচুর, মতি মোল্লার ছেলে আশরাফের বসত বাড়ি ও দোকান ভাংচুর, নাজিম উদ্দীনের ছেলে রাজু’র বসত বাড়ি ভাংচুর এবং আফজেল মোল্লার ছেলে মুন্নাফের বসত বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে সন্ত্রাসীর দল।
আক্তার মন্ডলের স্ত্রী আমেনা খাতুন বলেন প্রায় ২৫-৩০ জন আমার বসত বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে চাইনিজ কুরাল, রামদা, চাপাতি ও কুরাল দিয়ে ঘরের চালার টিন, দরজা ও জানালায় কুপায় এবং নগদ ২০ হাজার টাকা ঘর থেকে নিয়ে চলে যায়। গোপন সূত্রে জানা যায় গ্রামের সব কয়টি বসত বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট কাজে একটা শক্তিশালী সন্ত্রাসীর দল এই কাজে লিপ্ত ছিলো।
তারা হলো আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর, দলু মন্ডলের ছেলে কবির, বাবু মন্ডলের ছেলে ছলিম মন্ডল, ইসরাইল মন্ডলের ছেলে আমিরুল মন্ডল ও মনু মন্ডল, ওয়াজেদের ছেলে ছলেমান, রুস্তম মীরের ছেলে টোকন, জাহিদের ছেলে নয়ন, ফুল মন্ডলের ছেলে সোহাগ, বাবু মন্ডলের ছেলে ওহিদ, জাহিদ ও জহির মন্ডল, তবিবার মোল্লার ছেলে রবিউল, ফারুক ও আহসান মোল্লা, কবিরের ছেলে জাকির, তবিবারের ছেলে রুহুল, আছব্বারের ছেলে শরিফুল, ফুলমিয়ার ছেলে বেনজির ও আলমগীর, হবির মোল্লার ছেলে সাহেব বাবলু, বাবুর ছেলে শহীদ, মোস্তফার ছেলে সোহাগ, ফারুকের ছেলে ফয়সাল, কবিরের ছেলে রুবাইয়া, সলিমের ছেলে কামাল ও শরিফুলের ছেলে খবির সহ আরও বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী মুখি লোকজন।
বদর মন্ডলের স্ত্রী সামেলা খাতুন বলেন দূবৃত্তরা আমার বসত বাড়ি ভাংচুর ও নগদে ১ লাখ টাকা নিয়ে গেছে, মান্নান মোল্লার স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন বলেন আমার বসতবাড়ি ভাংচুর, নগদ ১২ হাজার টাকা, প্রায় ১ লাখ টাকা মূল্যর বৌমা বন্যার স্বর্ণের চেন, কানের দুল ও আংটি নিয়ে গেছে, মাসুদের স্ত্রী সুমি খাতুন বলেন ঘরের জানালা ও গোয়াল ঘর ভাংচুর করেছে এবং নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের গলার স্বর্ণের চেন ও কানের দুল নিয়ে গেছে, রাজু’র স্ত্রী রেশমা খাতুন বলেন ৭০ হাজার টাকা ও প্রায় ১ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেন নিয়ে গেছে, আরজ আলীর স্ত্রী পারভীনা খাতুন বলেন ঘরের মধ্যে থেকে নগদ ১৭ হাজার টাকা ও ৬০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেন নিয়ে গেছে।
গোপন সূত্রে আরও জানা যায় এই নেক্কারজনক ঘটনার হুকুমের আসামী আমিরুল কবির ও ছলিম এদের হুকুমে জাহাঙ্গীর কুপানোর কাজে থাকে জাহাঙ্গীর। এছাড়াও আশরাফের মাঠের ২০ শতক জমির মরিচ গাছ, মতি মোল্লার ছেলে নবিরুলের ২০ শতক মরিচ গাছ ও ইসমাইলের ২৫ শতক জমির মরিচের ক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে দূর্বৃত্তর দল। ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষের সবাই একটা কথা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলেন পুলিশ হলো জনগণের বন্ধু আর সেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসী ধরনের লোকজনের সাথে হাত মিলিয়ে দাড়িয়ে থেকে পুলিশের সামনেই আমাদের বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করার কাজে সহায়তা করেছে যেটা খুবই দুঃখ জনক ও বেদনাদায়ক ঘটনা।
ভুক্তভোগী সবাই এখন জীবন নাশের হুমকির মুখে আছে, এজন্য তারা মাগুরা জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা এবং সেই সাথে প্রকৃত সন্ত্রাসী ও ত্রাস সৃষ্টিকারী লোকজনের আইনের আওতায় বিচার ও শাস্তি কামনা করেন। আন্দোলবাড়িয়া বাজারে দায়িত্বরত এসআই প্রভাষ ঘোষ জানান এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, এই মূহুর্তে এলাকার পরিবেশ শান্ত আছে।