ভূমি দস্যুর হাত থেকে জমি ফিরে পেতে কৃষক ও বেদখল হওয়া জমির ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন করেছেন তাদের জমির উপর। এ সময় ভুক্তভোগীরা নিজের জমি ফেরত পেতে মানববন্ধনে নানান বক্তব্য দেন। এর এক পর্যায়ে মোহাম্মদপুর সদর থানা অফিসার ইনচার্জ এবং বাবুখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর সাজ্জাদ হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তারা কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা আগামীকাল আপনাদের সকল ডকুমেন্টসহ মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ প্রদান করবেণ; মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনবেন বলে আশ্বাস দেন।
মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার চুড়ারগাতী গ্রামে কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষের ২৪ একর ১০ শতক জমি জোরপূর্বক ভোগ দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কাজী সিরাজুল ইসলাম ও কাজী শওকত ওসমান এর বিরুদ্ধে।মধুমতীর তীর সংলগ্ন চরের এ জমি ঘিরে চুড়ারগাতী, আকসারচর, বহলবাড়ী, গয়েশপুর,বকসিপুরের এলাকাবাসী জড়িয়ে পড়েছেন সরাসরি সংঘর্ষে। ইতিমধ্যে ভুক্তভোগীরা একাধিক মানববন্ধন কর্মসূচি ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শালিস করেছেন,তাতে মেলেনি কোন সূরাহ।
মোহাম্মদপুর উপজেলার চুড়ারগাতি মৌজার ৩৪ একর১০ শতক জমি নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক অসহায় কৃষকের লাক্ষাধিক টাকার গাছ ও জমির ফসল কেটে জমি দখল করেছে ভূমিদস্যুরা। এরপর সেসব খালি জায়গায় বসতবাড়িসহ নানা প্রজাতির ফলজ-বনজ গাছ লাগিয়ে জায়গাগুলো দখলে নিয়েছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, এই জমির প্রকৃত মালিক সোনাউল্লাহ ফকির।অপর দিকে ভূমি দস্যু শওকত ওসমান জাল জালিয়াত করে কিছু কোটের নকল ফটোকপি কাগজ নিয়ে তাদের জমির ফসল,গাছ বিক্রি করে জমির মূল মালিক সোনাউল্লাহ ফকির এর বিরুদ্ধে অসৎ ভাবে টাকা ব্যায় করছেন ভূমি দস্যু শওকত।
এমন নিকৃষ্টতর কাজের শাস্তি সরূপ তার জেল হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। গত শনিবার (১ এপ্রিল) সকালে চেয়ারম্যান মেম্বারসহ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে সালিশ ডাকলেও শওকত ওসমান সহ অভিযুক্তরা উপস্থিত হননি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাবুখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর সাজ্জাদ হোসেন, কামারখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইরান হোসেন, চেয়ারম্যান বাবু বিশ্বাস, সহ অন্যান্য চেয়ারম্যান বৃন্দ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জমির ভুক্তভোগীরা শওকতের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করলে ঐ দিনই তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরের দিন কিছু লোক ভাড়ায় এনে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন শওকত ওসমান। এ দিকে উক্ত তিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ভুক্তভোগীদের সমন্বয়ে শালিসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,শওকত ও তার অনুসারীরা যদি ১ সপ্তাহের মধ্যে জমির মূল মালিকদেরকে জমি ফেরত না দেয় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর বিপরীতে শওকত ওসমান অসৎ ভাবে টাকা ছিটিয়ে তার পূর্বের পেশী শক্তির জানান দিচ্ছেন। ৩০শে মার্চ দুপুরে জমির মূল মালিক,ফারুক হোসেন, মসিয়ার, সাজ্জাদ হোসেন, টগর আলী, মাসুদ, রিয়াদ, রবিউল ইসলাম, মুরাদ, রিপন,লতিফ হোসেন, মিরাজ আহমেদসহ ,নাম না জানা আরো অনেকে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, শওকত ওসমান আমাদের জমি উদ্ধার করে দেবে বলে কিছু কাগজের ফটোকপি নিয়ে সেগুলো জাল জালিয়াত করে আমাদের বেদখল হওয়া জমির ফসল ও গাছ চুরি করে বিক্রি করে আমাদের বিরুদ্ধে টাকা ব্যায় করেছে।
বিগত অনেক বছর ধরে শওকত ওসমান ও তার অনুসারীর সমন্বয়ে আমাদের ২৪ একর১০ শতক জমি জোর দখল করে ভোগ করছে।মাগুরা রেকর্ড রুমে কর্মরত খন্দকার তারিক হাসানের নিশ্চিত তথ্য সূত্রে জানা গেছে, চুড়ারগাতী মৌজার ৭৫৪, ৭৫৮,৭৫৪, ৭৭১,৭৫৮,৭৭২,দাগের ১৭ একর ১০ শতক জমি যেমন ৬২ সালের রেকর্ড মূলে জমির মূল মালিক, সোনাউল্লাহ ফকির, আফসার ফকির, আজিজ ফকির। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ মৌজার জমির রেকর্ড ও পরিমাপ বিলম্বিত হওয়ায় এ সকল কৃষকের জমি দখল করে ভোগ করছেন অভিযুক্তরা।